নরসিংদীতে ট্রাক চুরির ঘটনায় সভাপতি বহিষ্কার

Posted on September 16, 2023

সাইফুল ইসলাম রুদ্র, নরসিংদী প্রতিনিধি : নরসিংদীর সাহেপ্রতাবের জেলা ট্রাক, ট্যাংকলড়ী ও কভার্ডভ্যান শ্রমিক ইউনিয়নের সদস্য গোলজার হোসেন অভিযোগ করে বলেন, দীর্ঘ ১৩ বৎসর যাবত আমাদের এ সংগঠনের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন মোঃ জাহাঙ্গীর আলম ভূঞা।

হঠাৎই ঢাকা আমিনবাজার থেকে ফোন আসে আমাদের সমিতির সাধারন সম্পাদক জাকির হোসেন মৃধার নিকট। অপর প্রান্ত থেকে জানানো হয়, সাহেপ্রতাব জেলা ট্রাক, ট্যাংকলড়ী ও কভার্ডভ্যান সমিতির সভাপতি একটি চুরির ট্রাক বিক্রি করতে আমিনবাজারে যান। যাহার ট্রাক নং- পাবনা ট ১০৪০। ট্রাকটি ৩ লক্ষ টাকার বিনিময়ে রফা দফা করেন সভাপতি মোঃ জাহাঙ্গীর আলম ভূঞা।

কিন্তুু এ বিষয়টি ধামাচাপা দিতে বিভিন্ন কৌশলে তিনি এড়িয়ে যান। তাৎক্ষনিক আমরা ঘটনাস্থলে গেলে আমাদের সভাপতিকে গিয়ে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় দেখতে পাই।

এরই জের ধরে এই সংগঠনকে কলঙ্কিত ও মিথ্যা অপবাদ দিয়ে সাধারন সম্পাদক জাকির হোসেন মৃধার বিরুদ্ধে সভাপতি মোঃ জাহাঙ্গীর আলম ভূঞা একটি মিথ্যা বানোয়াট একটি সংবাদ সম্মেলন করেন। অথচ এ সভাপতিকে আমরা শ্রমিকরা ৪ বার বহিষ্কার করেছি দুর্নীতির অভিযোগে। তার কাছে শ্রমিক ফেডারেশন বিভিন্ন ক্ষেত্রে এখনো অনেক টাকা পাওনা রয়েছে। টাকা খুঁজতে গেলে তিনি বিভিন্ন তাল-বাহানা করেন।
অন্যদিকে আরেক শ্রমিক মোঃ আইনুল হোসেন সংবাদকর্মী রুদ্রকে বলেন, আমাদের এ সংগঠনটিকে সুনামের সহিত ধরে রাখতে অক্লান্ত চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন সাধারন সম্পাদক। অথচ সততা থাকলেও সভাপতির নিকট তার কোন মূল্যায়ন নেই। সভাপতি লুটপাট ও দুর্নীতি করতে পারেন না বিধায় সাধারন সম্পাদকের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অপপ্রচার চালাচ্ছেন।

এদিকে নরসিংদী সাহেপ্রতাব এলাকার অটো চালক আবুল কাশেম গণমাধ্যম কর্মীদেরকে বলেন, বিগত করোনাকালীন সময়ে এ সমিতির সাধারন সম্পাদক সাধারন অসহায় বেকার শ্রমিকদের পাশে দাড়িয়েছেন নিজস্ব অর্থ দিয়ে। অথচ প্রকৃত ভালো মানুষের বিরুদ্ধে সমালোচনা চলছে যা কাম্য নয়।

এদিকে সাধারন সম্পাদক জাকির হোসেন মৃধা সংবাদকর্মী রুদ্রকে বলেন, আমার বিরুদ্ধে যে মিথ্যা বানোয়াট ও বিভ্রান্তমূলক সংবাদ প্রচার করা হচ্ছে তার কোন সত্যতানেই। অথচ তিনি একজন সভাপতির দায়িত্বে ছিলেন। দায়িত্বে থেকে বিগত সময়ে যে সমস্ত অন্যায়, অনিয়ম করেছে এতে করে শ্রমিকরা তার প্রতি মনক্ষুন্ন ও বিভ্রান্ত।

এরই প্রতিবাদ করতে গেলে তিনি আমার বিরুদ্ধে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অপপ্রচার চালাচ্ছে। অথচ আমি সংগঠনটি বাংলাদেশের একটি শ্রেষ্ঠ সংগঠন হিসেবে দাড় করতে গিয়ে প্রতিনিয়ত অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছি। আমার বিরুদ্ধে নরসিংদী জজ কোর্টে একটি মিথ্যা ও হয়রানী মূলক মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলায় যা কিছু বলা হয়েছে তার সাথে বর্তমান সংগঠনের কাগজপত্রের কোন মিল নেই। তিনি কেনো এ সংগঠনের সুনাম নষ্ট করছেন তা আমি জানিনা। উনি যেহেতু একজন সংগঠনের সভাপতির দায়িত্বে ছিলেন তিনি সকলের সাথে বসে বিষয়টি নিয়ে সুরাহা করা উচিত ছিল। কিন্তুু তিনি তা না করে নিজের মনগড়া ইচ্ছামত সংগঠন ও আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অপপ্রচার চালাচ্ছে। এতে করে প্রায় অধিকাংশ শ্রমিক তার প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করছে ও সংগঠনের সুনাম নষ্ট হচ্ছে।

এ বিষয়ে সভাপতি মোঃ জাহাঙ্গীর আলম মৃধা সংবাদকর্মী রুদ্রকে মোবাইল ফোনে বলেন, আমি শ্রমিকের কল্যাণে বিগত সময়ে কাজ করে আসছি। অথচ তারা একক ক্ষমতা দেখিয়ে আমাকে ৪ বার বহিষ্কৃত করেছে। এক পর্যায়ে ট্রাক চুরি ও বিক্রির বিষয়টি তার কাছে জানতে চাইলে তিনি স্বীকার করে বলেন, বিষয়টি আমি অবগত আছি। আমি এই ঘটনার বিষয়ে স্বাক্ষীও আছি।