মসিকে অফিস করছে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা, জনপ্রতিনিধিদের প্রবেশে বাধা

Posted on August 19, 2024

ময়মনসিংহ ব্যুরো : ময়মনসিংহ সিটি কর্পোরেশনে (মসিক) তালা ঝুলিয়ে দেওয়ার একদিন পর অফিস করতে শুরু করেছেন কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা। তবে কার্যালয়ে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না বিতর্কিত নির্বাচনের মাধ্যমে দায়িত্বপ্রাপ্ত জনপ্রতিনিধিদের।

রোববার (১৮ আগস্ট) বেলা সাড়ে তিনটার দিকে অন্তত দেড়শ যুবক ময়মনসিংহ সিটি কর্পোরেশনে প্রবেশ করে তালা ঝুলিয়ে দেওয়ার একদিন পর সোমবার (১৯ আগস্ট) সকাল ১০টার দিকে মসিক কার্যালয়ে গিয়ে কর্মকর্তা ও কর্মচারীরদের অফিস করতে দেখা যায়।

এ সময় মেয়র-কাউন্সিলরদের প্রবেশ ঠেকাতে কার্যালয়ের সামনে বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের শীর্ষ নেতাদের অবস্থান নিতে দেখা যায়।

এতে বিএনপির নির্বাহী কমিটির সহসাংগঠনিক (ময়মনসিংহ বিভাগ) আবু ওয়াহাব আকন্দ ওয়াহিদ, মহানগর বিএনপির সদস্য রতন আকন্দ, উত্তর জেলা বিএনপির সদস্য কামরুজ্জামান লিটন, মহানগর যুবদলের সভাপতি মোজাম্মেল হক টিটু, সহ-সভাপতি রুহুল আমিন, সাংগঠনিক সম্পাদক শামসুল আলম উজ্জল, দক্ষিণ জেলা ছাত্রদল সভাপতি মাহাবুবুর রহমান রানা প্রমূখ উপস্থিত ছিলেন।

এ সময় মসিকের প্রধান নির্বাহী ইউসুফ আলীকে মোবাইল ফোনে আশ্বস্ত করে ওয়াহাব আকন্দ ওয়াহিদ নগর ভবনে কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের অফিস করতে বলেন।

তবে বেলা সোয়া ১১টা পযন্ত কিছু সংখ্যক কর্মকর্তা ও কর্মচারী অফিসে প্রবেশ করলেও খোলা হয়নি কার্যালয়ের বেশিরভাগ কক্ষ। এতে কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের উপস্থিতিও ছিল অনেকটাই কম।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক কর্মচারী বলেন, ভয় আতঙ্কে অনেকেই এখনো অফিসে আসেনি। তবে মেয়র ও কাউন্সিলদের ছাড়া আর কাউকে অফিসে বাঁধা দেওয়া হবে না বলে জানিয়েছেন বিএনপি নেতারা।

এই বিষয়ে জানতে চাইলে আবু ওয়াহাব আকন্দ ওয়াহিদ বলেন, বিনাভোটের বিতর্কিত নির্বাচনে যেসব জনপ্রতিনিধি সাগর হত্যাকান্ডের সঙ্গে জড়িত তাদেরকে অফিস করতে দেওয়া হবে না। তবে কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের কাজে কোনো বাঁধা নেই। তিনি আরও বলেন, অবিলম্বে শহীদ সাগর হত্যাকান্ডে জড়িতদের আইনের আওতায় এনে বিচার নিশ্চিত করা হবে।

এর আগে রোববার (১৮ আগস্ট) সকালে সিটি করপোরেশনের মেয়র ও মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ইকরামুল হক টিটু সিটি করপোরেশনে অফিস করেন। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে শুরু হয় অসন্তোষ। রোববার বেলা সাড়ে ১২ টার দিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ময়মনসিংহে নেতৃত্ব দেওয়া সমন্বয়কসহ শিক্ষার্থীরা মিছিল নিয়ে সিটি করপোরেশনে যায়। ময়মনসিংহ সিটি কর্পোরেশনে (মসিক) তালা ঝুলিয়ে দেয়।কিন্তু সে সময় সিটি করপোরেশনের মেয়র ইকরামুল হক টিটু কার্যালয় ছিলেন না।

পরে তারা জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার কার্যালয়ে গিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। একই সঙ্গে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সদর আসনের এমপি মোহিত রহমান শান্ত ও সিটি মেয়র ইকরামুল হক টিটুকে গ্রেফতারের দাবি জানান তারা।

তারা জেলা প্রশাসক কার্যালয় থেকে পুলিশ সুপারের কাছে গিয়ে ময়মনসিংহে ছাত্র হত্যাকান্ডের ঘটনায় মামলা সম্পর্কে জানতে চান এবং সদর আসনের সদ্য সাবেক সংসদ সদস্য ও নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোহিত উর রহমান শান্ত, নগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সিটি মেয়র ইকরামুল হক টিটুসহ আওয়ামী লীগ নেতাদের দায়ী করে গ্রেফতারের দাবি করেন।

এ সময় পুলিশ সুপার মাছুম আহাস্মদ ভূঞা বলেন, ঘটনায় যারা জড়িতদের শানাক্ত করে দ্রুত গ্রেফতার করার আশ্বাস দেন। কিন্তু শিক্ষার্থীরা পুলিশ সুপার কার্যালয় ছেড়ে যাবার আগে সদর আসনের এমপি মোহিত রহমান শান্ত ও সিটি মেয়র ইকরামুল হক টিটুকে গ্রেফতারের ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দেয়।