ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে যান চলাচলের জন্য উন্মুক্ত

Posted on September 3, 2023

নিজস্ব প্রতিবেদক : ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ফার্মগেট প্রান্ত পর্যন্ত অংশের উভয়দিকে আজ রোববার (৩ সেপ্টেম্বর) ভোর ৬ টা থেকে যানবাহন চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হয়েছে।

শনিবার (২ সেপ্টেম্বর) বিকেল সাড়ে ৩টায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিমানবন্দর প্রান্তের কাওলা অংশে নামফলক উন্মোচনের মাধ্যমে বহুল কাঙ্ক্ষিত দেশের প্রথম ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের উদ্বোধন করেন।

এরপর কাওলা প্রান্ত থেকে টোল দিয়ে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে ওঠেন প্রধানমন্ত্রী। প্রায় ১১ কিলোমিটার এক্সপ্রেসওয়ে ১৪ মিনিটে পার হয়ে তিনি আগারগাঁওয়ে পুরাতন বাণিজ্য মেলা মাঠে সুধী সমাবেশে পৌঁছেন। সেখানে রাখা উদ্বোধনী ফলক উন্মোচন এবং পরে দোয়া ও মোনাজাতে অংশ নেন শেখ হাসিনা।

পরে আগারগাঁও ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের একাংশের উদ্বোধন উপলক্ষ্যে আয়োজিত সুধী সমাবেশে অংশ নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য রাখেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এছাড়াও এ সময়ে তাঁর ছোট বোন শেখ রেহানা মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন।

প্রথম দফায় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ফার্মগেট পর্যন্ত উড়াল সড়ক দিয়ে যানবাহন চলাচল করতে পারবে। এই অংশের দূরত্ব ১১ দশমিক ৫ কিলোমিটার।

এ উড়ালসড়কে কাওলা, কুড়িল, মহাখালী, বনানী, তেজগাঁও ও ফার্মগেটে রয়েছে টোলপ্লাজা। উড়ালসড়কের টোল প্লাজা ও ওঠা-নামার র‌্যাম্পের নির্মাণকাজ পুরোপুরি শেষ হয়েছে। কাওলা থেকে ফার্মগেট পর্যন্ত যেতে সময় লাগবে ১২ থেকে ১৫ মিনিট।

উড়ালসড়ক দিয়ে চলাচল করতে হলে দিতে হবে টোল। এ জন্য টোল নির্ধারণ করা হয়েছে যানবাহনকে চার শ্রেণিতে ভাগ করে। এতে সর্বনিম্ন টোল ৮০ টাকা এবং সর্বোচ্চ ৪০০ টাকা।

প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, চার শ্রেণির যানবাহনের মধ্যে গাড়ি, ট্যাক্সি, জিপ, স্পোর্টস ইউটিলিটি ভেহিক্যাল, মাইক্রোবাস (১৬ সিটের কম), হালকা ট্রাকের (তিন টনের কম) টোল নির্ধারণ করা হয়েছে ৮০ টাকা, সব ধরনের বাসের (১৬ সিট বা এর বেশি) ক্ষেত্রে ১৬০ টাকা, মাঝারি ধরনের ট্রাকের (ছয় চাকা পর্যন্ত) ৩২০ টাকা, আর বড় ট্রাকের (ছয় চাকার বেশি) ক্ষেত্রে টোল নির্ধারণ করা হয়েছে ৪০০ টাকা।

বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ কর্তৃক জারিকৃত এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে ২ এবং ৩ চাকার যানবাহন এবং পথচারী চলাচল সম্পূর্ণ নিষেধ। এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের ওপর যে কোন ধরনের যানবাহন দাঁড়ানো ও যানবাহ থেকে নেমে ছবি তোলা সম্পূর্ণ নিষেধ। এক্সপ্রেসওয়ের মূল সড়কে সর্বোচ্চ গতিসীমা ঘণ্টায় ৬০ কিলোমিটার এবং ওঠা-নামার র‌্যাম্পের জন্য সর্বোচ্চ গতিসীমা থাকবে ৪০ কিলোমিটার।

বিজ্ঞপ্তিতে নির্ধারিত টোল পরিশোধ করে নিন্মবর্ণিত স্থানসমূহ হতে ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে ওঠা-নামা করার জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ করা হয়।

উত্তরা হতে দক্ষিণ অভিমুখী যানবাহন উঠার স্থান:
১. হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের দক্ষিণে কাওলা ও
২. প্রগতি সরণি এবং বিমানবন্দর সড়কের আর্মি গলফ ক্লাব।
নামার স্থান:
১. বনানী কামাল আতার্তুক অ্যাভিনিউ;
২. মহাখালী বাস টার্মিনালের সামনে ও
৩. ফার্মগেট প্রান্তে ইন্দিরা রোডের পার্শ্বে।
খ. দক্ষিণ হতে উত্তর অভিমুখী যানবাহন ওঠার স্থান
ওঠার স্থান:
১. বিজয় সরণি ওভারপাসের উত্তর এবং দক্ষিণ লেন;
২. বনানী রেলস্টেশনের সামনে।
নামার স্থান:
১. মহাখালী বাস টার্মিনালের সামনে;
২. বনানী কামাল আতার্তুক অ্যাভিনিউ’র সামনে বিমানবন্দর সড়ক;
৩. কুড়িল বিশ্বরোড ও
৪. বিমানবন্দর ৩য় টার্মিনাল এর সামনে।

প্রসঙ্গত, ২০১৪ সালের মধ্যে পুরো উড়াল সড়কের (১৯ দশমিক ৭৩ কিলোমিটার) কাজ শেষ করার পরিকল্পনা ছিল। এক যুগ পর ২০২৩ সালে বিমানবন্দর থেকে ফার্মগেট পর্যন্ত উদ্বোধন করা হলো। এখন পর্যন্ত প্রকল্পটির কাজ শেষ হয়েছে ৬০ শতাংশ। তবে ২০২৪ সালের জুনে পুরো প্রকল্পের কাজ শেষ হতে পারে আশা করছেন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।

প্রকল্পের শুরুতে ৩ হাজার ২১৬ কোটি টাকা ব্যয় ধরা হলেও কয়েক দফায় তা বেড়ে ১৩ হাজার ৮৫৮ কোটি টাকায় দাঁড়ায়। এ প্রকল্পে ইতালিয়ান-থাই ডেভেলপমেন্ট পাবলিক কোম্পানি লিমিডেট ৫১ শতাংশ, চায়না শ্যানডং ইন্টারন্যাশনাল ইকোনমিক অ্যান্ড টেকনিক্যাল কো-অপারেশন গ্রুপ ৩৪ শতাংশ এবং সিনো হাইড্রো কোম্পানি লিমিটেড ১৫ শতাংশের অংশীদার। জানা গেছে, এসব কোম্পানি আগামী ২৫ বছর টোল আদায় করবে। পরে পুরোপুরি সরকারের কাছে হস্তান্তর করবে।

আরও পড়ুন:

এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে যোগাযোগের আরেক মাইলফলক: প্রধানমন্ত্রী

ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে যে গাড়ির যত টোল

জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে সংসদ নির্বাচন: ইসি আনিছুর