২০২৩ সালে ২৫০০ অভিবাসী মারা গেছে ভূমধ্যসাগরে : জাতিসংঘ

Posted on September 30, 2023

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ২০২৩ সালে এ পর্যন্ত এক লাখেরও বেশি মানুষ টিউনিশিয়া থেকে ভূমধ্যসাগর পাড়ি দেওয়ার চেষ্টা করেছেন। জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা (ইউএনএইচসিআর) জানিয়েছে, ইউরোপে পাড়ি দেওয়ার চেষ্টা করার সময় ২০২৩ সালে এ পর্যন্ত ভূমধ্যসাগরে আড়াই হাজারেরও বেশি মানুষ মারা গেছেন বা নিখোঁজ হয়েছেন।

গত বছরের একই সময়ের মধ্যে এক হাজার ৬৮০ জন অভিবাসী নিহত বা নিখোঁজ হয়েছিলেন।

ইউএনএইচসিআর নিউইয়র্ক অফিসের পরিচালক রুভেন মেনিকদিওয়েলা নিরাপত্তা পরিষদে বলেছেন, ‘অভিবাসী ও শরণার্থীরা প্রতি পদক্ষেপে মৃত্যু ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঝুঁকি নিয়ে থাকে।’

নিউ ইয়র্কে যখন জাতিসংঘ শরণার্থী সংস্থার পক্ষ থেকে এই বক্তব্য এসেছে, একই দিনে ব্রাসেলসে ইউরোপীয় ইউনিয়নের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীরা সমুদ্রপথে ইতালি আসা অভিবাসল কিভাবে ব্যবস্থাপনা করা যায় তা নিয়ে আলোচনায় বৈঠকে বসেছেন।

ইইউ সদস্য রাষ্ট্র এবং ইউরোপীয় পার্লামেন্টের সাধারণ আশ্রয় ব্যবস্থায় সুদূরপ্রসারী সংস্কারের জন্য বছরের পর বছর ধরে আলোচনা চললেও কোনো ফলাফল আসেনি। এবারও বিভিন্ন শর্ত নিয়ে বিরোধ দেখা দিয়েছে ইটালি এবং জার্মানির মধ্যে।

জাতিসংঘ শরণার্থী সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, এই বছরের জানুয়ারি থেকে ২৪ সেপ্টেম্বরের মধ্যে প্রায় এক লাখ ৮৬ হাজার মানুষ এরইমধ্যে ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে ইউরোপে পৌঁছেছেন। এর মধ্যে এক লাখ ৩০ হাজারই এসেছেন ইতালিতে। গত বছরের তুলনায় এই সংখ্যা ৮৩ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। বাকি অভিবাসীরা এসেছেন গ্রিস, স্পেন, সাইপ্রাস এবং মাল্টায়। সবচেয়ে বেশি অভিবাসী ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়েছেন টিউনিশিয়া থেকে। এ সংখ্যা প্রায় এক লাখ দুই হাজার। লিবিয়া থেকে এসেছেন ৪৫ হাজার মানুষ।

মেনিকদিওয়েলা জানিয়েছেন, অন্তত ৩১ হাজার মানুষকে সমুদ্র থেকে উদ্ধার করা হয়েছে বা টিউনিশিয়ায় ফেরত পাঠানো হয়েছে। লিবিয়ার ক্ষেত্রে এ সংখ্যা ১০ হাজার ৬০০ জন।

মেনিকদিওয়েলা নিরাপত্তা পরিষদকে মনে করিয়ে দেন যে সাব-সাহারান আফ্রিকার দেশগুলো থেকে লিবিয়া এবং টিউনিশিয়ার উপকূলে আসার পথটুকু “বিশ্বের সবচেয়ে বিপজ্জনক অভিবাসন রুটের একটি।”

তিনি বলেন, ‘সাধারণের চোখের আড়ালে অনেক মানুষ প্রাণ হারিয়েছে।’

তিউনিশিয়ার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কামেল ফেকিহ ডিডাব্লিউকে বলেছেন, অভিবাসীদের ইউরোপের পথে যাত্রা ঠেকাতে তার দেশের সীমিত সামর্থ্য রয়েছে। শুরু থেকেই আমরা এই বিষয়টির ওপর জোর দিয়েছি যে, অভিবাসন এর কারণগুলোর সমাধান না করে অভিবাসন ব্যবস্থাপনা করা সম্ভব নয়। টিউনিশিয়া কেবল নিজস্ব সীমানা রক্ষা করতে পারে। (পরোক্ষভাবে) নিজস্ব সীমানা পর্যবেক্ষণ করা ছাড়া অন্যদের জন্য সীমান্ত রক্ষী হিসাবে কাজ করতে পারে না।

ফেকিহ তার দেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতির কথাও উল্লেখ করেছেন। টিউনিশিয়া একটি কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে রয়েছে। তাই আমরা সাব-সাহারান এবং সাহেল দেশগুলো থেকে এত সংখ্যক আফ্রিকান অভিবাসীদের নিতে অক্ষম।

অভিবাসী বিষয়ক সংবাদমাধ্যম ইনফোমাইগ্রেন্টস তিনটি প্রধান ইউরোপীয় সংবাদমাধ্যমের নেতৃত্বে একটি যৌথ প্লাটফর্ম৷ প্লাটফর্মটিতে রয়েছে জার্মানির আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম ডয়চে ভেলে, ফ্রান্স মিডিয়া মোন্দ, এবং ইটালিয়ান সংবাদ সংস্থা আনসা৷ এই প্রকল্পের সহ-অর্থায়নে রয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন৷ সূত্র: ডিডাব্লিউ