ব্রিজ আছে, রাস্তা নেই; ব্রিজ পার হতে লাগে নৌকা

Posted on October 5, 2023

শহীদুজ্জামান শিমুল, সাতক্ষীরা প্রতিনিধি : সাতক্ষীরা সদরের বালুইগাছা এলাকার বাঁশগাদা খালের উপরে নির্মাণ করা হয়েছে একটি ব্রিজ। তবে ব্রিজের চারপাশে থৈ থৈ পানি, অস্তিত্ব নেই দুই পাশের সংযোগ সড়কের। বিলের মাঝে খাঁড়া হয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে সেতুটি।

তবে স্থানীয় বাসিন্দারা ব্রিজটি পারাপার হতে চাইলে এখন ব্যবহার করতে হয় নৌকা কিংবা সাঁতরে গিয়ে তারপরে সেতু পার হতে হয়।

প্রায় ৩১ লাখ টাকা ব্যয়ে ব্রিজটি নির্মাণের উদ্দেশ্য ছিল পানি নিষ্কাশন ও গ্রামীণ অবকাঠামোর উন্নয়ন করা। তবে কোনো সুবিধাই পাচ্ছে না এ এলাকার বাসিন্দারা।

এ দিকে, বেতনা নদীর বেঁড়িবাঁধ থেকে বালুইগাছা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় পর্যন্ত এক কিলোমিটার রাস্তার সংস্কারের মধ্য দিয়ে ব্রিজের সাথে সংযোগের দাবী জানিয়েছেন এলাকাবাসী।

তবেই সেটার সুফল পাবেন এই জনপদের মানুষ। যদি এই এক কিলোমিটার রাস্তা সংস্কার করা না হয় সেক্ষেত্রে প্রায় ৩১ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করা এই ব্রিজটি নিছক রাষ্ট্রীয় অর্থ অপচয় ছাড়া কিছু নয় বলে জানায় এলাকাবাসী।

সাতক্ষীরা সদর প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার (পিআইও) অফিস সূত্রে জানাযায়, ২০১৬-১৭ অর্থ বছরে ৩০ লাখ ৯০ হাজার টাকা ব্যায়ে দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রনালয় সেতু ও কালভার্ট নির্মাণ প্রকল্পের আওতায় কালভার্ট ব্রিজটি বাস্তবায়ন করা হয়।

সাতক্ষীরা সদরের বালুইগাছা গ্রামের অজিয়ার মোড়ল বলেন, শুকনো মৌসুমে কষ্টকরে টুকটাক চলাফেরা সম্ভব হলেও বৃষ্টির মৌসুম জুড়ে ভোগান্তিতে পড়তে হয়। কোন পরিকল্পনা ছাড়াই তৈরি করা হয়েছিলো। যে কারণে ব্রিজের কোন উপকারে আসছে না। এটা নিছক সরকারি অর্থ অপচয় করা ছাড়া আর কিছু নয়। যদি ব্রিজ পার হতে চান সেক্ষেত্রে নৌকা দিয়ে কিংবা সাঁতার কেটে এসে তারপর সেটা পার হতে হবে। এই পাশ্ব দিয়ে অনেক স্কুল শিক্ষার্থীরা নিয়মিত পারাপার হয় সেক্ষেত্রে তাদের অনেক সমস্যার মধ্যে পড়তে হয়। সরকারের টাকা অপচয় ছাড়া কিছু নয়!

একই এলাকার সবুজ হোসেন জানান, ব্রিজ তৈরি করেছে কিন্তু ব্রিজের দু'পাশে কোন রাস্তা নেই তাহলে এই ব্রীজ দিয়ে কি হবে? এই সেতু পার হতে গেলে প্রয়োজন পড়ে নৌকা কিংবা সাঁতরে গিয়ে তারপর পারাপার হতে হয়। ব্রিজ পার হতে যদি নৌকা কিংবা সাঁতার কাটতে হয় তাহলে ব্রিজে থাকার উপকারিতা কি?।

স্থানীয় বালুইগাছা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একাধিক শিক্ষার্থী জানান, নৌকায় করে কিংবা সাঁতরে ব্রিজ পারাপার হয়ে তারপরে স্কুলে যেতে হয়। সেক্ষেত্রে তাদের জামা কাপড়, বই-খাতা অনেক সময় পানিতে ভিজে যায়। যদি ব্রিজের দুই পাশে রাস্তা করা হলে এই সমস্যা থাকবেনা।

এ বিষয়ে সাতক্ষীরা সদর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. ইয়ারুল হক জানান,২০১৬-২০১৭ অর্থ বছরে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ের সেতু ও কালভার্ট নির্মাণ প্রকল্পের আওতায় ব্রিজটি নির্মাণ করা হয়। ব্রিজের সুফল ভোগ করছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তবে অতি বৃষ্টির কারনে ব্রিজটির দু'ধারের রাস্তায় পানি জমে গেছে। ব্রিজের দুইপাশে চলাচলের জায়গাটি মাটি দ্বারা ভরাট করে চলাচলের উপযোগী করার নির্দেশ দিয়েছেন স্থানীয় সংসদ সদস্য। বৃষ্টির মৌসুম গেলে কাজটি শুরু করা হবে।

সাতক্ষীরা সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফাতেমা-তুজ-জোহরা জানান, ব্রিজটি স্থানীয় বাসিন্দাদের উপকারে আসছে না বিষয়টা এমন নয়। সেখানে ব্রিজটা নির্মিত হয়েছে পাশাপাশি দু'পাশের সংযোগ সড়কও রয়েছে। সেক্ষেত্রে সড়কে মাটি দিয়ে উঁচু করে দু'পাশের রাস্তাটি চলাচল উপযোগী করে দিতে হবে। তারপর সেটার পুরোপুরি সুবিধা পাবে।