গাজীপুরে অধ্যক্ষের পদত্যাগের দাবিতে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

Posted on August 12, 2024

গাজীপুর প্রতিনিধি: গাজীপুরের কাশিমপুরে অধ্যক্ষের পদত্যাগের দাবিতে দ্বিতীয় দিনের মতো বিক্ষোভ করছে ওই স্কুলের শিক্ষার্থী ও শিক্ষকরা। রোববার (১১ আগস্ট) সকালে গাজীপুর মহানগরের কাশিমপুর হাতিমারা স্কুল অ্যান্ড কলেজ এর শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা এ বিক্ষোভ করেন।

এসময় শিক্ষার্থীরা অধ্যক্ষের পদত্যাগের দাবিতে বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকে। তাদের স্লোগান দিতে দেখা যায় এক দফা এক দাবি নাসিমা তুই কবে যাবি। ছি ছি নাসিমা লজ্জায় বাচিনা। পরে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভে সাধারণ শিক্ষকরা একাত্মতা প্রকাশ করেন।

এইচ এসসি ১ম বর্ষের শিক্ষার্থী মোঃ ইব্রাহিম বলেন, আমাদের অধ্যক্ষ ম্যাডাম ঠিকমতো কোন ক্লাস নিতে পারেনা। ক্লাসে আসলে বিভিন্ন অজুহাতে চলে আসে। তিনি বলেন, স্কুলের মাঠে যদি খেলাধুলা করতে যাই তাহলে জবাব দিহিতা করতে হয়। স্থানীয় ছেলেরা যদি ফুটবল খেলতে চায় তাহলে তাকে টাকা দিতে হয়। এই অধ্যক্ষের কারণে আমাদের শিক্ষার মান ক্ষুন্ন হচ্ছে। আমরা ছাত্ররা অবিলম্বে অধ্যক্ষের পদ ত্যাগ দাবি করছি।

সাবেক শিক্ষার্থী আবু সালেহ খুদবা বলেন, তিনি যদি দূর্নীতি না করেন তাহলে কেন কলেজে আসছেননা? উনি আসলেই তো শিক্ষার্থীরা শান্ত হয়ে যায়। কিন্তু তিনি তা না করে সিনিয়র কিছু শিক্ষার্থীদের চা খাওয়ার দাওয়াত দিচ্ছেন।

এইচ এসসি দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আশরাফুল ইসলাম বলেন, অভ্যন্তরীণ কিছু বিষয় আছে যা এতদিন আমরা বলতে পারিনি। তিনি বলেন, বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। আমাদের কাছ থেকে বিভিন্ন সময় চাঁদা
নিয়ে ক্রীড়া সামগ্রি কিনে দেওয়ার কথা থাকলেও পরে তা আর দেয়নি। আমরা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।

হাতিমারা হাইস্কুল এন্ড কলেজের ধর্মীয় বিষয়ক সিনিয়র শিক্ষক দেওয়ান আব্দুল কাদের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করে অধ্যক্ষের দুর্নীতির চিত্র তুলে ধরেন।

তিনি বলেন, সহকারি প্রিন্সিপাল নিয়োগে তিনি একাই ৫ লক্ষ টাকা ঘুষ নিয়েছেন। এই বিষয়টি নিয়ে একাধিক পত্রিকায় নিউজ হয়েছে। গনি মণ্ডলের অনুদানের ২৪ লক্ষ টাকার হিসাব নাই। ৬ লক্ষ টাকার হিসাব দিলেও বাকি ১৮ লক্ষ টাকা
একই আত্মসাৎ করেছে। গভর্নিং বডি যখন জিজ্ঞেস করছিলো এই ১৮ লক্ষ টাকা কোথায়। তিনি বলেছিলেন আছে। কোথায় আছে? কেউ জানে না। এর পরে এই বিষয়ে তিনি কোনো মিটিংয়ে উপস্থিত হননি। এছাড়াও প্রতিষ্ঠানের অর্থ ব্যয়ে অযোক্তিক ভাউচার ব্যবহার করেন। মাঠে খেলতে গেলেও তাঁকে চাঁদা দিতে হয়। এভাবে প্রায় ২০ টি দুর্নীতির তথ্য লিখিত আকারে তুলে ধরেন সিনিয়র ওই ধর্মীয় শিক্ষক।

হাতিমারা হাইস্কুল এন্ড কলেজ এর শিক্ষক প্রতিনিধি মোঃ গোলাম কবির বলেন,শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আমরা একমত পোষণ করেছি। দুর্নীতিকে প্রশ্রয় দেওয়ার মানেই হয় না।

অভিবাক সদস্য শামসুল আলম ঠান্ডু বলেন, হিসাব কিতাব নিয়ে একটু ঝামেলা হয়েছে। এছাড়াও শিক্ষার্থীদের অন্যান্য দাবি রয়েছে। তিনি বলেন, গাজীপুর ১ আসনের সাবেক মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক এই কলেজর সভাপতি ছিলেন। কিন্তু আন্দোলন এর কারণে হিসাব নিয়ে আর বসা হয়নি।

হাতিমারা হাইস্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ নাসিমা ইয়াসমিন বলেন, আমার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা। একটি কুচক্রী মহল আমার পিছনে লেগেছে।