দেশে আসছে শাফিনের মরদেহ, দাফন মঙ্গলবার

Posted on July 28, 2024

বিনোদন ডেস্ক : দেশের পথে জনপ্রিয় ব্যান্ড তারকা ও সংগীতশিল্পী শাফিন আহমেদের মরদেহ। শনিবার রাতে মাইলস এর অফিশিয়াল পেজে শাফিন আহমেদের জানাজা ও দাফন সম্পর্কে পারিবারিক সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়।

পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, সোমবার (২৯ জুলাই) বিকাল সাড়ে ৫টায় ঢাকা বিমানবন্দরে নামার কথা রয়েছে শিল্পীর নিথর দেহটি। পরদিন মঙ্গলবার (৩০ জুলাই) বাদজোহর গুলশান আজাদ মসজিদে হবে জানাজা। এরপর বনানী কবরস্থানে হবে দাফন। যেখানে শায়িত আছেন শাফিন আহমেদের বাবা সংগীতগুরু কমল দাশ গুপ্ত এবং মা কিংবদন্তি নজরুলশিল্পী ফিরোজা বেগম।

পরিবারের পক্ষ থেকে নিশ্চিত হরা হয়েছে কুলখানির বিষয়েও। শাফিন আহমেদের আত্মার মাগফিরাত কামনায় কুলখানি হবে শুক্রবার (২ আগস্ট) জুমার নামাজের পর বনানী কবরস্থানের পাশে গুলশান কমিউনিটি মসজিদে।

এরআগে বাংলাদেশ সময় শনিবার সকালে যুক্তরাষ্ট্রে শাফিন আহমেদের প্রথম নামাজে জানাজা সম্পন্ন হয়েছে। ভার্জিনিয়ার মেনাসাসে দ্বার আল নূর ইসলামিক কমিউনিটি সেন্টারে তার জানাজা সম্পন্ন হয়েছে।

জানাজায় অংশ নেন শাফিন আহমেদের অসংখ্য ভক্ত অনুরাগীসহ বাংলাদেশি কমিউনিটির মানুষ। অশ্রুসজল চোখে প্রিয় শিল্পীকে বিদায় জানান সাধারণ ভক্ত অনুরাগীরা।

জানাজা শেষে শাফিনের কনসার্ট-এর আয়োজকরা জানিয়েছেন, দ্রুত সময়ের মধ্যে এই শিল্পীর মরদেহ দেশে পাঠানোর ব্যবস্থা করছেন তারা।

এরপর এদিন রাতেই পারিবারিক বিবৃতি আসে মাইলসের পেজে। জানানো হয়, গত ২৫ জুলাই বাংলাদেশ সময় সকাল ৬টা ৯ মিনিটে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভার্জিনিয়ার একটি স্থানীয় হাসপাতালে ৬৩ বছর বয়সে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন শাফিন আহমেদ। তার আকস্মিক মৃত্যুতে আমরা গভীরভাবে শোকাহত। তিনি ছিলেন স্বনামধন্য বাংলাদেশী রক ব্যান্ড মাইলসের সাবেক প্রধান কণ্ঠশিল্পী।

শাফিন আহমেদের জন্ম ১৯৬১ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি। মা কিংবদন্তী সংগীত শিল্পী ফিরোজা বেগম এবং বাবা সংগীতঙ্গ কমল দাশগুপ্ত। এই পরিবারে জন্ম নেয়ার কারণে ছোটবেলা থেকেই শাফিন আহমেদ গানের ভেতরেই বড় হন। শৈশবে বাবার কাছে উচ্চাঙ্গ সংগীত শিখেছেন আর মায়ের কাছে শিখেছেন নজরুল। নিজের প্রচেষ্টায় শেখেন পাশ্চাত্য সংগীত।

১৯৭৯ সালে শাফিন আহমেদ গড়ে তোলেন বাংলাদেশের ইতিহাসে অন্যতম সেরা জনপ্রিয় ব্যান্ড দল মাইলস। ১৯৮২ সালে প্রথম অ্যালবাম “মাইলস” এবং ১৯৮৬ সালে “স্টেপ ফাদার” দিয়ে মাইলসের নিজস্ব গান বাজারে আসে। এরপর ১৯৯১ সালে রিলিজ হয় প্রথম বাংলা অ্যালবাম “প্রতিশ্রুতি” এই অ্যালবামের চাদ-তারা গানটি তখন বিপুল জনপ্রিয়তা পায়।

সেই থেকে শুরু করে আজ পর্যন্ত শত শত শ্রোতপ্রিয় গান উপহার দিয়েছেন উপমহাদেশের এই অন্যতম সংগীত তারকা। চাঁদ তারা সূর্য, দরদিয়া, প্রথম প্রেমের মত, জাদু,কতকাল খুঁজবো তোমায়, ধি কি ধি কি, পাহাড়ী মেয়ে, পিয়াসি মন, জাতীয় সংগীতের দ্বিতীয় লাইন, জ্বালা জ্বালা, ফিরিয়ে দাও এর মত তুমলু জনপ্রিয় গানগুলি আজও শ্রোতাপ্রিয়।

তিনি তাঁর দুই বড় ভাই তাহসিন আহমেদ এবং হামিন আহমেদকে রেখে গেছেন; সেই সঙ্গে রেখে গেছেন স্ত্রী, তিন পুত্র মাইসিম, আজরাফ এবং রেহান; একমাত্র কন্যা রানিয়া; তাঁর পরিবার, বন্ধুবান্ধব এবং লক্ষ লক্ষ ভক্ত ও অনুরাগীকে।