শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মামলা প্রত্যাহার করায় বিএনপি নেতা বহিষ্কার

Posted on August 28, 2024

ময়মনসিংহ ব্যুরো : ময়মনসিংহ আদালতে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মামলার আবেদন করার পর প্রত্যাহার করে নেওয়ায় উত্তর জেলা কৃষক দলের সদস্য সচিব শাহ মুহাম্মদ আলীকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (২৭ আগস্ট) কৃষক দলের কেন্দ্রীয় দফতর সম্পাদক মো. শফিকুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে বহিষ্কারের এ সিদ্ধান্ত জানানো হয়।

চিঠিতে বলা হয়, কৃষক দলের সভাপতি কৃষিবিদ হাসান জাফির তুহিন ও ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মোশারফ হোসেনের সিদ্ধান্ত মোতাবেক দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের সুষ্পষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে ময়মনসিংহ উত্তর জেলা কৃষক দলের সদস্যসচিব শাহ মুহাম্মদ আলীকে সংগঠনের প্রাথমিক সদস্যপদসহ সব পর্যায়ের পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। জাতীয়তাবাদী কৃষক দলের সব পর্যায়ের নেতাকর্মীকে তার সঙ্গে সাংগঠনিক কোনও সম্পর্ক না রাখার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।

বহিষ্কারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন উত্তর জেলা কৃষক দলের আহ্বায়ক আবুল বাশার আকন্দ। তিনি বলেন, দলের সঙ্গে বেঈমানি করার কারণে তাকে বহিষ্কার করা হয়েছে। দলীয় সিদ্ধান্তে শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়। কিন্তু ব্যক্তি সুবিধার জন্য তিনি মামলাটি প্রত্যাহার করেন।

বহিষ্কৃত শাহ মুহাম্মদ আলী বলেন, শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আদালতে মামলার আবেদন করেছিলাম গত ২০ আগস্ট। মামলাটি লেখালেখি থেকে সব কিছু করেছেন আমার সংগঠনের আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট আবুল বাশার আকন্দ। কিন্তু পরে জানতে পারি, মামলার এজাহারে জমি সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে তিনজন বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকে আসামি রাখা হয়েছে। এ কারণে গত ২৫ আগস্ট আমি আদালত থেকে মামলাটি প্রত্যাহার করে নিই। শপথ করে বলতে পারি, এর বাইরে আমি দলের শৃঙ্খলাবিরোধী কোনো কর্মকান্ডে জড়িত নই।

কিন্তু আমাকে মিথ্যা ও ভুল তথ্যের ভিত্তিতে ষড়যন্ত্র করে বহিষ্কার করা হয়েছে। কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে বলে আশা করছি, বলেন তিনি।চ

তিনি আরো বলেন, আমি দুর্দিনে দলের সঙ্গে ছিলাম। যখন কেউ দল করেনি, আমি করেছি। দলে আমার কিছু চাওয়া-পাওয়ার নেই। দুঃখজনক বিষয় হলো কেন্দ্র আমাকে ডাকেনি।’

এর আগে, গত ২০ আগস্ট আদালতে মামলার আবেদন করেন জেলা উত্তর কৃষক দলের সদস্য সচিব শাহ মুহাম্মদ আলী। বিগত ২০ জুলাই কৃষক সাইফুল ইসলাম হত্যার ঘটনায় এ মামলাটির আবেদন করা হয়েছিল। সে মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সাবেক গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী ও ময়মনসিংহ-২ (ফুলপুর-তারাকান্দা) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য শরীফ আহমেদ, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমানসহ ৬৭ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছিল। এছাড়া অজ্ঞাত পরিচয় আরও ২৫০ থেকে ৩০০ জনকে আসামি করা হয়েছিল। এসময় আদালত এ ঘটনায় আগে কোনো মামলা হয়েছে কিনা জানতে চেয়ে ফুলপুর থানার ওসিকে পাঁচদিন সময় দেন। কিন্তু এর মধ্যে গত ২৫ আগস্ট বাদী মামলাটি প্রত্যাহারের আবেদন করেন।

অন্যদিকে কৃষক সাইফুল ইসলাম হত্যার ঘটনায় ফুলপুর থানার উপপরিদর্শক শাহাদাত হোসেন মুন্না বাদী হয়ে গত ২৩ জুলাই অজ্ঞাতনামা পরিচয়ের ৫০ থেকে ৬০ জন দুষ্কৃতকারীর বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা করেন।