আবুল কাশেম রুমন, সিলেট প্রতিনিধি : সিলেট বিভাগে ২৮টি মামলা রেকর্ড করা হয়েছে। এর মধ্যে ২০ হাজার মানুষকে আসামী করা হয়েছে। গ্রেফতার করা হয়েছে প্রায় ২শত এর বেশি।
কোটা বিরোধী আন্দোলনকে কেন্দ্র করে সিলেট বিভাগের বিভিন্ন জায়গায় পুলিশের সাথে সংর্ঘষে আহত হন অনেকে। এ ঘটনায় মারা যান সিলেটের এক সাংবাদিক। পুলিশ বিভিন্ন থানায় বাদী হয়ে জ্বালাও পুড়াও জানমালের ক্ষতি পুরণ দেখিয়ে মামলা দায়ের করে। এ মামলার তালিকায় বিরোধী রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদের পাশাপাশি গ্রেফতারের তালিকায় শিক্ষার্থীরাও রয়েছেন।
জানা যায়, কারফিউ জারির পর থেকে বিশেষ করে সিলেট মহানগর এলাকায় গ্রেফতার অভিযান চললেও এখন উপজেলা এমনকি গ্রাম পর্যায়ে জোরদার করা হয়েছে। নগরীর পাশাপাশি সিলেট জেলার বিভিন্ন উপজেলা, সুনামগঞ্জ, মৌলভীবাজার ও হবিগঞ্জ জেলার সকল উপজেলায় চলছে চিরুণী অভিযান। সিলেট মহানগর এলাকায় পুলিশের পক্ষ থেকে গ্রেফতারের সংখ্যা ১২১ জন বলে জানানো হলেও প্রকৃত সংখ্যা বেশী হতে পারে বলে একাধিক সূত্রে জানা গেছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, কোটা সংস্কার আন্দোলন নিয়ে সাম্প্রতিক সংঘর্ষের ঘটনায় সিলেট মহানগর এলাকায় ৯টি ও জেলায় ২টি মামলা দায়ের করেছে পুলিশ। এছাড়া কুমারগাও বিদ্যুৎ অফিসে হামলার ঘটনায় বিদ্যুৎ বিভাগের পক্ষ থেকে জালালাবাদ থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। এর মধ্যে এসএমপির ৩ থানায় ১০টি এবং জেলার জৈন্তাপুর ও কানাইঘাট থানায় ১টি করে দুটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। জালালাবাদ থানায় ৪টি, কোতোয়ালী থানায় ৫টি ও দক্ষিণ সুরমা থানায় ১টি মামলা করা হয়েছে। এসব মামলায় ১৬ হাজার জনকে আসামী করা হয়েছে। গ্রেফতার করা হয়েছে ১৩০ জনকে। গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে জামায়াতের কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারী জেনারেল এডভোকেট এহসানুল মাহবুব জুবায়ের, মহানগর আমীর মুহাম্মদ ফখরুল ইসলাম, সেক্রেটারী মোহাম্মদ শাহজাহান আলী, সহকারী সেক্রেটারী এডভোকেট মোহাম্মদ আব্দুর রব, মহানগর বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক সাবেক সিটি কাউন্সিলার রেজাউল হাসান কয়েস লোদী, সাবেক প্রচার সম্পাদক শামীম মজুমদার, মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব আফসর খান, ৪নং ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আলমগীর হোসেন রয়েছেন।
সুনামগঞ্জ জেলায় ৫টি পৃথক মামলায় ৩ শতাধিক জনকে আসামী করা হয়েছে। তবে গ্রেফতারে অভিযান চলছে বলে পুলিশ সূত্রে জানা গেছে। বিএনপি ও জামায়াতের দলীয় সূত্রে জানা গেছে, জেলার সদর, ধর্মপাশা, দিরাই, ছাতক ও জগন্নাথপুর থানায় পৃথক ৫টি মামলা দায়ের করেছে পুলিশ।
হবিগঞ্জ জেলায় সাম্প্রতিক কোটা আন্দোলন ঘিরে ৫টি মামলা দায়ের করেছে পুলিশ। সূত্রে জানা গেছে, সাম্প্রতিক ঘটনায় জেলার সদর থানায় ১টি, শায়েস্তাগঞ্জে ১টি, বানিয়াচংয়ে ১টি, লাখাইয়ে ১টি ও আজমিরিগঞ্জ থানায় ১টি মোট ৫টি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
মৌলভীবাজার জেলায় সাম্প্রতিক সংঘর্ষের ঘটনায় পৃথক থানায় ৬টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। কয়েক’শ নেতাকর্মীকে আসামী করা হয়েছে।
সিলেট মহানগর পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার (উত্তর) আজবাহার আলী শেখ জানান, কোটা আন্দোলন নিয়ে সহিংসতা সৃষ্টিকারীদের বিরুদ্ধে পুলিশের সাড়াশি অভিযান অব্যাহত রয়েছে। কাউকে ছাড় দেয়া হবে না। সবাইকে আইনের আওতায় নিয়ে আসতে পুলিশ কাজ করছে। এখন পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের কোন শিক্ষার্থীকে আটক করা হয়নি বলে জানান তিনি। গ্রেফতারকৃত সবাই দুষ্কৃতিকারী।