বাড়ছে তেঁতুল বিচির আমদানি

Posted on September 3, 2023

অর্থ-বাণিজ্য ডেস্ক : ভারত থেকে তেঁতুলের বিচি আমদানির পরিমাণ বাড়ছে। ২০২২-২৩ অর্থবছরে প্রায় ১৭ হাজার টন তেঁতুলবিচি আমদানি করা হয়েছে, যা এর আগের ২০২১-২২ অর্থবছরের ১০ হাজার টনের চেয়ে ৭০ শতাংশ বেশি।

এনবিআরের তথ্য অনুযায়ী, ভারত, মিয়ানমার, থাইল্যান্ড ও ইন্দোনেশিয়া থেকে আমদানি হচ্ছে তেঁতুলবিচি। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি তেঁতুলবিচি আমদানি হয় প্রতিবেশী ভারত থেকে। গত অর্থবছরে মোট আমদানির ৪২ শতাংশই আসে ভারত থেকে। মিয়ানমার থেকে আসে ৩০ শতাংশ, থাইল্যান্ড থেকে ২৪ শতাংশ ও ইন্দোনেশিয়া থেকে আমদানি হয়েছে ৩ শতাংশ।

শুধু আমদানি নয় এই খাতে আমদানিকারকের সংখ্যাও নিয়মিত বাড়ছে। ২০২১-২২ অর্থবছরে আমদানি করেছেন ৭৩ জন। আর গত অর্থবছরে এই সংখ্যা ছিল ৯৩ জন।

তবে চাহিদার সঙ্গে এর দামও বাড়ছে। এখন প্রতি টন তেঁতুলবিচি আমদানি করা হয় ২৩০ থেকে ২৯০ ডলারে। কেজিপ্রতি এর মূল্য পড়ে ২২-২৪ টাকা। অপর দিকে দেশে পাইকারি বাজারে প্রতি কেজি তেঁতুলবিচি বিক্রি করা হয় ৩৪ থেকে ৩৬ টাকায় দরে।

রাজস্ব বোর্ডের তথ্য থেকে জানা যায়, দেশে আস্ত তেঁতুলবিচি আমদানি করা হয়। আমদানির পর তা কারখানায় গুঁড়া করে বিক্রি করা হয়। গত অর্থবছরে তেঁতুলবিচি আমদানি হয়েছে প্রায় ৩৯ কোটি টাকার। তবে পাইকারি বাজারে বছরে এই পণ্যের বেচাকেনা অর্ধশত কোটি টাকার বেশি বলে ব্যবসায়ীরা জানান।

সিআ্যন্ডএফ এজেন্ট অনিক সরকার বলেন, বর্তমানে মশার উপদ্রব বেড়ে যাওয়ায় ব্যাপক হারে মশা মারার কয়েল তৈরি হচ্ছে। এই মশার কয়েল তৈরিতে কাঁচামাল হিসেবে তেঁতুলের বিচির গুড়া ব্যবহার হয়। এজন্য বেশ ভালো চাহিদা রয়েছে এই বিচির। ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ করা হচ্ছে আমদানিকৃত তেঁতুলের বিচি।

এর বাইরেও শাড়িতে ব্যবহৃত রং হিসেবে তেঁতুলের বিচির গুড়া ব্যবহার হয়। এতে সুতার রং টেকসই হয়। বহুদিন ধরেই এ কাজে তেঁতুল বিচি ব্যবহার হয়ে আসছে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক শামীম শামছি বলেছেন, অ্যালোপ্যাথিক ওষুধের পাশাপাশি তেঁতুল বিচি ইউনানি, আয়ুর্বেদ, হোমিওর কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহার হয়।

তিনি বলেন, শুষ্ক চোখের চিকিৎসায় যে ড্রপ তৈরি হয়, তাতে তেঁতুল বিচি ব্যবহার করা হয়। এছাড়া পাকস্থলীর গোলযোগ, লিভার ও গল-ব্লাডারের সক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে তেঁতুল বিচি। গর্ভকালীন বমিভাব ও মাথাঘোরার সমস্যায় তেঁতুল বিচির শরবত উপকারী। তেঁতুল বিচি গরম পানিতে ফুটিয়ে এক ধরণের আঠা তৈরি করা হয়, যা ছবি আকাবুকির কাজে ব্যবহার করা হয়।