৩০ নভেম্বরের মধ্যে সব সরকারি কর্মচারীদের সম্পদের হিসাব দিতে হবে

Posted on September 22, 2024

নিজস্ব প্রতিবেদক : চলতি বছরের ৩০ নভেম্বরের মধ্যে সব সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীকে নিজেদের সম্পদের বিবরণী জমা দিতে হবে বলে জানিয়েছেন জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. মো. মোখলেস উর রহমান। তবে আগামী বছর থেকে প্রতিবছরের সম্পদের হিসাব ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে দিতে হবে।

রোববার (২২ সেপ্টেম্বর) সচিবালয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনের তিনি এ তথ্য জানান।

সচিব মোখলেস উর রহমান বলেন, প্রতিবছর ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে সরকারি কর্মচারীদের সম্পদের বিবরণী জমা দিতে হবে। এ বছরেরটা ৩০ নভেম্বরের মধ্যে জমা দিতে হবে। সিলগালা খামে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে এ হিসাব জমা দিতে হবে। ভুল তথ্য থাকলে ১৯৭৯ বিধিমালা অনুযায়ী শাস্তি দেয়া হবে। সব সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীর জন্য এটি প্রযোজ্য হবে।

তিনি আরো বলেন, সম্পদ বিবরণীতে অনিয়ম পেলে অপরাধের মাত্রা বিবেচনায় সরকারি কর্মচারীরা তিরস্কার ও চাকরি থেকে বরখাস্ত হতে পারেন। এই সিদ্ধান্তের মাধ্যমে ১৫ লাখ সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীকে সম্পদের হিসাবের মধ্যে আনা হচ্ছে।

সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়স ৩৫ বছর বিষয়ে জানতে চাইলে জনপ্রশাসন সচিব বলেন, আমার একটাই উত্তর গুজবে কান দেবেন না। আমি এক কথায় বলে দিলাম, গুজবে কান দেবেন না।

পরে এ বিষয়ে একটি প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। এতে বলা হয়-সরকারি কর্মচারীদের দুর্নীতি প্রতিরোধ এবং স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত করে সুশাসন প্রতিষ্ঠা করার লক্ষ্যে সরকারি কর্মচারী (আচরণ) বিধিমালা, ১৯৭৯ (৩০/১২/২০০২ তারিখের সংশোধনীসহ)-এর বিধি-১৩ অনুযায়ী সব সরকারি কর্মচারীর জন্য সম্পদ-বিবরণী দাখিল করা আবশ্যক। বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর গত ১ সেপ্টেম্বর ২০২৪ তারিখ এ লক্ষ্যে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় হতে একটি প্রেস বিজ্ঞপ্তি জারি করে সব সরকারি কর্মচারীকে সম্পদ-বিবরণী দাখিলের নির্দেশনা দেওয়া হয়।

সম্পদ-বিবরণী দাখিলের ক্ষেত্রে নিম্নবর্ণিত নিয়মাবলি অনুসরণীয়-

১। সম্পদ-বিবরণী প্রদানের সময়সীমা: সব সরকারি কর্মচারীকে প্রতি অর্থবছরের সম্পদ-বিবরণী ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে দাখিল করতে হবে। কেবল ২০২৩-২৪ অর্থবছরের ক্ষেত্রে সম্পদ-বিবরণী ৩০ নভেম্বর ২০২৪ তারিখের মধ্যে দাখিল করতে হবে।

২। যে কর্তৃপক্ষের নিকট দাখিল করতে হবে: ক. ক্যাডার/নন-ক্যাডার (নবম বা তদূধী গ্রেড) কর্মকর্তা তাঁর নিয়ন্ত্রণকারী কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে প্রশাসনিক। মন্ত্রণালয়/বিভাগের সচিবের নিকট সম্পদ-বিবরণী দাখিল করবেন।

গেজেটেড/নন-গেজেটেড কর্মকর্তা/কর্মচারীগণ (১০ম গ্রেড থেকে ২০তম গ্রেড) নিজ নিজ নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষের নিকট তাঁদের সম্পদ-বিবরণী দাখিল করবেন।

৩। জমা প্রদান প্রক্রিয়া: ক জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় কর্তৃক প্রণীত নির্ধারিত ছকে সম্পদ-বিবরণী দাখিল করতে হবে। ছকটি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়সহ অন্যান্য মন্ত্রণালয়/বিভাগ/দপ্তর/সংস্থার নিজস্ব ওয়েবসাইট থেকে সংগ্রহ করা যাবে।

খ.সম্পদ-বিবরণীটি সিলগালাকৃত খামে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট জমা দিতে হবে।

৪। শাস্তিমূলক ব্যবস্থা: নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সম্পদ-বিবরণী দাখিল করতে ব্যর্থ হলে অথবা কোনো ভুল তথ্য প্রদান কিংবা তথ্য গোপন করা হলে বা সম্পদের কোনোরূপ অসংগতি পরিলক্ষিত হলে সরকারি কর্মচারী (আচরণ) বিধিমালা, ১৯৭৯ অনুযায়ী বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

৫। প্রযোজ্যতা: এই অনুশাসনমালা সব সরকারি কর্মচারীর ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে।

৬। গোপনীয়তা সংরক্ষণ: ক. বিজ্ঞ আদালতের আদেশ ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অনুমোদন ব্যতীত সম্পদ-বিবরণীর তথ্য সম্পূর্ণ বা অংশবিশেষ হস্তান্তরযোগ্য নয়।

৭। সম্পদ-বিবরণী অতি গোপনীয় দলিল বিধায় এক্ষেত্রে তথ্য অধিকার আইন, ২০০৯ প্রযোজ্য হবে না।

৮। পরিবর্তন ও পরিমার্জন: প্রয়োজনের নিরিখে এই নিয়মাবলি সরকার সময়ে সময়ে পরিবর্তন ও পরিমার্জনের এখতিয়ার সংরক্ষণ।

আরও পড়ুন:

রাজনৈতিক হয়রানিমূলক মামলা প্রত্যাহারের সুপারিশ করতে সরকারের দুই কমিটি

প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সেনাপ্রধানের সাক্ষাৎ