এবার সত্যিই চলে গেলেন হিথ স্ট্রিক

Posted on September 3, 2023

স্পোর্টস ডেস্ক : বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক বোলিং কোচ ও জিম্বাবুয়ের সাবেক অধিনায়ক হিথ স্ট্রিক মারা গেছেন। মরণঘাতি ক্যানসারের কাছে হার মেনে মাত্র ৪৯ বছর বয়সে তার মৃত্যু হয়।

স্ট্রিকের মৃত্যুর খবর সামাজিকমাধ্যমে জানিয়েছেন তাঁর স্ত্রী নাদিম।

ফেসবুক পোস্টে তার স্ত্রী জানিয়েছেন, ২০২৩ সালে ৩ সেপ্টেম্বর (আজ) ভোরে আমার জীবনের সর্বশ্রেষ্ঠ ভালোবাসা এবং আমার সুন্দর সন্তানদের বাবাকে ফেরেশতাদের সঙ্গে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। যেখানে তিনি নিজ পরিবার ও স্বজনদের সঙ্গে শেষ দিনগুলো কাটাতে চেয়েছিলেন। তিনি প্রেম এবং শান্তিতে আচ্ছাদিত ছিলেন এবং একা পার্কে হাঁটেননি। আমাদের আত্মা অনন্তকালের জন্য আবদ্ধ, স্ট্রিকি। যতক্ষণ না আমি আবারও তোমাকে আঁকড়ে ধরি।

গত কয়েকদিন আগেই বাংলাদেশ জাতীয় দলের সাবেক বোলিং কোচ ও জিম্বাবুয়ের সাবেক অধিনায়ক হিথ স্ট্রিকের মৃত্যুর খবর ছড়িয়েছিল। এরপর খবরটি ভুয়া বলে নিজেই জানান স্ট্রিক। তবে এবার সত্যিই চলে গেলেন তিনি।

জীবনের শেষ কয়েক দিন স্ট্রিক ছিলেন মাতাবেলেল্যান্ডের ফার্ম হাউসে। সেখানেই তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন। বিশ্বের অন্যতম সেরা অলরাউন্ডার ছিলেন স্ট্রিক। গত ছ’মাসে স্ট্রিকের শারীরিক অবস্থার ক্রমশ অবনতি হয়েছে। চিকিৎসকেরাও কোনও আশা দিতে পারেননি। দক্ষিণ আফ্রিকার এক হাসপাতালে চিকিৎসা চলছিল তাঁর।

২০১৪ থেকে ২০১৬—এই দুই বছর বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের বোলিং কোচের দায়িত্ব পালন করেন স্ট্রিক।

স্ট্রিক জিম্বাবুয়ের হয়ে ৬৫টি টেস্ট এবং ১৮৯টি একদিনের আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলেছেন। এ ছাড়া জিম্বাবুয়ের প্রথম ও একমাত্র বোলার হিসেবে টেস্ট ক্রিকেটে ১০০ উইকেট নেন স্ট্রিক। ২০০৫ সালে ক্রিকেট থেকে অবসরে যান তিনি। খেলা ছাড়ার পর যোগ দেন কোচিংয়ে। ব্যাট হাতেও দারুণ অবদান রেখেছেন স্ট্রিক। টেস্টে এক হাজার ৯৯০ ও ওয়ানডেতে ২ হাজার ৯৪৩ রান করেছেন তিনি। সাদা পোশাকে হারারেতে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে প্রথম তিনিই সেঞ্চুরি করেছিলেন।

কাউন্টি ক্রিকেটে হ্যাম্পশায়ারের হয়ে খেলেছেন। আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসর নেওয়ার পর ২০০৫ সালে কাউন্টিতে ওয়ার্কশায়ারের অধিনায়ক হিসেবে দুই বছরের চুক্তি করেন তিনি। ছিলেন ক্লাবটির অধিনায়কের দায়িত্বে।

তবে ২০০৭ মৌসুমে এক খেলায় অধিনায়কত্ব করার পর ওই বছরের ২৫ এপ্রিল ওয়ার্কশায়ারের অধিনায়কত্ব থেকে পদত্যাগ করেন। এরপর ২০০৭ সালে ইন্ডিয়ান ক্রিকেট লিগ (আইএসএলে) নাম লেখানোর পরই কার্যত ইতি ঘটে তার ক্যারিয়ারের।

কোচিং ক্যারিয়ারে জিম্বাবুয়ে, স্কটল্যান্ড, গুজরাট টাইটানস, কলকাতা নাইট রাইডার্সের মতো দলগুলোর সঙ্গে কাজ করেছেন তিনি। ২০১৪ সালের মে মাসে বাংলাদেশ জাতীয় দলের বোলিং কোচ হিসেবে নিয়োগ পান তিনি। ২০১৬ সাল পর্যন্ত এই দায়িত্ব পালন করেন তিনি।

মোস্তাফিজুর রহমান এবং তাসকিন আহমেদকে বিশ্বমঞ্চে নিয়ে আসার অন্যতম কারিগরও তিনি। এ ছাড়া দুই দফায় (২০০৯-১৩ এবং ২০১৬-১৮) জিম্বাবুয়ের কোচ ছিলেন তিনি।

তবে কিংবদন্তি এই অলরাউন্ডারের শেষটা সুখকর ছিল না। ২০২১ সালে ম্যাচ গড়াপেটার অভিযোগে তাকে ৮ বছরের জন্য নিষিদ্ধ করে আইসিসি। ৪৯ বছরের ক্রিকেটার পরে ক্ষমা চান এবং জানান ম্যাচ গড়াপেটার সঙ্গে কোনও দিনই তিনি যুক্ত ছিলেন না। শেষ পর্যন্ত অভিযোগের ভার মাথায় নিয়েই চলে গেলেন জিম্বাবুয়াইয়ান এই কিংবদন্তি।