ব্যয়যোগ্য রিজার্ভের পরিমাণ জানাল বাংলাদেশ ব্যাংক

Posted on জুলাই ২, ২০২৪

অর্থ-বাণিজ্য ডেস্ক : দেশের প্রকৃত রিজার্ভ নিয়ে গণমাধ্যমে একাধিক প্রতিবেদন প্রকাশ করা হলেও নিশ্চুপ ছিল বাংলাদেশ ব্যাংক। অবশেষে প্রথমবারের মতো নিট আন্তর্জাতিক রিজার্ভের (এনআইআর) হিসাব প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। বর্তমানে দেশে ব্যয়যোগ্য রিভার্ভের পরিমাণ ১৬ বিলিয়ন ডলার। আর আইএমএফের হিসাব পদ্ধতি (বিপিএম-৬) অনুযায়ী রিজার্ভ এখন দুই হাজার ১৮৪ কোটি ডলার বা ২১ দশমিক ৮৪ বিলিয়ন ডলার।

মঙ্গলবার (৩০ জুন) বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র মো. মেজবাউল হক এ তথ্য জানিয়েছেন।

তিনি জানান, গত জুন শেষে আইএমএফ স্বীকৃত বিপিএম৬ অনুযায়ী নিট রিজার্ভ ১৬ বিলিয়ন ডলারের বেশি। তবে প্রকৃত পরিমাণ কতো তা স্পষ্ট করেননি।

চলতি বছরের ২৭ জুন পর্যন্ত দেশে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ছিল ২৭.১৫ বিলিয়ন ডলার। তবে ৩০ জুন শেষে এর পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২৬.৮১ বিলিয়ন ডলার। অর্থাৎ মাত্র ৩ দিনে দেশের রিজার্ভ কমেছে ০.৩৪ বিলিয়ন ডলার। তবে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) তথ্য অনুযায়ী এ রিজার্ভের পরিমাণ আরও কম।

আইএমএফ বলছে, ৩০ জুন পর্যন্ত দেশের রিজার্ভ ২১.৮৩ বিলিয়ন ডলার। সাধারণত সংস্থাটি রিজার্ভ থেকে কোনো ঋণের দায় বা অন্য সংস্থাকে ঋণ দেওয়া অর্থকে রিজার্ভ হিসাবে বিবেচনা করে না।

এর আগে, গত ২৭ জুন রিজার্ভে আইএমএফ থেকে ১.১৫ বিলিয়ন বা ১১৫ কোটি ডলার ছাড়াও কোরিয়া, আইবিআরডি ও আইডিবি থেকে আরও ৯০০ মিলিয়ন বা ৯০ কোটি ডলার যোগ হয়েছিল। যার জন্য সবমিলিয়ে দেশের রিজার্ভ দাঁড়িয়েছিল ২৭.১৫ বিলিয়ন ডলারে।

বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমতে থাকায় গত বছরের ৩০ জানুয়ারি আইএমএফের সঙ্গে ৪৭০ কোটি ডলারের ঋণচুক্তি করে বাংলাদেশ। এর তিনদিন পর প্রথম কিস্তিতে ৪৭ কোটি ৬২ লাখ ৭০ হাজার ডলার ছাড় করে সংস্থাটি। এরপর গত ১৬ ডিসেম্বর আসে দ্বিতীয় কিস্তির ৬৮ কোটি ২০ লাখ ডলার।

২০২৬ সাল পর্যন্ত মোট সাতটি কিস্তিতে ঋণের পুরো অর্থ ছাড় করার কথা রয়েছে। দ্বিতীয় কিস্তির পরবর্তীগুলোতে সমান অর্থ থাকার কথা থাকলেও রিজার্ভ আরও কমে যাওয়ায় তৃতীয় ও চতুর্থ কিস্তিতে বেশি অর্থ চায় বাংলাদেশ। বেশ কিছু কঠিন শর্তের বাস্তবায়ন ও আগামীতে আরও বড় সংস্কার কার্যক্রমের প্রতিশ্রুতি দেওয়ায় সংস্থাটি তৃতীয় কিস্তিতে ৬৮ কোটি ডলারের পরিবর্তে ১১৫ কোটি ডলার অনুমোদন করেছে।

আইএমএফের দেওয়া ঋণের একটি অংশ জলবায়ু তহবিলের, যা বাংলাদেশকেই প্রথম দেওয়া হয়েছে। এ কর্মসূচি অব্যাহত থাকুক, তা চায় সংস্থাটি। এজন্য চতুর্থ কিস্তির জন্য জুন শেষে নিট রিজার্ভের লক্ষ্যমাত্রা ৫.৩৪ বিলিয়ন ডলার কমিয়ে নির্ধারণ করা হয়েছে ১৪.৭৬ বিলিয়ন ডলার।

উল্লেখ্য, গত ২৪ জুন বাংলাদেশের জন্য ঋণের তৃতীয় কিস্তি অনুমোদন করে আইএমএফ। সংস্থাটি থেকে বাংলাদেশ মোট ঋণ নিচ্ছে ৪ দশমিক ৭০ বিলিয়ন ডলার। ঋণের প্রথম কিস্তির ৪৭৬ দশমিক ২৭ মিলিয়ন ডলার এসেছে ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে। দ্বিতীয় কিস্তি হিসেবে প্রায় ৬৮১ মিলিয়ন ডলার আসে গত বছরের ডিসেম্বরে। মোট সাত কিস্তিতে ঋণের পুরো অর্থ ছাড় করা হবে।