দেশে ফেরা হচ্ছে না সাকিবের!

Posted on October 17, 2024

স্পোর্টস ডেস্ক: ভারত সফরে টেস্ট থেকে অবসরের ঘোষণা দেন দেশসেরা ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান। কানপুর টেস্ট শুরুর আগের দিনই সাকিব ঘোষণা দিয়েছিলেন, দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে মিরপুর টেস্ট খেলে দেশের মাঠ থেকে এই সংস্করণকে বিদায় জানাতে চান তিনি। হত্যা মামলার আসামি হওয়ায় দেশে ফেরা ও পরে নির্বিঘ্নে দেশ ছাড়ার নিশ্চয়তা চেয়ে আকুতি জানিয়েছিলেন তিনি।

আসন্ন দক্ষিণ আফ্রিকা সিরিজের দল ঘোষিত হয় তাকে নিয়েই। বাংলাদেশের উদ্দেশে যুক্তরাষ্ট্র থেকে রওনাও দিয়েছেন তিনি। মাঝে দুবাইয়ে যাত্রাবিরতি। তবে, সেখান থেকেই ফিরে যেতে হচ্ছে তাকে। দেশে আসা হচ্ছে না আপাতত।

নিরাপত্তাজনিত কারণে এই মুহূর্তে বাংলাদেশে আসতে পারবেন না বলে গণমাধ্যমকে নিজেই জানান সাকিব।

বৃহস্পতিবার (১৭ অক্টোবর) তিনি বলেন, ‘আমার নিরাপত্তার জন্য আমাকে দেশে যেতে মানা করা হয়েছে।’

দেশের মাটি থেকে অবসর নেওয়ার যে ইচ্ছে সাকিবের, সেটি পূর্ণতা পাচ্ছে না। বিদায়ী টেস্ট খেলতে দেশে ফেরা হচ্ছে না তার। সাকিবের মতো দুবাইয়ে অবস্থান করছেন বিসিবি সভাপতি ফারুক আহমেদও। আইসিসির সভায় অংশ নিতে সেখানে আছেন বিসিবি প্রধান। যদিও, বোর্ডের পক্ষ থেকে সাকিবের ব্যাপারে আনুষ্ঠানিকভাবে এখনও কিছু জানানো হয়নি। দক্ষিণ আফ্রিকা সিরিজের দলও আছে অপরিবর্তিত।

সাকিব কখনও দুঃস্বপ্নেও ভেবেছিলেন, নিজ দেশে পরবাসী হবেন? যাকে মাথায় করে রাখত গোটা জাতি, যার সাত খুন একপ্রকার মাফই হয়ে যেত, সেই তিনিই বাংলাদেশের মাটিতে একটি টেস্ট খেলতে অনুরোধ জানিয়েছেন!

জুলাই অভ্যুত্থানের সময় সাকিবের নীরব থাকাটাই কাল হলো তার জন্য। যদিও, কয়েকদিন আগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে পোস্ট করে সেই সময় নিজের অবস্থান জানিয়েছিলেন সাকিব। তাতে অবশ্য মন ভরেনি ছাত্র-জনতার। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় জ্বালানো হয় বিশ্বের অন্যতম সেরা এই অলরাউন্ডারের কুশপুত্তলিকা। এছাড়া, মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামের বাইরে দেয়ালে স্লোগান লিখে সাকিবের বিরোধিতা করা হয়।

বিসিবি সভাপতি ফারুক আহমেদ ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া শুরুতে কঠোর বার্তা দিয়েছিলেন। সাকিবকে নিজের রাজনৈতিক অবস্থান পরিষ্কার করতে বলেছিলেন ক্রীড়া উপদেষ্টা। পরে ফেইসবুকে দীর্ঘ বার্তায় দুঃখপ্রকাশ করে নিজের অবস্থান তুলে ধরেন সাকিব। বিসিবি সভাপতি ও ক্রীড়া উপদেষ্টার কণ্ঠের সুরও পরে বদলে যায়।

ক্রীড়া উপদেষ্টা কদিন আগেই বলেন, সাকিবের দেশে ফেরা ও পরবর্তীতে দেশ ছেড়ে যাওয়ায় কোনো বাধা তিনি দেখেন না। দেশের ক্রিকেটের সেরা তারকাকে মাঠের নিরাপত্তা দেওয়ার নিশ্চয়তাও তিনি দিয়েছিলেন। সেই ধারাবাহিকতায় বুধবার মিরপুর টেস্টের জন্য ১৫ জনের স্কোয়াডে ৩৭ বছর বয়সী ক্রিকেটারকে রাখেন নির্বাচকরা। শেষ পর্যন্ত চিত্র বদলে গেল।