শাহজাদপুরে এবারও ধান সংগ্রহের সরকারিভাবে অভিযান ব্যর্থ

Posted on September 19, 2024

সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি: সিরাজগঞ্জ শাহজাদপুরে টানা কয়েক বছরের মত এবারও বোরো মৌসুমে সরকারিভাবে ব্যর্থ হয়েছে ধান সংগ্রহের অভিযান। উপজেলায় নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ধান সংগ্রহ হয়েছে মাত্র লক্ষ্যমাত্রার প্রায় ৬ শতাংশ। যদিও বোরো মৌসুমে এবছর প্রায় ২২,৬০০ হেক্টর জমিতে প্রায় ১ লাখ ৪৫ হাজার ৫৬৮ মেট্রিক টন ধান উৎপাদন হয়েছে। তবে এবছর লক্ষ্যমাত্রা প্রায় ৯৬ শতাংশ চাল সংগ্রহ করতে পেরেছে উপজেলা খাদ্য অধিদপ্তর।

তবে উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মোঃ আলাওল কবির এর দাবি, গুদাম ও খোলাবাজারে ধানের দাম কাছাকাছি হওয়ায় সরকারি গুদামে ধান বিক্রি করতে কৃষকদের আগ্রহ নেই। যে কারণে কৃষকেরা ধান বাজারে বিক্রি করতে আগ্রহ বেশি।'

শাহজাদপুর উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, এই মৌসুমে ১ মে থেকে ৩১ আগস্টের মধ্যে ৩২ টাকা কেজি দরে ধান এবং ৪৫ টাকা কেজি দরে চাল সংগ্রহের মূল্য নির্ধারণ করে দিয়েছিল খাদ্য মন্ত্রণালয়। উপজেলায় এবারের ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১ হাজার ৪'শ ৩০ মেট্রিক টন। সংগৃহীত হয়েছে মাত্র ৯০ মেট্রিক টন। শতাংশের হিসাবে মাত্র ৬ দশমিক ২৯ শতাংশ। অপরদিকে ১৪টি মিলার এর মাধ্যমে সেদ্ধ চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২ হাজার ৩৮৯ মেট্রিক টন। এর মধ্যে সংগৃহীত হয়েছে ২ হাজার ৩০৯ মেট্রিক টন। সেদ্ধ চালের ক্ষেত্রে লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়েছে প্রায় ৯৬ দশমিক ৬৫ শতাংশ।

উপজেলার গ্রামীণ হাটবাজার ও বিভিন্ন গ্রামে কৃষকদের সঙ্গে কথা হলে তাঁরা জানান, এবারের মৌসুমে শুরুর দিকে কাচা ধান মণপ্রতি ১০৫০-১১৫০ টাকায় বিক্রি হলেও গত দুই মাসে তা ১২৫০ থেকে ১৪০০ টাকার ওপরেই বিক্রি হচ্ছে। এ জন্য ধানের বর্তমান বাজারদরকেই প্রধান কারণ বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা ও ধান-চাল ব্যবসায়ীরা। অপরদিকে খাদ্য গুদামের সাথে সংশ্লিষ্টদের মিশ্র প্রতিক্রিয়া থাকলেও ধানচাষিরা উপযুক্ত দাম পেয়ে সন্তুষ্টির কথা জানিয়েছেন।

স্থানীয় কৃষক ও উপজেলা কৃষি অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গুদাম ও খোলাবাজারে ধানের দাম কাছাকাছি হওয়ায় সরকারি গুদামে ধান বিক্রি করতে কৃষকদের আগ্রহ নেই। এছাড়াও আর্দ্রতার কথা বলে অনেক সময় ধান ফেরতও দেওয়া হয় কৃষকদের। স্থানীয় বাজারে এসব ঝক্কি-ঝামেলা নেই। এসব কারণে কৃষকেরা বাজারে ধান বিক্রি করেছেন। এ মৌসুমে ধান সংগ্রহে কাংঙ্ক্ষিত লক্ষ্যমাত্রা পূরণ কেন সম্ভব হলো না, জানতে চাইলে উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মোঃ আলাওল কবির বলেন, সরকারের বেঁধে দেওয়া দামের তুলনায় গ্রামের হাটবাজারে কৃষকেরা ভালো দাম পাচ্ছেন, তাই সরকারি গুদামে ধান সরবরাহে তাঁদের আগ্রহ কম। এ ছাড়া গ্রেডিং, শুষ্কতা, পরিবহন খরচ, মজুরি খরচের হিসাব বিবেচনা করে কৃষকেরা বাড়ি থেকে পাইকারের কাছে অথবা পার্শ্ববর্তী বাজারে বিক্রি করাকেই সুবিধাজনক মনে করায় এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে বলে মনে করেন এ কর্মকর্তা।'