হৃদয়ের গভীরে গ্রোথিত যাঁর নাম

Posted on August 1, 2017

শুরু হলো শোকের মাস, আগষ্ট।বছরের বারটি মাসের মধ্যে আগষ্ট মাস এলেই জাতীয় জীবনটা অশ্রুসিক্ত হয়ে উঠে। এ মাসের ১৫ তারিখে জাতির জনককে স্বপরিবারে হত্যা করা হয়। তবে এ রাতটি কেবল বঙ্গবন্ধু ও সেদিন ৩২ নম্বরে উপস্থিত পরিবারের স্বজনদের নৃশংস হত্যার কালরাত নয়, নয় কেবল শেখ মনি দম্পতি, আবদুর রব সেরনিয়াবাত হত্যাকান্ডের কালরাত। এ ছিল এক জঘন্য চক্রান্ত ও গভীর ষড়যন্ত্রের বহি:প্রকাশ। এ কেবল কয়েকজন রজনীতিবিদের হত্যাকান্ড নয়, এ ছিল আমাদের জাতীয় ইতিহাসের উল্টোযাত্রার অপপ্রয়াস।

এই ১৫ আগস্ট ১৯৭৫ আমাদের জাতীয় ইতিহাসে যেন এক বিভাজন রেখা। বায়ান্ন থেকে এ জাতির যে অভিযাত্রা শুরু হয়েছিল তার গতিমুখ ছিল গণতন্ত্র, অসাম্প্রদায়িকতা ও স্বাধীনতার দিকে। কিন্তু পঁচাত্তরের পটপরিবর্তনের সঙ্গে জাতীয় ইতিহাসেরও গতি পরিবর্তনের জবরদস্তি আমরা লক্ষ করি। সেই থেকে টানা দুই দশক বাংলাদেশের রাজনীতি চলেছে মুক্তিযুদ্ধে প্রত্যাখ্যাত পাকিস্তানি প্রতিক্রিয়াশীলতার ধারায়। বহু আন্দোলন-সংগ্রাম ও ত্যাগের মধ্য দিয়ে এ দেশ আবার স্বাধীনতার চেতনায় উজ্জীবিত হয়ে সামনে চলার প্রেরণা ফিরে পেয়েছে। এর মধ্যে বঙ্গবন্ধু ও জেলহত্যার ঘাতকদের বহু প্রত্যাশিত বিচার ও শাস্তি হয়েছে। একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারও চলছে এবং অনেকের রায় অনুযায়ী শাস্তি হয়েছে।

বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক প্রজ্ঞা ও দূরদর্শিতা জাতীয় জীবনে এগিয়ে যাওয়ার মূলমন্ত্র। জাতির জনকের কন্যা শেখ হাসিনা বর্তমানে সরকার পরিচালনার গুরু দায়িত্ব পালন করছেন। বিশ্ব দরবারে বাংলাদেশ আজ উন্নয়নের রোল মডেল। এরপরও জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাসবাদ মাথা চারা দিয়ে উঠছে মাঝে মাঝেই। কঠোর হাতে সেসব দমনও করছে সরকার।তবে শোকের মাসে তথা আগামীতে যাতে আর কোন সন্ত্রাসবাদ, জঙ্গিবাদ মাথা তুলে দাঁড়াতে না পারে সেদিকে সতর্ক দৃষ্টি রাখা প্রয়োজন। এছাড়া দেশবিরোধী শক্তি নানা রকম চক্রান্ত করেই চলেছে-তাদেরকেও চিহ্তি করে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। 

আগামী প্রজন্মের কাছে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ যেন হয় সেরা আদর্শ তার জন্য কার্যকরি ভূমিকা পালন করতে হবে সরকারকে। কারণ দেশের আপামর জনতার কাছে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কেবল মাত্র স্বাধীনতার মহানায়কই নন, জাতীয় জীবনের অমোচনীয় এক সত্ত্বা, যা গ্রোথিত হয়ে আছে হৃদয়ের গভীরে।