খোলাবাজারে ডলারের দাম ১২০ টাকা

Posted on October 6, 2023

নিজস্ব প্রতিবেদক : যুদ্ধের প্রভাবে দেশে প্রথম ডলার সংকট দেখা দেয়। বাড়তে থাকা ডলারের দাম ওপরের দিকে উঠছেই। বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেও দাম নিয়ন্ত্রণ করতে পারেনি বাংলাদেশ ব্যাংক। এর ফলে খোলা বাজারে ডলারের দাম আবারও ১২০ টাকা উঠেছে।

গতকাল বৃহস্পতিবার (৫ অক্টোবর) খোলা বাজারে নগদ এক ডলার কিনতে গ্রাহকদের গুনতে হয়েছে ১১৯ টাকা ৫০ পয়সা থেকে ১২০ টাকা। যেখানে গত সপ্তাহ আগে এক ডলার ছিল ১১৭ থেকে ১১৮ টাকা।

দেশের বিভিন্ন এক্সচেঞ্জ হাউজ ও ডলার কেনাবেচার সঙ্গে জড়িতদের সূত্রে এই তথ্য জানা গেছে।

ব্যাংকের নির্ধারিত দাম অনুযায়ী, খুচরা বাজারে ডলারের দাম ১১৩ টাকার বেশি হওয়ার কথা নয়।

সূত্র জানায়, অনেক মানি মানি চেঞ্জারের কাছে ডলার নেই। কারও কাছে থাকলেও তা নিজেরা সরাসরি বিক্রি করছে না। পরিচিত কেউ সুপারিশ করলেই ডলার পাওয়া যায়। এরেরেও প্রতি ডলার কিনতে ব্যয় করতে হচ্ছে প্রায় ১২০ টাকা।

সংকটের কারণে গত পাঁচ বছরে ডলারের বিপরীতে লাগামহীনভাবে কমেছে টাকার মান। এ সময় অতীতের সব রেকর্ড ভেঙে বেড়েছে ডলারের দাম। ২০১৯ সালে ১ ডলার কিনতে খরচ হতো ৮৪ টাকা। আর এখন বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোতে এক ডলারের দাম উঠেছে ১১০ টাকা ৫০ পয়সা। এ হিসাবে ৫ বছরে টাকার মান কমেছে ২৪ শতাংশ। আর এক বছরে টাকার মানের রেকর্ড ১৬ শতাংশ পতন হয়েছে।

ব্যাংক কর্মকর্তারা বলছেন, বাজারে ডলারের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। বর্তমানে অধিকাংশ ব্যাংক বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে ডলার সহায়তা পাচ্ছে। বিশেষ করে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলো কৃষকদের জন্য সার ও জ্বালানির এলসি খুলতে বেশি ডলার নিচ্ছেন। অন্যান্য ব্যাংকগুলোকেও রিজার্ভ একটি লম্বা সময় ধরে ডলার সাপোর্ট দিয়ে আসছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এসব কারণে টাকার মান কমতে পারে বলে তারা মনে করছেন।

এদিকে বর্তমানে আইএমএফের হিসাব পদ্ধতি বিপিএম ৬ অনুযায়ী, দেশে রিজার্ভ আছে ২ হাজার ১০৫ কোটি ডলার। রিজার্ভের এই পরিমাণ অর্থ দিয়ে তিন মাসের আমদানি ব্যয় বহন করা সম্ভব হবে।

বাংলাদেশকে ৪৭০ কোটি ডলারের ঋণ প্রস্তাব অনুমোদন করার সময় বেশ কিছু শর্ত দিয়েছিলো আইএমএফ। এই ঋণের প্রথম কিস্তির ৪৭ কোটি ৬২ লাখ ৭০ হাজার ডলার গত ফেব্রুয়ারিতে পায় বাংলাদেশ। দাতা সংস্থাটির অন্যতম শর্তের ছিলো- চলতি বছরের জুনে প্রকৃত রিজার্ভ ২ হাজার ৪৪৬ কোটি ডলার, সেপ্টেম্বরে ২ হাজার ৫৩০ ডলার এবং ডিসেম্বরে ২ হাজার ৬৮০ ডলারে রাখতে হবে। কিন্তু এখন রিজার্ভ আছে মাত্র ২ হাজার ১০৫ কোটি ডলার। ঋণের দ্বিতীয় কিস্তি দেওয়ার আগে ইতিমধ্যে আইএমএফের একটি প্রতিনিধি দল বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে বৈঠক করেছে। বৈঠকে নিজেদের ব্যর্থতাও তুলে ধরেছে আর্থিক খাতের সংস্থাটি।