মৌলভীবাজারে পানিবন্দি আড়াই লক্ষাধিক মানুষ, বিচ্ছিন্ন যোগাযোগ ব্যবস্থাও

Posted on August 24, 2024

তিমির বনিক, স্টাফ রিপোর্টার: টানা ভারি বর্ষণ ও ভারত থেকে নেমে আসা উজানি ঢলে আকস্মিক বন্যায় মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ, জুড়ি, কুলাউড়া, রাজনগর ও সদর উপজেলার বেশ কয়েকটি ইউনিয়ন, অসংখ্য ঘরবাড়ি, গ্রামীণ সড়ক ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান তলিয়ে গেছে। এতে আড়াই লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। এ ছাড়া সড়কপথে সিলেটের সঙ্গে যোগাযোগ ব্যবস্থাও বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। তবে পানি কমতে শুরু করেছে বলে জানান পাউবো কর্মকর্তারা।

এদিকে জেলা প্রশাসক, পুলিশ,বিজিবি, সড়ক, জেলা ত্রাণ ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের সার্বক্ষণিক নজরদারী রাখছেন বলে জানা যায়।

মৌলভীবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তথ্য অনুযায়ী, শুক্রবার (২৩ আগষ্ট) বিকেলে ৩টার আপডেট অনুযায়ী জেলায়: মনু নদী (রেলওয়ে ব্রীজ) এর পানি বিপদসীমার ২২ সে.মি, নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। মনু নদী (চাঁদনীঘাট) এর পানি বিপদসীমার ১১১ সে.মি, উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ধলাই নদী (রেলওয়ে ব্রীজ) এর পানি বিপদসীমার ১৩২ সে.মি, নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। কুশিয়ারা নদী (শেরপুর) এর পানি বিপদসীমার ১১ সে,মি, উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। জুড়ী নদী (ভবানীপুর,জুড়ী) এর পানি বিপদসীমার ১৯৫ সে.মি, উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। সকাল থেকে পানি কমতে শুরু করেছে। বৃষ্টি কমে গেলে পানি নেমে যাবে। এ ছাড়া যেসব স্থানে বাঁধ ভেঙেছে সেগুলোতে কাজ চলছে।’

স্থানীয়রা জানান, বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে মনু ও ধলাই নদীর একাধিক স্থানে প্রতিরক্ষা বাঁধে ভাঙন দেখা দিয়েছে। বুধবার রাতে কমলগঞ্জ উপজেলায় নতুন করে ধলাই নদীর প্রতিরক্ষা বাঁধে ভাঙন দেখা দেয়। এতে নতুন করে আরও কয়েকটি গ্রাম প্লাবিত হয়। অপরদিকে মনু নদীর টিলাগাঁও প্রতিরক্ষা বাঁধ ভেঙে তলিয়ে গেছে কুলাউড়া উপজেলার বেশ কয়েকটি গ্রাম। মনু নদীর ভাঙনে রাজনগর উপজেলার টেংরা, কামারচাক, মনসুরনগর, রাজনগর সদর ইউনিয়নের বেশ কয়েকটি গ্রাম প্লাবিত হয়ে গেছে।

জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মোহম্মদ ছাদু মিয়া জানান, ‘এখন পর্যন্ত আশ্রয়কেন্দ্রে গেছেন প্রায় ৫ হাজার মানুষ। বন্যার্তদের সহায়তায় ১০৫০ মেট্রিক টন চাল ও নগদ ২৫ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।’

মৌলভীবাজারের পুলিশ সুপার মো. মনজুর রহমান জানান, ‘শহর রক্ষায় ও মানুষের জানমাল রক্ষা করতে অতিরিক্ত পুলিশ নিয়োগ করা হয়েছে।’

এ সময় উপস্থিত ছিলেন শ্রীমঙ্গল ৪৬ ব্যাটেলিয়নের অধিনায়ক লেঃ কর্ণেল মোহাম্মদ মিজানুর রহমান সিকদার জানান, ‘বিজিরি পক্ষ থেকে জেলার বিভিন্ন প্লাবিত এলাকায় ত্রান দেওয়া হচ্ছে। বিজিবি সব সময়ই সমাজের দরিদ্র এবং বিপন্ন মানুষের পাশে এসে দাঁড়িয়েছে। ভবিষ্যতেও এই কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে বলে বলে বিজিবি পক্ষ থেকে জানানো হয়।’

মৌলভীবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. জাবেদ ইকবাল বলেন, ‘মৌলভীবাজারের সবগুলো নদীর পানি বর্তমানে বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।