আগস্টে রে‌মিট্যান্স কমেছে ৩৭ কোটি ৩৬ লাখ ডলার

Posted on September 3, 2023

অর্থ-বাণিজ্য ডেস্ক : ডলার–সংকটের মধ্যে ধারাবাহিকভাবে কমছে প্রবাসী আয়। সদ্য বিদায়ী আগস্ট মাসে প্রবাসীরা ১৫৯ কোটি ৯৪ লাখ মার্কিন ডলারের সমপরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা দেশে পাঠিয়েছেন। বাংলাদেশি মুদ্রায় যার পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১৭ হাজার ৪৩৪ কোটি টাকায়।

জুলাই মাসের তুলনায় আগস্ট মাসে ৩৭ কোটি ৩৬ লাখ ডলার বা প্রায় ১৯ শতাংশ কম রেমিট্যান্স এসেছে। জুলাই মাসে দেশে রেমিট্যান্স এসেছিল ১৯৭ কোটি ৩০ লাখ ডলার।

অন্যদিকে গত বছরের আগস্টের তুলনায় রেমিট্যান্স কমেছে আরও বেশি। গত বছরের আগস্টে দেশে ২০৩ কোটি ডলারের রেমিট্যান্স এসেছিল। গত বছরের আগস্টের তুলনায় এবছরের আগস্টে রেমিট্যান্স কমেছে ২১.৪৭ শতাংশ।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ হালনাগাদ প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।

রেমিট্যান্সের ওপর আড়াই শতাংশ হারে প্রণোদনা দিচ্ছে সরকার। অন্যদিকে রেমিট্যান্সের প্রবাহ বাড়াতে বাংলাদেশ ফরেন এক্সচেঞ্জ অথরাইজড ডিলারস অ্যাসোসিয়েশন (বাফেদা) ও অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশ (এবিবি) যৌথভাবে ব্যাংকগুলোকে রেমিট্যান্স কেনার জন্য দাম নির্ধারণ করে দিয়েছে। এতে গত মাসগুলোতে রেমিট্যান্সের পরিমাণ কিছুটা বেড়েছিলো। তবে সর্বশেষ আগস্ট মাসে আগের তুলনায় রেমিট্যান্সের পরিমাণ কমেছে।

তথ্য অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরের আগস্টে সরকারি মালিকানাধীন ৫ বাণিজ্যিক ব্যাংকের মাধ্যমে রেমিট্যান্স এসেছে ১৮ কোটি ৩১ লাখ ডলার। বেসরকারি ব্যাংকের মাধ্যমে রেমিট্যান্স এসেছে ১৩৭ কোটি ৬০ লাখ ডলার। বিদেশি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ৬৩ লাখ ডলার এবং বিশেষায়িত একটি ব্যাংকের মাধ্যমে এসেছে ৩ কোটি ৩৯ লাখ ডলার।

সবচেয়ে বেশি রেমিট্যান্স এসেছে ইসলামী ব্যাংকের মাধ্যমে। বেসরকারি খাতের এ ব্যাংকটির মাধ্যমে রেমিট্যান্স এসেছে ৩৪ কোটি ডলারের কিছুটা বেশি। এছাড়া সোশ্যাল ইসালমী ব্যাংকের মাধ্যমে ১২ কোটি ৭৪ লাখ ডলার, ব্র্যাক ব্যাংকের মাধ্যমে ৮ কোটি ৯২ লাখ ডলার, ট্রাস্ট ব্যাংকের মাধ্যমে ৭ কোটি ৪৪ লাখ ডলার এবং আল-আরাফাহ ইসলামী ব্যাংকের মাধ্যমে ৭ কোটি ৩৩ লাখ ডলার রেমিট্যান্স এসেছে।

এর আগে জুলাই মাসে ১৯৭ কোটি ৩০ লাখ ডলারের (১.৯৭ বিলিয়ন ডলার) রেমিট্যান্স পাঠিয়েছিলেন প্রবাসীরা। দেশীয় মুদ্রায় (এক ডলার সমান ১০৮.৫০ টাকা ধরে) এর পরিমাণ ২১ হাজার ৪০৭ কোটি টাকার বেশি। এটি আগের মাস জুনের তুলনায় প্রবাসী আয়ের পরিমাণ কমেছে ২২ কোটি ৬০ লাখ ডলার। আগের মাস জুনে রেমিট্যান্সে এসেছিল ২১৯ কোটি ৯০ লাখ ডলার।

গত জুন মাসে রেকর্ড পরিমাণ ২১৯ কোটি ৯০ লাখ ডলার (২.১৯ বিলিয়ন ডলার) প্রবাসী আয় বা রেমিট্যান্স এসেছিল দেশে। একক মাস হিসেবে যেটি ছিল প্রায় তিন বছরের মধ্যে সবচেয়ে বেশি আসা প্রবাসী আয়। এর আগে ২০২০ সালের জুলাই মাসে ২৫৯ কোটি ৮২ লাখ ডলারের রেকর্ড প্রবাসী আয় এসেছিল। খাত সংশ্লিষ্টদের মতে, ২০২০ সালে হুন্ডি বন্ধ থাকায় ব্যাংকিং চ্যানেলে সর্বোচ্চ সংখ্যক রেমিট্যান্স এসেছিল।

বিদায়ী ২০২২-২০২৩ অর্থবছরে ব্যাংকিং চ্যানেলে প্রবাসীরা পাঠিয়েছেন ২ হাজার ১৬১ কোটি মার্কিন ডলারের রেমিট্যান্স। এটি এ যাবৎকালের মধ্যে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। এর আগে করোনাকালীন ২০২০-২০২১ অর্থবছরে সর্বোচ্চ দুই হাজার ৪৭৭ কোটি ডলারের রেমিটেন্স এসেছিল দেশে।

সদ্য বিদায়ী ২০২২-২৩ অর্থবছরে প্রথম দুই মাসে দুই বিলিয়ন ডলারের রেমিট্যান্স এসেছিল। গত অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে এসেছিল ২০৯ কোটি ৬৩ লাখ ডলার, আগস্টে ২০৩ কোটি ৬৯ লাখ ডলার এসেছিল। টানা ৫ মাস ২ বিলিয়ন ডলারের মাইলফলকে আর যেতে পারেনি। অর্থবছরের সেপ্টেম্বরে আসে ১৫৪ কোটি ডলার, অক্টোবরে ১৫২ কোটি ৫৫ লাখ ডলার, নভেম্বরে ১৫৯ কোটি ৫১ লাখ ডলার, ডিসেম্বরে ১৬৯ কোটি ৯৭ লাখ ডলার, জানুয়ারিতে এসেছিল ১৯৫ কোটি ৮৮ লাখ ডলার, ফেব্রুয়ারিতে ১৫৬ কোটি ডলার আসে। মার্চ এসেছিল ২০২ কোটি ২৪ লাখ ডলার, এপ্রিলে ১৬৮ কোটি ৪৯ লাখ এবং মে মাসে ১৬৯ কোটি ডলার আসে। সবশেষ ঈদুল আজহাকে কেন্দ্র করে জুন মাসে আসে ২১৯ কোটি ৯০ লাখ ডলার।