শ্যামনগরে গ্রামীণ পুষ্টির আধার সংরক্ষণে ব্যতিক্রমী ‘খোটা শাকের মেলা’

Posted on October 15, 2024

শহীদুজ্জামান শিমুল, সাতক্ষীরা প্রতিনিধি : প্রান্তিক মানুষের পুষ্টির আধার হিসেবে বিবেচিত অচাষকৃত উদ্ভিদ বৈচিত্র্য সংরক্ষণ ও সম্প্রসারণের লক্ষ্যে সাতক্ষীরার শ্যামনগরে অনুষ্ঠিত হয়েছে ব্যতিক্রমধর্মী ‘খোটা শাকের মেলা’।

মঙ্গলবার (১৫ অক্টোবর) শ্যামনগরের মুন্সিগঞ্জ ইউনিয়নের পশ্চিম জেলেখালী গ্রামে গবেষণা প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ রিসোর্স সেন্টার ফর ইন্ডিজেনাস নলেজ (বারসিক) স্থানীয় জনগোষ্ঠীর সহায়তায় এই মেলার আয়োজন করে।

সিক্সটিন ডেজ অব গ্লোবাল অ্যাকশন অন এগ্রোইকোলজি ২০২৪ ও বিশ্ব গ্রামীণ নারী দিবসকে সামনে রেখে আয়োজিত এই খোটা শাকের মেলায় ঝোপ-ঝাড়, আনাচে-কানাচে, ডোবা-নালা ও খাল-বিলে প্রাকৃতিকভাবেই বেড়ে ওঠা থানকুনি, কলমি, হেলাঞ্চ, গাদোমনি, সেঞ্চি, বউনুটে, বুড়িপান, আমরুল, কাটানুটে, ঘুমশাক, নিশিন্দা, বিশার্লাকরনী, মনিরাজ, ধুতরা, ডুমুর, পেপুল, ঘেটকুল, লজ্বাবতী, শাপলা, কালোকচু, লাল কচু, জিবলী, সেজি, বাসক, এলোভেরা, কলার মোচা, ষষ্টিবট, শিষ বট, কলার থোড়, শালুক, নাটা, দুধশাক, দুর্বা, তুলসিসহ দেড় শতাধিক অচাষকৃত উদ্ভিদ প্রদর্শন করেন গ্রামীণ নারীরা।

এসময় তারা প্রদর্শিত খোটা শাকের পুষ্টিগুণ, ব্যবহার, প্রাপ্তির মৌসুম, রান্নার কৌশল ও ঔষধি গুণাবলী তুলে ধরেন।

মেলায় উপস্থিত দর্শনার্থীদের উদ্দেশ্যে অচাষকৃত উদ্ভিদ বৈচিত্র্য সংরক্ষণের গুরুত্ব তুলে বক্তব্য রাখেন ইউপি সদস্য দেবাশিষ মন্ডল, ইউপি সদস্য নীপা চক্রবর্তী, উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা মৃনাল কান্তি মন্ডল, কৃষক ভুধর চন্দ্র মন্ডল, স্বেচ্ছাসেবক গৌতম সরদার, কৃষাণী পূর্ণিমা রানী, লতা রাবী, শিক্ষার্থী জবা, বারসিক কর্মকর্তা রামকৃষ্ণ জোয়ারদার ও বিশ্বজিৎ মন্ডল।

এসময় তারা বলেন, প্রকৃতিতে কুড়িয়ে পাওয়া উদ্ভিদ বৈচিত্র্যে যেমন প্রচুর পুষ্টি রয়েছে, তেমনি রয়েছে ওষুধি গুণাগুণ। একই সাথে তা বাঙালি সংস্কৃতি এবং ঐতিহ্যের ধারক ও বাহক। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব, লবণাক্ততা, রাসায়নিক সার ও কীটনাশকের অপব্যবহার, অবহেলা এবং উৎপত্তি স্থল ধ্বংসের কারণে প্রকৃতি থেকে প্রান্তিক মানুষের পুষ্টির আধার হিসেবে বিবেচিত এসব উদ্ভিদ বৈচিত্র্য বিলুপ্ত হচ্ছে। খাদ্য নিরাপত্তা ও পুষ্টির চাহিদা মেটাতে অচাষকৃত উদ্ভিদ বৈচিত্র্য টিকিয়ে রাখা দরকার।

মেলায় ১ম স্থান অধিকারী চম্পা মাঝি এককভাবে ১২৬ প্রকার উদ্ভিদ বৈচিত্র্য, ২য় কৃষাণী অনিতা গাঁতিদার ১২৫ প্রকার ও ৩য় ডলি নস্কর ১১০ প্রকার উদ্ভিদ বৈচিত্র্য প্রদর্শন করেন।