ব্যাংক ম্যানেজারসহ ৩ জনের বিরুদ্ধে বেআইনী ভাবে নিলামের অভিযোগ

Posted on October 10, 2023

আতিকুর রহমান, ঝিনাইদহ প্রতিনিধি: ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক ঝিনাইদহ শাখার ব্যবস্থাপকসহ তিন জনের বিরুদ্ধে পরস্পর যোগসাজসে প্রতারণা জালিয়াতি, ঘুষ গ্রহণ, দূর্নীতি ও বে-আইনী ভাবে নিলামের মাধ্যমে সম্পত্তি আত্মসাৎতের অভিযোগ উঠেছে।

মঙ্গলবার ঝিনাইদহ প্রেসক্লাবে সদর উপজেলার সাগান্না গ্রামের ইটভাটা মালিক তাজুল ইসলাম এই অভিযোগ করেন।

লিখিত বক্তব্যে ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক ঝিনাইদহ শাখার ব্যবস্থাপক মনিরুজ্জামান বাবু, শহরের আরাপপুর এলাকার মোয়াজ্জেম হোসেনের স্ত্রী জহুরা খাতুন ও আরাপপুর জামতলা এলাকার মঞ্জুর হোসেন স্বপনের স্ত্রী লুৎফুন্নাহারের বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হয়।

তাজুল ইসলাম অভিযোগ করেন, ২০১১ সালে তিনি মঞ্জুর হোসেন স্বপনের সাথে যৌথভাবে ইটভাটার ব্যবসা শুরু করেন। ইট ভাটার লাইসেন্স প্রাপ্তি এবং পরিবেশগত ছাড়পত্র প্রাপ্তির জন্য আমার মাতা মোছাঃ আকলিমা খাতুন ৭০১৫/২০১১ নং কবলা দলিল মূলে ৮১ শতক জমি মঞ্জুর হোসেন স্বপনের নামে ২০১১ সালের ১৭ আগষ্ট রেজিষ্ট্রি করে দেন। ব্যবসা পরিচালনার প্রয়োজন হলে মঞ্জুর হোসেন স্বপন ইউসিবি ব্যাংক থেকে লোন করেন। মুল ঋণগ্রহিতা মৃত মুঞ্জুর হোসেন স্বপন তৎকালীন ব্যাংক ম্যানেজারের যোগসাজসে আমার চাচার ১৩২ শতক জমি ভাটা ম্যানেজার মোঃ কালু মিয়ার ছবি বসিয়ে স্বাক্ষর নকল করে বন্ধক রেজিষ্ট্রী করিয়া নেন। ২০১৪ সালে ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক থেকে লিগ্যাল নোটিশ গেলে আমার চাচা এবং আমি জানতে পারি চাচার অনুপস্থিতিতে এই বন্ধক দলিলে রেজিষ্ট্রী হয়ে গেছে। এ নিয়ে আমার চাচা ব্যাংককে বিবাদী করে দেওয়ানী মামলা করেন যার নং-৮৬৭/২০। মামলাটি বর্তমান চলমান রয়েছে।

এদিকে মঞ্জুর হোসেন স্বপন মারা যাওয়ার পর তার স্ত্রী লুৎফুন্নাহার বেগম একমাত্র ওয়ারেশ উল্লেখ করে আমাদের অংশসহ মোট ৪.০০ একর জমি এবং আনুসাঙ্গিক জিনিসপত্র পাগলাকানাই সড়কের মোঃ আবুল কাশেমের কাছে সম্পূর্ণ বেইইনীভাবে বিক্রয় করে দেন। ২০১৭ পত্রিকায় একটি নিলাম বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে সম্পত্তি নিলামে তোলে। মারফত আমি জানতে পেরে আমি দুই বারে ৪৫ লাখ টাকা প্রদান করি। ২০২২ সালে পত্রিকায় মর্টগেজকৃত সম্পত্তি এবং মঞ্জুর হোসেন স্বপনের নিজ নামীয় সকল সম্পত্তি তফশীলভুক্ত করে বিজ্ঞপ্তি প্রচার করে। যে বিষয়টি তৃতীয় পক্ষ হিসাবে আমাকে অবগত করা হয়নি। ২০২২ সালের ২৫ মে এই সম্পত্তি দুই কোটি ১৮ লাখ টাকায় নিলাম করা হয়, যা সর্বোচ্চ দরদাতা হিসেবে জহুরা বেগম কিনে নেন। মূলঋণ গ্রহীতা মঞ্জুর হোসেন স্বপনের ঝিনাইদহ পৌরসভার অর্ন্তগত এস এ ২৭৩, ২৭৪, ২৭৫ আর.এস. ২৪৮১ দাগের উপরস্থ তিন তলা আলিশান বসত বাড়ি থাকার পরও তথ্য গোপন করে আমার জমি নিলামে তোলা হয়। ২০০৩ সালের অর্থ ঋণ আইনের ১২ এর ৩ ধারা মোতাবেক মূল ঋণ গ্রহিতার সম্পত্তি দিয়ে যদি ব্যাংকের টাকা পরিশোধ হয়ে যায় তাহলে ব্যাংক তৃতীয় পক্ষের সম্পত্তিতে হাত দিতে পারবে না। কিন্তু ব্যাংক সম্পূর্ণ অন্যায় ভাবে আমাদের সম্পত্তিসহ মৃত মুঞ্জুর হোসেন স্বপনের নামীয় সকল সম্পত্তি একবারে নিলামের মাধ্যমে মৌজা রেটে বিক্রয় করে দেন।

তাজুল ইসলাম বলেন, প্রায় ৪০ কোটি টাকার সম্পদ মাত্র দুই কোটি ১৮ লাখ টাকায় বিক্রি করা হয়েছে। এ ব্যাপারে ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক ঝিনাইদহ শাখার ব্যবস্থাপক মনিরুজ্জামান বাবু বলেন, যথাযথ পক্রিয়া অনুসরণ করে নিলাম বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে। ফলে তাজুল ইসলাম যে তথ্য দিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছেন তা মিথ্যা ও ভিত্তিহীন।

তিনি বলেন, ২০১৬ সাল থেকে নিলাম প্রক্রিয়া শুরু হয়। আমার আগে দুই ম্যানেজার এই প্রক্রিয়া করে গেছেন। আমি এসে শুধুমাত্র নিলাম করে জনগনের টাকা উদ্ধার করেছি।