শিক্ষার্থীদের সংহতি জানিয়ে ‘শিল্পী সমাজের’ বিক্ষোভ-সমাবেশ

Posted on August 1, 2024

বিনোদন ডেস্ক : শিক্ষার্থীদের কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে সাধারণ মানুষের পাশাপাশি সরব তারকারাও। আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ৯ দফা দাবির সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করে বিক্ষোভ ও সমাবেশ করেছে দৃশ্যমাধ্যম শিল্পীসমাজ।

বৃহস্পতিবার (১ আগস্ট) সকালে রাজধানীর ফার্মগেট এলাকায় বৃষ্টি উপেক্ষা করে শিল্পীরা এ বিক্ষোভ-সমাবেশ করেন। এসময় তাদেরকে ‘ভয়হীন-ন্যায্য-মানবিক মর্যাদার বাংলাদেশ চাই’, ‘সব হত্যাকাণ্ডের বিচার করো’, ‘হত্যা-সহিংসতা-গণগ্রেপ্তার-হয়রানি বন্ধ কর’ স্লোগান দিতে শোনা যায়।

বিক্ষোভ-সমাবেশে বক্তারা বলেন, সব হত্যার হিসাব ও বিচার করা, গুলি ও সহিংসতা বন্ধ, গণ-গ্রেপ্তার ও হয়রানি বন্ধ এবং আটক শিক্ষার্থীদের মুক্তির দাবিতে দাঁড়াতে এখানে এসেছি। অবিলম্বে হত্যাকাণ্ডের বিচার ও হত্যা-সহিংসতা-গণগ্রেপ্তার-হয়রানি বন্ধ করতে হবে।

তারা আরও বলেন, যে ন্যায্যতা, সমতা ও মানবিক মর্যাদার অঙ্গীকার নিয়ে মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে ঘটেছিল স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়, সেই বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে নিরাপত্তা ও ন্যায়বিচার আমাদের সাংবিধানিক অধিকার।

অভিনেত্রী আজমেরী হক বাঁধন সমাবেশে বলেন, ‘আমি এই দেশের বাসিন্দা। আমার বিদেশী কোনো পাসপোর্ট নাই। আমি এই দেশেই থাকবো এবং এই দেশটা আমার। এই দেশটা আমরাই সংস্কার করবো’।

‘আমরা শান্তি চাই, রক্ত দিতে চাই না’ উল্লেখ করে অভিনেতা মোশারফ করিম বলেছেন, ‘যে অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে তাতে আসলে ঘরে বসে থাকার মতো অবস্থা নাই। মোবাইলে এইসব জিনিস দেখতে দেখতে আমি অসুস্থ বোধ করছি।’

এই সময় সিয়াম আহমেদ বলেন, এখানে আমার পক্ষ থেকে আলাদা করে কিছু বলার নাই। পুরো দেশের মানুষ এখন একটাই কথা বলছে। আর যখন দেশের মানুষ একটা ন্যায্য দাবী রাখেন তখন এটা বুঝা উচিত এটা ফেলে দেয়ার মত না। আমাদের যে ভাই-বোনেরা মারা গেল এটা মেনে নেয়ার না। যদি আপনি সুস্থ স্বাভাবিক মানুষ হন তবে রাতে ঘুমাতে পারবেন না। আমার কানে এখনো আসে ‘কারো পানি লাগবে’। এটা মাথায় যতদিন থাকবে দেশের মানুষ শান্তিতে থাকতে পারবে না। আমরা যারা বিনোদন দুনিয়ায় কাজ করি দেশের মানুষের জন্য করি। তরুণরা আমাদের মূল দর্শক, আজ আমরা যদি তাদের সঙ্গে দাড়াতে না পারি তাহলে আমরা কি কাজ করলাম।

সিয়াম আহমেদ আরও বলেন, আমার নিজের বাচ্চা আছে। আমি জানি আজ থেকে ১০ বছর পর আমার বাচ্চা আমাকে প্রশ্ন করবে তখন তুমি কি করেছিলে। সে সময় যেন আমি বুক উঁচু করে বলতে পারি আমি তাদের পাশে ছিলাম। আমি তাই ছাত্রদের সঙ্গে আছি। এই বাচ্চারা কোনো অনৈতিক দাবী রাখেনি যার জন্য তাদের প্রাণ হারাতে হবে। একেকজন বাবা-মায়ের আহাজারি নেয়া যায় না। এর বিচার যতদিন না হবে বাংলাদেশের মানুষ শান্তি পাবে না।

বৃহত্তর চলচ্চিত্র, আলোকচিত্র, থিয়েটার, গণমাধ্যমসহ দৃশ্যমাধ্যমের নানা শাখার কর্মীরা ‘দৃশ্যমাধ্যম শিল্পীসমাজ’ ব্যানারে কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে দেশে হত্যা, সহিংসতা, গণগ্রেফতার হয়রানির প্রতিবাদ করা হয়েছে।

এসময় মামুনুর রশিদ, আকরাম খান, নূরুল আলম আতিক, আজাদ আবুল কালাম, হাসান, মোশারফ করিম, আজমেরী হক বাঁধন, পিপলু আর খান, অমিতাভ রেজা চৌধুরী, মুনেম ওয়াসিফ, ঋতু সাত্তার, তাসলিমা আকতার লিমা, তানিম নূর, সৈয়দ আহমেদ শাওকি, ওয়াহিদ তারেক, রেদওয়ান রনি, আমিরুল রাজিব, নুসরাত ইমরোজ তিশা, তানজিম ওয়াহাব, জাহিন ফারুক আমিন, তানভীর আহসান, ইয়াছির আল হক, শঙ্খ দাশগুপ্ত, সাবিলা নূর, নাসিফ আমিন, তাসনিয়া ফারিন, হুমাইরা বিলকিস, শিবু কুমার শীলসহ অনেকে সংহতি প্রকাশ করেন।