কারখানা বন্ধ নর্দান জুটের, হেড অফিসের ঠিকানায় অন্য কোম্পানি

Posted on September 12, 2023

আরিফ হাসান,স্টাফ রিপোর্টার: দেশের পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত পাট শিল্প খাতের অন্তর্ভুক্ত কোম্পানি নর্দান জুট ম্যানুফ্যাকচারিং কোম্পানি লিমিটেডের কারখানা ও হেড অফিস বন্ধ পেয়েছে প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রতিনিধি দল ।

ডিএসই সূত্রে তথ্য জানা গেছে ।

সূত্র জানায়, ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ লিমিটেড (ডিএসই) এর একটি দল ৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ তারিখে নর্দান জুট ম্যানুফ্যাকচারিং কোম্পানি লিমিটেডের কারখানা পরিদর্শনের সময় কোম্পানিটির কারখানা এবং উৎপাদন কার্যক্রম পুরোপুরি বন্ধ দেখতে পান । এবং ৫ সেপ্টেম্বর ডিএসইর প্রতিনিধি দলটি কোম্পানির হেড অফিস পরিদর্শন করলে সেখানকার কার্যক্রমও বন্ধ দেখতে পান। ডিএসই জানায়, কোম্পানিটির হেড অফিস ব্যবহার করছে ওএমসি লিমিটেড ।

এদিকে নর্দান জুটের কোম্পানি সেক্রেটারি শাহাদাৎ হোসেইন পাটোয়ারির সাথে এ ব্যাপারে যোগাযোগ করার চেস্টা করা হলে ফোন নাম্বার বন্ধ থাকায় যোগাযোগ করা সম্ভব হয়ে ওঠেনি ।

এ বিষয়ে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের প্রধান অপারেশন কর্মকর্তা সাইফুর রহমান কর্পোরেট সংবাদকে জানান, ''বেশ কিছু দিন আগে থেকেই নর্দান জুটের কার্যক্রম আমাদের নজরদারিতে ছিলো । এর প্রেক্ষিতে ডিএসই’র একটি প্রতিনিধি দল নর্দান জুটের কারখানা এবং প্রধান কার্যালয় ভিজিট করে । এবং তাদের কার্যক্রম বন্ধ দেখতে পায় । তালিকাভুক্ত সকল কোম্পানির উৎপাদন চালু কিংবা বন্ধের ব্যাপারে স্টক এক্সচেঞ্জকে জানানোর বাধ্যবাধকতা রয়েছে । কিন্তু নর্দান জুট এ ব্যাপারে স্টক এক্সচেঞ্জ কে কিছু জানায়নি । কোম্পানিটি আমাদের নজরদারিতে আছে । কোম্পানি পরিদর্শনের পর প্রতিনিধি দল তাদের রিপোর্ট জমা দিয়েছে । রিপোর্টের ভিত্তিতে খুব শীঘ্রই নর্দান জুটের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে ।''

কোম্পানিটি সর্বশেষ লভ্যাংশ দিয়েছে ২০২০ সালে । ৩০ জুন সমাপ্ত ২০২০ হিসাব বছরের জন্য শেয়ারহোল্ডারদের ৫ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ প্রদান করেছে নর্দান জুট ম্যানুফ্যাকচারিং কোম্পানি লিমিটেডের পরিচালনা পর্ষদ। আলোচ্য সময়ে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ১১ টাকা ৩৩ পয়সা, যা আগের হিসাব বছরে শেয়ারপ্রতি আয় ছিল ২৩ টাকা ২৯ পয়সা। ৩০ জুন ২০২০ এ কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদমূল্য (এনএভিপিএস) দাঁড়িয়েছে ৮১ টাকা ৬৬ পয়সা, ২০১৯ হিসাব বছর শেষে যা ছিল ৮০ টাকা ৩৩ পয়সা।

এর আগে ২০১৯ হিসাব বছরে বিনিয়োগকারীদের ১০০ শতাংশ লভ্যাংশ দিয়েছিলো নর্দান জুট । ২০১৮ হিসাব বছরে লোকসানে থাকায় সে বছর কোন লভ্যাংশ প্রদান করেনি কোম্পানিটি ।

গত ৩ বছর ধরে কোম্পানির উৎপাদন না থাকায় বন্ধ রয়েছে কোম্পানির কারখানা । উৎপাদনে না থাকার কারেনে ৩ বছর বিনিয়োগকারীদের কোন লভ্যাংশ দেয়নি পাট খাতের স্বল্প মূলধনি এই কোম্পানিটি। এ কারণে কোম্পানিটিকে ‘এ’ থেকে ‘জেড’ ক্যাটাগরিতে স্থানান্তর করে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) কর্তৃপক্ষ।

২০১৭ হিসাব বছরে ২০ শতাংশ হারে নগদ ও স্টক লভ্যাংশ দিয়েছিল নর্দান জুট। তার আগে ২০১৬ হিসাব বছরে ৫ শতাংশ, ২০১৫ হিসাব বছরে ২০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ এবং ২০১৪ সালে ৫ শতাংশ বোনাস লভ্যাংশ পেয়েছিলেন কোম্পানির শেয়ারহোল্ডাররা।

প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) গতকাল শেয়ারটির সর্বশেষ দর ছিল ১৯৫ টাকা ৩০ পয়সা। গত এক বছরে শেয়ারটির দর ১৯১ টাকা ৩০ পয়সা থেকে ৩৫৬ টাকার মধ্যে ওঠানামা করেছে।

১৯৯৪ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত নর্দান জুটের অনুমোদিত মূলধন ১০ কোটি টাকা। কোম্পানিটির পরিশোধিত মূলধন ২ কোটি ১৪ লাখ ২০ হাজার টাকা। রিজার্ভে রয়েছে ১৫ কোটি ৩৫ লাখ টাকা।

পাট শিল্প খাতের স্বল্প মূলধনী এই কোম্পানির মোট শেয়ার সংখ্যা ২১ লাখ ৪২ হাজার। এর মধ্যে উদ্যোক্তা-পরিচালকদের হাতে রয়েছে ১৫ দশমিক ০৯ শতাংশ শেয়ার। বাকি ৮৪ দশমিক ৯১ শতাংশ শেয়ার রয়েছে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের হাতে।

কর্পোরেট সংবাদ/এএইচ