সমুদ্রজলে রানওয়ের ৮৩ শতাংশ কাজ শেষ, নভেম্বরে ওঠানামা করবে উড়োজাহাজ

Posted on September 25, 2023

মোহাম্মদ রিদুয়ান হাফিজ, কক্সবাজার প্রতিনিধি: কক্সবাজার বিমানবন্দরে প্রস্তুত হচ্ছে দেশের সবচেয়ে বড় ও দৃষ্টিনন্দন রানওয়ে। প্রকল্পের কাজ শেষ হয়েছে প্রায় ৮৩ শতাংশ। সবকিছু ঠিক থাকলে এটি চালু হবে নভেম্বর মাসের শেষদিকে।

সাগরের জলরাশি ছুঁয়ে অবতরণ করবে বিমান। মনে হবে যেন পাখির ডানায় চেপে নীল জলের দিগন্ত ছুঁয়ে মাটিতে নেমে আসছেন যাত্রীরা। সাগরের বুক চিরে নির্মাণ হতে যাওয়া এটি কক্সবাজার আন্তর্জাতিক বিামানবন্দরের সম্প্রসারিত রানওয়ে। সুনীল জলরাশীর মাঝ দিয়ে যেটি এখন অনেকটাই দৃশ্যমান।

রানওয়ে পরিষেবা চালু হলে, বোয়িং ৭৭৭ এবং বোয়িং ৭৪৭-এর মতো বড় বিমানগুলো কক্সবাজার বিমানবন্দরে অবতরণ করতে সক্ষম হবে বলে জানিয়েছেন বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) কর্মকর্তারা।

বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক) চীনের সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং কনস্ট্রাকশন কোম্পানি লিমিটেডের (সিসিইসিসি) সঙ্গে চুক্তি করে। এই কোম্পানি চীনের আরেক প্রকৌশল কোম্পানি চাংজিয়াং ইচাং ওয়াটার ইঞ্জিনিয়ারিং ব্যুরোকে (সিওয়াইডব্লিউসিবি) সঙ্গে নিয়ে ২০২১ সালের আগস্ট মাসে প্রকল্প বাস্তবায়ন কাজ শুরু করছে। এর আগে কক্সবাজার বিমানবন্দরের রানওয়ের দৈর্ঘ্য ছিল ৯ হাজার ফুট।

বেসরকারি বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মো. মফিদুর রহমান জানান, রানওয়ের ৮৩শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। এটি সেপ্টেম্বরে শেষ হাওয়ার কথা থাকলেও কোভিড-১৯ এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধসহ বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ সত্ত্বে একটু সময় নিতে হয়েছে। সব চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে আমরা আগামী মাসের অর্থাৎ নভেম্বর মাসে এই রানওয়ে পরিক্ষা মূলক চালু হবে।

তিনি আরও জানান, ১৯৫৬ সালে একটি অভ্যন্তরীণ বিমানবন্দর হিসেবে যাত্রা শুরু করে কক্সবাজার বিমানবন্দর। ৪টি এয়ারলাইন্স এখন এ বিমানবন্দরে অভ্যন্তরীণ ফ্লাইট পরিচালনা করে। যেটি কক্সবাজার শহর থেকে দেড় কিলোমিটার এবং ঢাকা থেকে ৩৯৬ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত।প্রথম পর্যায়ে রানওয়েটি ৬ হাজার ৭৭৫ ফুট থেকে ৯ হাজার ফুট এবং ১২০ ফুট থেকে ২০০ ফুট প্রশস্ত করা হয়েছিল।

পরে ২০১৯ সালে সরকার ১ হাজার ৫৬৮ কোটি ৮৬ লাখ টাকার একটি প্রকল্প হাতে নেয়। যার লক্ষ্য ছিল বিমানবন্দরটিকে আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত করা এবং বিদেশি পর্যটকদের জন্য বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকতে নির্ঝঞ্ঝাট ভ্রমণের সুযোগ করে দেওয়া। এই রানওয়ে চালু হলে কক্সবাজার থেকে সরাসরি বিভিন্ন দেশের সাথে বিমান চলাচল সংযুক্ত হবে। এবং পাশাপাশি রাতেও উঠানামা করতে পারবে বিমান। এটির কারনে কক্সবাজার বিদেশি পর্যটক টানতে সক্ষম হবে।

কক্সবাজার-২ আসনের সংসদ সদস্য আশেক উল্লাহ রফিক বলেন, রানওয়ে চালু হলে এটি আন্তর্জাতিক মানের বিমান বন্দর হিসাবে স্বীকৃতি পাবে। পাশাপাশি বিদেশি পর্যটকরাও কক্সবাজারে আসতে আগ্রহ বাড়াবে। রানওয়ে চালু হলে বোলিং ৭৭৭, ৩০০ সহ বিশ্বের সকল অত্যাধুনিক বিমান এই রানয়েতে চলাচল করবে। এটি কক্সবাজারের জন্য একটি মাইল ফল ।

কক্সবাজার বিমানবন্দর রানওয়ে সমুদ্রে সম্প্রসারণ প্রকল্পের পরিচালক মো. ইউনুস ভূঁইয়া বলেন,কক্সবাজার বিমানবন্দরে প্রস্তুত হচ্ছে দেশের সবচেয়ে বড় ও দৃষ্টিনন্দন রানওয়ে। প্রকল্পের কাজ শেষ হয়েছে প্রায় ৮৩ শতাংশ। সবকিছু ঠিক থাকলে এটি চালু হবে নভেম্বর মাসের শেষদিকে।নতুন রানওয়ের পুরোটা (১ হাজার ৭০০ ফুট) অংশ থাকছে সাগরজলের ওপর। উড়োজাহাজ নামবে সাগরজল ছুঁয়ে। তখন কক্সবাজারের পর্যটনসহ ব্যবসা-বাণিজ্যে প্রসার ঘটবে। আমরা চেষ্টা করছি এর আগে কাজ শেষ করার।