এন জি চক্রবর্তী
দ্বিতীয় ভাগ।
বাইশ অধ্যায়। (২৭তম অংশ)
খরচসমূহ।
দৈনন্দিন ও বাসার বিশেষ খরচ, ব্যবসায়িক ও শ্রমিক কর্মচারী, শিক্ষানবীশদের বেতন।
আগের অধ্যায়গুলোতে যেসব হিসাব দেখানো হয়েছে তার অতিরিক্ত কিছু খরচ ও হিসাব:
- বিবিধ ব্যবসায়িক খরচ
- সাধারণ খরচ
- পারিবারিক খরচ
- প্রাপ্তি
- পরিশোধ
- লাভক্ষতি
এ হিসাবগুলো দরকারী। কারণ এর প্রতিটি হিসাবের ব্যালান্স টানা সম্ভব। এবং তা দিয়ে আর্থিক বিবরণী তৈরী করা যায় এমনকি ব্যবসা কেমন চলছে, তাও বোঝা যায়।
এগুলো কোন কাজে লাগে আর কিভাবে এতে এন্ট্রি দিতে হয় তা পরিষ্কারভাবে আপনাদের কাছে ব্যাখ্যা করছি:
’বিবিধ ব্যবসায়িক খরচ’ বলতে ব্যবসা করতে হলে যে খরচগুলো ইনভেন্টরীর মত গুরুত্বপূর্ণ নয় ঠিকই, টাকার অংকেও ছোট ছোট, কিন্ত সে খরচ ছাড়া আবার চলেও না, সেগুলো এর মধ্যে অন্তর্ভুক্ত। ধরা যাক, আপনি কোন জিনিস কিনছেন, তখন কুলি, ওজনদার, প্যাকার, জাহাজের খালাসি, ডেলিভারীম্যান এদেরকে বখশিস দিতেই হয়। অথচ এগুলি আলাদা আলাদাভাবে পরিমানে এত ছোট যে এদের প্রত্যেকের জন্য আলাদাভাবে হিসাব রাখতে গেলে ’খাজনার চেয়ে বাজনা বড়’ হয়ে যায়। কথায় বলে না, ’খুদ খেয়ে পেট ভরেনা’।
আবার এমনও পারে যে একই কুলি, ওজনদার, প্যাকার, জাহাজের খালাসি, ডেলিভারীম্যানকে আপনার একাধিক কাজে লাগালেন। একাধিক মানে - ধরুন আপনি একই চালানে একই জাহাজে হরেক রকমের মাল উঠাচ্ছেন। প্রত্যেকটি ওই ধরণের ছোটখাট খরচের জন্য মালওয়ারী হিসাব রাখতে গেলে আপনার পোষাবে না। তখন আপনাকে বাধ্য হয়ে ’বিবিধ ব্যবসায়িক খরচ’ নামের একটা হিসাব খুলতেই হবে। আর এর ব্যালান্স সবসময় ডেবিট হওয়া স্বাভাবিক। এর মধ্যেই আপনার পরোক্ষ যত খরচ সবই বুক করতে পারেন। তবে আবার কেউ কেউ এদের প্রত্যেকটার জন্য আলাদা আলাদা হিসাব রাখেন। যেভাবেই রাখুন, এর ব্যালান্স সবসময় ডেবিট হবে। যদি উল্টোটি দেখেন, মানে ক্রেডিট ব্যালান্স দেখেন, তবে বুঝবেন, পোষ্টিংএ কোথাও না কোথাও আপনি নির্ঘাত ভুল করেছেন।
আপনার মেমোরেন্ডামটিতে লিখুন, ’এই এই ওজন বা পরিমানের এই এই মালামাল জাহাজে উঠানো নামানোর জন্য প্রয়োজনীয় সংখ্যক কুলি, ওজনদার, প্যাকার, জাহাজের খালাসি, ডেলিভারীম্যান প্রভৃতিকে অত টাকা দেওয়া হলো’। আর তার জার্নালটি হবে:
পারিবারিক যে সমস্ত খরচ আছে তা থেকে কারো রেহাই নেই। তা সে শষ্য, মদ, তেল, লবন, মাংস, জুতা, টুপি, মোজা, ঝাড়–, বখশিষ, দর্জি, নাপিত, পাউরুটি, ধোপা ইত্যাদি, তারপর রান্নাঘরের বাসনপত্র, গামলা, হাঁড়িকুড়ি ইত্যাদি যাই হোক না কেন। কেউ কেউ এগুলোর প্রত্যেকটির আলাদা আলাদা হিসাব রাখেন, যাতে দিন বা বছর শেষে এক নজরে কোন খাতে কত খরচ করেছেন, তা দেখতে পারেন। আপনিও চাইলে সে রকম করতে পারেন। আবার প্রত্যেকের জন্য আলাদা আলাদা হিসাবও রাখতে পারেন। তবে, সব মিলিয়ে কমপক্ষে একটা হিসাবে সবগুলো একত্রেও রাখতে পারেন। বিবিধ ব্যবসায়িক খরচ এর হিসাব যেভাবে রাখেন, সেভাবে এই পারিবারিক খরচের হিসাবটা রাখতে পারেন। তবে যেভাবেই রাখুন, দৈনিককার খরচ দৈনিক লিপিবদ্ধ করুন।
আবার এমনও অনেকে থাকতে পারেন যারা সবগুলোর মধ্যে যেগুলি তাঁদের কাছে বেশী গুরুত্বপূর্ণ তার প্রত্যেকের জন্য হিসাব পৃথক রেথে বাকীদের জন্য একত্রে একটা হিসাব রাখেন। যাতে বছর শেষে কোন কোনটায় কত খরচ হলো পৃথকভাবে দেখে নিতে পারেন। আর একেবারই যেগুলি ছোট অংকের সেগুলির জন্য আলাদাভাবে ’ফ্লোট’ ব্যবহার করতে পারেন।
বাস্তব হচ্ছে এই যে, এত এত ছোট ছোট হিসাব পৃথক রাখা সম্ভব নয়। একত্রে রাখার জার্নালটি হবে এ রকম:
বিভিন্ন খরচের জন্য- যেমন ধরুন, আমোদ প্রমোদ, হারানো টাকা, ওয়েজার, আগুনে পুড়ে যাওয়ার ক্ষতি - যেগুলোকে বলতে পারি বিশেষ খরচ-এটাকেও পারিবারিক খরচের মধ্যে ধরা যেতে পারে। তবে, উপহার, উপঢৌকনসহ প্রত্যেকটির আলাদা আলাদা বাৎসরিক খরচ যদি আপনি জানতে চান, তাহলে খতিয়ানে তার প্রত্যেকটির বয়ান থাকতে হবে।
এ ব্যাপারে এখানে আর কিছু বলার নেই। আপনি নিশচয়ই ইতিমধ্যে আপনার লেনেদেনের যাবতীয় এন্ট্রি দিতে আপনি সক্ষম, যদি এ বইয়ে যতটুকু এ পর্যন্ত যা বলা হয়েছে তা মনে রাখতে পারেন। পরবর্তী বিষয় হচ্ছে- ’সাবসিডিয়ারী হিসাব’। এ হিসাবটি খতিয়ানসহ অন্যান্য বইতে কিভাবে খোলা হবে তার বিবরণ, যাতে আপনি ওই হিসাবটি নিজে রাখতে পারেন। (চলবে)
© ২০২৩ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত | কর্পোরেট সংবাদ সম্পাদক - মোঃ মিজানুর রহমান । উপদেষ্টা সম্পাদক- জেসমিন আক্তার, এফসিএস ই-মেইলঃ corporatesangbad@gmail.com । ফোনঃ ০২২২-৩৩৫৪১২৫ । মোবাইলঃ ০১৭১১০৭৬৮১৫ অফিসঃ ৫৫/বি, নোয়াখালী টাওয়ার, ১১ তলা, সুইট ১১-এফ, পুরানা পল্টন, ঢাকা ১০০০ |
ফ্রা লুকা ডি প্যাসিওলি’র ‘পার্টিকুলারিস ডি কম্পিউটিস এট স্ক্রিপচার্স’ (এ্যাকাউন্টিং বুকস্ এ্যান্ড রেকর্ডস) এর অধ্যাপক জেরেমি ক্রিপসকৃত ইংরেজি অনুবাদ থেকে বঙ্গানুবাদ https://corporatesangbad.com/473982/ |