অধিকারের আদিলুর ও নাসিরুদ্দিনের ২ বছরের কারাদণ্ড

Posted on September 14, 2023

কর্পোরেট সংবাদ ডেস্ক : ২০১৩ সালে রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে মৃত্যুর সংখ্যা নিয়ে বিভ্রান্তি সৃষ্টির মামলায় মানবাধিকার সংগঠন ‘অধিকার’র সম্পাদক আদিলুর রহমান খান ও পরিচালক নাসিরুদ্দিন এলানের ২ বছরের কারাদণ্ডের রায় ঘোষণা করেছেন ট্রাইব্যুনাল। এ ছাড়াও ১০ হাজার টাকার অর্থদণ্ড, অনাদায়ে আরও ১ মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) বিকেলে ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক এ এম জুলফিকার হায়াত এ রায় ঘোষণা করেন।

গত ২৪ আগস্ট রাষ্ট্রপক্ষ ও আসামি পক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে রায় ঘোষণার জন্য ৭ সেপ্টেম্বর দিন ধার্য করেন বিচারক। তবে ওই দিন তা প্রস্তুত না হওয়ায় বিচারক রায় ঘোষণা পিছিয়ে ১৪ সেপ্টেম্বর দিন ধার্য করেন। রায় ঘোষণার সময় দুই আসামি আদিলুর ও এলান আদালতে হাজির ছিলেন।

রায়ে অসন্তুষ্টি প্রকাশ করে রাষ্ট্রপক্ষের স্পেশাল পাবলিক প্রসিকিউটর নজরুল ইসলাম গণমাধ্যমকে বলেন, সাজা বৃদ্ধির জন্য উচ্চ আদালতে আবেদন করা হবে।

আদিলুর রহমানের আইনজীবী মোহাম্মদ রুহুল আমিন ভূঁইয়া বলেন, বিচারিক আদালত থেকে ন্যায়বিচার পাননি আদিলুর রহমান ও নাসির উদ্দিন। এ রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আবেদন করা হবে।

উল্লেখ্য, ২০১৩ সালে ৫ মে মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজত ইসলাম সমাবেশ করে। পরে সমাবেশস্থলে রাত্রিযাপনের ঘোষণা দেয় সংগঠনের নেতারা। তাদের সেখান থেকে সরিয়ে দিতে যৌথ অভিযান চালায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। ওই অভিযানে ৬১ জন নিহত হয়েছে বলে দাবি করেছিল অধিকার। তবে সরকারের ভাষ্য সেই রাতের অভিযানে কেউ মারা যায়নি। শাপলা চত্বরে অভিযানের পর ২০১৩ সালের ১০ আগস্ট গুলশান থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেছিলেন ডিবির তৎকালীন উপ-পরিদর্শক (এসআই) আশরাফুল ইসলাম।

তদন্ত শেষে ওই বছরের ৪ সেপ্টেম্বর ঢাকার আদালতে আদিলুর ও এলানের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র জমা দেওয়া হয়। এতে ৩২ জনকে সাক্ষী করা হয়। ওই বছরের ১১ সেপ্টেম্বর মামলাটি বিচারের জন্য অভিযোগ আমলে নেন ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনাল। এরপর ২০১৪ সালে দুই আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন আদালত।

মামলার অভিযোগপত্রে বলা হয়, আসামি আদিলুর ও এলান ৬১ জনের মৃত্যুর ‘বানোয়াট, উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও মিথ্যা’ তথ্য দিয়ে প্রতিবেদন তৈরি ও প্রচার করে জনমনে ক্ষোভের সৃষ্টি করে আইনশৃঙ্খলা বিঘ্নের অপচেষ্টা চালায়। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, সরকার ও রাষ্ট্রের ভাবমূর্তি দেশে-বিদেশে চরমভাবে ক্ষুণ্ন করে।’

‘পাশাপাশি তারা ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের মনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিরুদ্ধে বিরূপ মনোভাবের সৃষ্টি করে, যা তথ্য প্রযুক্তি আইনের ৫৭ (১) ও (২) ধারায় অপরাধ। একইভাবে ওই আসামিরা উদ্দেশ্যমূলকভাবে ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি করে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটানোর চেষ্টা চালায় এবং সরকারকে অন্য রাষ্ট্রের কাছে হেয় প্রতিপন্ন করার চেষ্টা চালায়, যা দণ্ডবিধির ৫০৫ ‘সি’ ও ‘ডি’ এবং ৫০৫ ‘এ’ ধারায় অপরাধ।

ওই মামলায় ২০১৩ সালের ১২ সেপ্টেম্বর আদিলুর রহমান খান এবং এ এস এম নাসির উদ্দিনের বিরুদ্ধে অভিযোগ আমলে নেন ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনাল।