৬ মাসের মধ্যে সাগর-রুনি হত্যার তদন্ত শেষ করতে হবে: হাইকোর্ট

Posted on October 16, 2024

কর্পোরেট সংবাদ ডেস্ক : আগামী ৬ মাসের মধ্যে সাংবাদিক দম্পতি সাগর সরওয়ার ও মেহেরুন রুনি হত্যা মামলার তদন্ত শেষ করার নির্দেশ দিয়ে লিখিত আদেশ প্রকাশ করেছেন হাইকোর্ট।

বুধবার (১৬ অক্টোবর) বিচারপতি ফারাহ মাহবুবের নেতৃত্বাধীন হাইকোর্ট বেঞ্চে এ পূর্ণাঙ্গ আদেশ দেন।

এতে, বিভিন্ন এজেন্সির অভিজ্ঞতালদ্ধ ব্যক্তিদের দ্বারা উচ্চক্ষমতা সম্পন্ন টাস্কফোর্স দল গঠন করে ছয় মাসের মধ্যে সাংবাদিক দম্পতি সাগর সরওয়ার ও মেহেরুন রুনি হত্যা মামলার তদন্ত সম্পন্নের নির্দেশ দেন হাইকোর্ট।

এর আগে মঙ্গলবার (১৫ অক্টোবর) মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের সময় ১১২ বারের মতো পিছিয়েছে আদালত। প্রতিবেদন দাখিলের নতুন দিন ধার্য হয়েছে আগামী ১৮ নভেম্বর। ঢাকার অতিরিক্ত মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মাহবুবুল হকের আদালত এ দিন ধার্য করেন।

এদিন আদালতে মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের দিন ধার্য থাকলেও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার খন্দকার মো. শফিকুল আলম প্রতিবেদন দাখিল করতে অপারগ হন।

এর আগে গত ১ অক্টোবর মামলার বাদী রুনির ভাই নওশের আলী রোমানের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মাহবুবুল হকের আদালত সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী শিশির মনিরসহ ৯ আইনজীবীকে মামলা পরিচালনা করার আনুমতি দেন।

শিশির মনির ছাড়া অন্য আইনজীবীরা হলেন- অ্যাডভোকেট মুজাহিদুল ইসলাম, মিজানুল হক, মোস্তফা জামাল, আবু রাসেল, মহিউদ্দিন, আব্দুল্লাহ আল ফারুক, ইকবাল হোসেন ও মোত্তাকিন হোসাইন।

আইনজীবী শিশির মনির বলেন, ক্রিমিনাল মামলার বিচারের দায়িত্ব কিন্তু রাষ্ট্রের। কিন্তু আইনে আছে কোনো ভুক্তভোগী কিংবা অভিযোগকারী চাইলেও ফৌজদারি কার্যবিধির ৪৯৩ ধারা অনুযায়ী স্বাধীন আইনজীবী নিয়োগ করতে পারবেন। এভাবে সাগর-রুনি মামলার যিনি অভিযোগকারী ছিলেন তিনি আমাকে নিযুক্ত করেছেন। আমরা নিম্ন আদালতে দরখাস্ত দায়ের করব। তদন্ত যারা করছে তাদের সঙ্গে বসব। যেসব ক্লু আছে সেগুলো ধরে পরবর্তী তদন্ত করতে হবে।

এর আগে ৩০ সেপ্টেম্বর সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনি হত্যার তদন্তের দায়িত্ব থেকে র‌্যাবকে সরিয়ে দেন হাইকোর্ট। তদন্তে বিভিন্ন সংস্থার অভিজ্ঞত ব্যক্তিদের সমন্বয়ে টাস্কফোর্স গঠন করতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দেন আদালত।

প্রসঙ্গত, ২০১২ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি রাতে রাজধানীর পশ্চিম রাজাবাজারের ভাড়া বাসায় নির্মমভাবে খুন হন সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনি। পরদিন ভোরে তাদের ক্ষত-বিক্ষত মরদেহ উদ্ধার করা হয়। সাগর বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল মাছরাঙা টিভিতে এবং রুনি এটিএন বাংলায় কর্মরত ছিলেন। হত্যার দিন সাংবাদিক দম্পতির ছেলে মাহির সরওয়ার মেঘ সেই সময় বাসায় ছিল। তখন তার বয়স ছিল পাঁচ বছর।

পরে ওই বছরের ১২ ফেব্রুয়ারি রুনির ভাই নওশের আলী রোমান বাদী হয়ে শেরেবাংলা নগর থানায় মামলা করেন। প্রথমে মামলাটির তদন্ত করেন শেরেবাংলা নগর থানার একজন কর্মকর্তা। এরপর ১৬ ফেব্রুয়ারি মামলার তদন্ত ভার পড়ে গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) উত্তরের পুলিশ পরিদর্শক মো. রবিউল আলমের ওপর।

২ মাস পর হাইকোর্টের আদেশে মামলাটির তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয় র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নকে (র‍্যাব)। সেই থেকে প্রায় ১২ বছরে ১১১ বার সময় নিয়েও তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করতে পারেনি সংস্থাটি।

অথচ এ হত্যার পর তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছিলেন, ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে খুনিদের রহস্য উন্মোচন করে তা জাতির সামনে প্রকাশ করা হবে। কিন্তু এক যুগেও সে রহস্য উন্মোচন আলোর মুখ দেখেনি।