সাব্বির মির্জা, তাড়াশ (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধি: সিরাজগঞ্জ-৩ (রায়গঞ্জ-তাড়াশ) আসনের সাবেক জাতীয় সংসদ সদস্য অধ্যাপক ডা. মো. আব্দুল আজিজ ও তার ভাইয়েরা আত্মগোপনে রয়েছেন। এ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন তাঁর গ্রামের জনসাধারণ।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখে আওয়ামী লীগ সরকারেন পতন ঘটায় আত্মরক্ষার্থে ও প্রাণ ভয়ে এমপিসহ তার দুই ভাই এ্যাড. মো. নুরুল ইসলাম ও মো. আবু সাইদসহ তাদের আপন ভাগ্নে এবং কথিত ৬১ ভাগ্নেরাও আত্মগোপনে রযেছে বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন।
স্থানীয়রা জানান, সাবেক জাতীয় সংসদ সদস্য অধ্যাপক ডা. মো. আব্দুল আজিজ সিরাজগঞ্জ -৩ (রায়গঞ্জ- তাড়াশ) আসনে দ্বিতীয় বারের মতো সংসদ সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হন। নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে তিনি নির্বাচনী এলাকায় উন্নয়নের নামে আত্মীয়করণ ও স্বজন প্রীতি শুরু করেন। আর এ সুযোগে তাঁর স্বজনরা ও দলীয় নেতা-কর্মীরা দুই উপজেলার সরকারী সকল দপ্তরে প্রভাব খাটাতে থাকেন।
এ ছাড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নিয়োগ বাণিজ্য, ট্রেন্ডার বানিজ্য, হাট-বাজার ইজারা, টিআর-কাবিখা, কাবিটা প্রকল্প তসরুপ, অনিয়ম ও দূর্নীতি করতে থাকেন। এমনকি নওগাঁ শাহশরীফ জিন্দানী রহ. এর মাজারের অর্থ তারা ছাড় দেননি। বিভিন্ন দপ্তরে প্রতিনিধি নিয়োগ করে এসব অপকর্ম গুলো চালিয়েছেন। তাঁর নির্দেশে বিরোধী দলীয় নেতা-কর্মীরা বাড়িতে ঘুমাতে পারেননি। বিভিন্ন মিথ্যা মামলা দিয়ে চরম ভাবে হয়রানি করা হয়েছে তাদের। তাছাড়া সাবেক এমপি ও তাঁর ভাইদের কারণে তাঁর পার্শ্ববর্তী দীঘিসগুনা গ্রামের ৫ টি পরিবার ৪ বছর ধরে গ্রামের বাড়িতে যেতে পারছেন না। অন্যায় ভাবে তাদের করেছে গ্রাম ছাড়া।
গ্রাম ছাড়া পরিবারের পক্ষে মির্জা আব্দুর রশিদ বকুল জানান, আমাদের দিঘীসগুনা গ্রামে কিছু অসৎ শ্রেণীর লোকজন দীর্ঘ দিন ধরে গ্রাম পরিচালনা করে আসছিলেন। এরই মাঝে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অধ্যাপক ডা. আব্দুল আজিজ এমপি নির্বাচিত হন।
এমপি নির্বাচিত হওয়ার পর গ্রাম্য মাতব্বর ও ওয়ার্ড আ'লীগের সাবেক সেক্রেটারী ইদ্রিস মেম্বর ও রজব ফকিরসহ তাদের অনুসারী বেশ কয়েক জন অসৎ ব্যক্তিবর্গ যোগসাজশ করে সামাজিক ফান্ডে রাখা আনুমানিক ২ কোটি ৭৭ লক্ষ টাকা হিসাব দাখিল না করে আত্মসাত করার চেষ্টা চালায়। বিষয়টি টের পেয়ে ওয়ার্ড আ' লীগের সাবেক সভাপতি গাজী আফসার আলীসহ গ্রামের সাধারণ জনগণ তাদের নিকট গুচ্ছিত টাকার হিসাব- নিকাশ দাখিলের জন্য সভা ডাকতে বলেন। কিন্তু তারা মিটিং না ডেকে বাক-বিতন্ডায় জড়িয়ে পরেন।
পরবর্তিতে ওয়ার্ড আ'লীগের সাবেক সেক্রেটারী ইদ্রিস মেম্বর ও রজব ফকির তাদের সহযোগিতা ও গাজী আফসার আলীর বিরুদ্ধে বিরুদ্ধাচারণ করার জন্য আমাকে আহবান জানান। তাদের ডাকে সাড়া না দিলে ক্ষিপ্ত হয়ে আমার ও আমার প্রতিষ্ঠিত বিদ্যালয়ের ক্ষতি সাধনের প্রচেষ্টা চালাতে থাকে।
এরই জের ধরে গত ২০২১ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারী তারিখে এমপি আব্দুল আজিজের ছোট ভাই ও এমপি প্রতিনিধি আবু সাইদের উপস্থিতিতে এবং ইদ্রিস মেম্বর ও রজব ফকিরের নেতৃত্বে দিঘীসগুনা বাজারে আমার ছেলের ঔষধের দোকান ও ওয়াল্টন শো- রুমের দোকান লুট- পাঠ ও ভাংচুর করে। এ সময় আমরা বাধা দিতে গেলে আমাদের উপর আক্রমণ করে। এতে আমাদের৭/ ৮ জন লোক আহত হয়।
এ ঘটনায় আবু সাইদ থানায় ফোন দিয়ে উল্টো আমাদের লোকজনদের গ্রেফতার করায়। জামিনে মুক্ত হয়ে আমরা নিজ বাড়ি যেতে লাগলে তারা পথ রোধ করে এবং বাড়িতে যেতে বাধা দেয়। এ সময় আমাদের প্রাণনাশের হুমকী প্রদান করলে আমরা প্রাণ বাঁচাতে ফিরে আসতে বাধ্য হই। বিষয়টি এমপি মহেদয়কে জানালে তিনি কোন ব্যবস্থা না নিয়ে কাল ক্ষেপণ করেত থাকেন। তার পর থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত আমরা ৫ টি পরিবার গ্রাম ছেড়ে বাইরে অবস্থান করছি। এ ছাড়াও আমার প্রতিষ্ঠিত বালিকা বিদ্যালয়টি এমপিও তালিকা ভুক্ত হলে তিনি ঈর্ষান্বিত হয়ে শিক্ষা মন্ত্রনালয়ে গিয়ে এমপিও তালিকা থেকে বাদ দিয়ে দেন।
এমপি পরিবার আত্মগোপনে থাকার বিষয়ে স্থানীয় জনগণ বলেন, এমপি আব্দুল আজিজ ও তার ভাইয়েরা, আত্মীয় স্বজনরা নির্বাচনী এলাকায় ব্যাপক অনিয়ম - দূর্নীতি এবং বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করেছে। তাই তারা ভয়ে আত্মগোপন করে আছেন। এ ব্যাপারে আত্মগোপনে থাকা এমপি পরিবারের লোকজনের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে যোগাযোগ করা সম্ভব হয় না।
© ২০২৩ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত | কর্পোরেট সংবাদ সম্পাদক - মোঃ মিজানুর রহমান । উপদেষ্টা সম্পাদক- জেসমিন আক্তার, এফসিএস ই-মেইলঃ corporatesangbad@gmail.com । ফোনঃ ০২২২-৩৩৫৪১২৫ । মোবাইলঃ ০১৭১১০৭৬৮১৫ অফিসঃ ৫৫/বি, নোয়াখালী টাওয়ার, ১১ তলা, সুইট ১১-এফ, পুরানা পল্টন, ঢাকা ১০০০ |
আত্মগোপনে তাড়াশের সাবেক এমপি পরিবার https://corporatesangbad.com/477977/ |