নোবেলজয়ী সাংবাদিককে বিদেশি গুপ্তচর হিসেবে তালিকাভুক্ত করেছে রাশিয়া

Posted on September 2, 2023

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ২০২১ সালে শান্তিতে নোবেলজয়ী সাংবাদিক ও রুশ দৈনিক নোভায়া গেজেটার সম্পাদক দিমিত্রি মুরাতভকে বিদেশি গুপ্তচর হিসেবে তালিকাভুক্ত করেছে রাশিয়ার বিচার বিষয়ক মন্ত্রণালয়। শুক্রবার এক বিবৃতিতে মন্ত্রণালয় জানিয়েছে এ তথ্য।

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘দিমিত্রি মুরাতভ তার বিভিন্ন বিদেশি প্ল্যাটফরম ব্যবহারের মাধ্যমে রাশিয়ার অভ্যন্তরীণ ও পররাষ্ট্রনীতি সম্পর্কে বহির্বিশ্বে নেতিবাচক প্রচারণা চালাচ্ছেন। এছাড়া বিভিন্ন কন্টেন্টের মাধ্যমে গোপনে তিনি রাশিয়ার গুরুত্বপূর্ণ তথ্য বিদেশ পাচারের সঙ্গেও জড়িত।’

এই মুহূর্তে রাশিয়ায় মুরাতভসহ ৬৭৪ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান ‘বিদেশি গুপ্তচর’ তালিকায় রয়েছে বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে বার্তাসংস্থা এএফপি।

রাশিয়ায় বিদেশি গুপ্তচরদের ‘জনগণের শত্রু’ বলেও উল্লেখ করা হয়। সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়ন আমলে ‘বিদেশি গুপ্তচর’ বা ‘জনগণের শত্রু’র তালিকা করা শুরু হয়, যা ১৯৯১ সালে সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙে যাওয়ার পর ৩২ বছর পেরিয়ে গেলেও চলছে এখনও। কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠী যদি এই তালিকায় পড়ে, সেক্ষেত্রে ওই ব্যক্তি ও গোষ্ঠীকে ব্যাপক প্রশাসনিক বাধ্যবাধকতা মেনে চলতে হয় এবং অর্থ আয়-ব্যয় সম্পর্কিত তথ্য সবসময় উন্মুক্ত রাখতে হয়।

এছাড়া এই তালিকার ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানগুলোকে বিভিন্ন ট্যাগ দেওয়া হয়। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কোনো কন্টেন্ট শেয়ার করতে হলে নজরদারির আওতায় থাকা বিদেশি গুপ্তচরদের অবশ্যই সেই ট্যাগ যুক্ত করতে হবে।

যদি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট করা কোনো বক্তব্য বা কন্টেন্টে ‘বিদেশি গুপ্তচর’ তালিকাভুক্ত কোনো ব্যক্তি মন্ত্রণালয় ধেকে দেওয়া ট্যাগ ব্যবহার না করেন এবং কোনো নেটিজেন যদি সেই বক্তব্য-ছবি-কন্টেন্ট শেয়ার করেন— সেক্ষেত্রে উভয়কেই মোটা অঙ্কের জরিমানা গুণতে হবে।

দিমিত্রি মুরাতভের পত্রিকা নোভায়া গেজেটাকে ‘অগ্রহণযোগ্য সংস্থা’ ট্যাগ দেওয়া হয়েছে।

আন্তর্জাতিক রাজনীতি বিশ্লেষকদের একাংশের মতে, কোনো ব্যক্তি বা সংস্থাকে ‘বিদেশি গুপ্তচর’ বা জনগণের শত্রু’ হিসেবে ঘোষণা করার ব্যাপারটি দৃশ্যত বিচার বিভাগীয় মন্ত্রণালয়ের এক্তিয়ারে থাকলেও এক্ষেত্রে আড়াল থেকে কলকাঠি নাড়ে রাশিয়ার প্রেসিডেন্টের কার্যালয় ক্রেমলিন।

২০২২ সালে ইউক্রেনে বিশেষ সামরিক অভিযান শুরুর পর থেকে সমালোচক ও সরকারবিরোধীদের নানাভাবে হয়রানির অভিযোগ উঠেছে মস্কোর বিরুদ্ধে। প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ও তার নেতৃত্বাধীন সরকারের সমালোচক হিসেবে রাশিয়ায় যারা পরিচিত ছিলেন, তাদের একটি বড় অংশই হয় কারাগারে— নয়তো পালিয়ে রাশিয়ার বাইরে চলে গেছেন। যারা রাশিয়ায় রয়েছেন, তারাও সরকারের বিরুদ্ধে তেমন উচ্চকণ্ঠ হচ্ছেন না।

সরকারপন্থী নন— এমন রুশ সাংবাদিকদের অধিকাংশই বর্তমানে রাশিয়ার বাইরে আছেন। মুষ্টিমেয় যে কয়েকজন ভিন্নমতাবলম্বী সাংবাদিক ও সম্পাদক এখনও দেশে রয়েছেন, মুরাতভ তাদের মধ্যে অন্যতম।

কর্পোরেট সংবাদ/এএইচ