শিশু নির্যাতন ও ধর্ষণ প্রতিরোধে দরকার আইনের কঠোর প্রয়োগ

Posted on January 17, 2017

শিশু নির্যাতন ও ধর্ষণ একটি সামাজিক ব্যাধি, জঘন্য অপরাধ। সমাজের অসংখ্য শিশু-নারীকে এর শিকার হয়ে দু:সহ জীবন পার করতে হয়। কেউ আবার লোকলজ্জার ভয়ে বেছে নেয় আত্মহননের পথ। আমাদের দেশের এই অপরাধ ক্রমেই বৃদ্ধি পাচ্ছে। সম্প্রতি মানবাধিকার সংস্থা আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক) শিশু নির্যাতন ও ধর্ষণের যে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে তাতে দেখা যায় উদ্বেগজনকভাবে বাড়ছে এই অপরাধ প্রবণতা।

প্রতিবেদনে দেখা যায়, গত বছর মোট মামলা হয়েছে এমন ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে ৭২৪টি। এর মধ্যে শিশু ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে ৩০৮টি, আবার ধর্ষিতা শিশুদের মধ্যে ১৫৭টি শিশুর বয়স ১২ বছরের কম। আর ৬ বছরের নিচের বয়সের শিশু ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে ৪৬টি ক্ষেত্রে। আসকের এই প্রতিবেদনটিতে কেবল ধর্ষণ মামলার ঘটনাগুলো উঠে এসেছে। আইনের আশ্রয় নেয়ার বাইরে রয়ে গেছে অনেক ঘটনাই।

আমাদের সমাজের অনেক পরিবার এমন অবস্থার মধ্যে পড়লে আইনের আশ্রয় নেন না। গ্রামের দরিদ্র শ্রেণির মানুষের ক্ষেত্রে এমন ঘটনা ঘটলে প্রভাবশালীদের চাপে ধামাচাপা দেয়ার ঘটনা ঘটে। মনে রাখতে হবে, আমাদের দেশে নারী ও শিশু নির্যাতন বিষয়ক আইন রয়েছে। শুধু দরকার কঠোর প্রয়োগ। অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায় ধর্ষক আইনের হাতে ধরা পড়লেও জামিনের বের হয়ে আসে। নির্যাতিতা বা ধর্ষিতা যদি তুলনামূলক দারিদ্র হয় আর ধর্ষক হয় অপেক্ষাকৃত ধনী সেক্ষেত্রে স্থানীয় প্রভাবের কারণে আতঙ্কের মধ্যে থাকতে হয়। সরকারের পক্ষ থেকে নেয়া নানামুখী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হলেও নির্যাতিতাদের সামাজিক অবস্থানের বিষয়ে জোরালো দৃষ্টি দেয়া দরকার।

নারী-শিশু নির্যাতন ও ধর্ষণের বিরুদ্ধে আইনের পাশাপাশি দরকার সামাজিক আন্দোলন। গড়তে হবে সামাজিক প্রতিরোধ। যাতে মুষ্টিমেয় কয়েকজনের জন্য সামাজিক স্থিতিবস্থা ব্যহত না হয়। মনে রাখা দরকার, আমরা প্রত্যেকের এ সমাজের একটি অংশ। সেই সমাজকে কলুষিতমুক্ত রাখতে আমাদেরও রয়েছে সামাজিক দায়বদ্ধতা।