প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দুই ঘণ্টা ছিলাম, সিন্ডিকেটের বিষয়ে কথা হয়নি: বাণিজ্যমন্ত্রী

Posted on August 30, 2023

অর্থ-বাণিজ্য ডেস্ক : মঙ্গলবার (২৯ আগস্ট) প্রধানমন্ত্রীর সংবাদ সম্মেলনের পর তার সঙ্গে দুই ঘণ্টা ছিলাম। কিন্তু সিন্ডিকেট ভাঙার বিষয়ে কোনো কথা হয়নি বলে জানিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি।

বুধবার (৩০ আগস্ট) দুপুর ১২টায় রাজধানীর একটি হোটেলে সফররত ইউএস-বাংলাদেশ বিজনেস কাউন্সিলের এক্সিকিউটিভ বিজনেস কাউন্সিলের সঙ্গে সভা শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।

গতকাল মঙ্গলবার সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন সিন্ডিকেট নিয়ে বাণিজ্যমন্ত্রীকে ধরবেন এ বিষয়ে আপনার বক্তব্য কী? সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, এই কথা তো আর আমি বলিনি, বলেছেন প্রধানমন্ত্রী। এ ব্যাপারে আমি কী বলবো, উনি কী মিন করে বলেছেন সেটা আমি কী করে বলবো। সেসময় কী সিচুয়েশনে এ কথা বলেছেন।

মঙ্গলবার (২৯ আগস্ট) বাজারে সিন্ডিকেট আছে কিন্তু আমরা হাত দিতে পারি না, বাণিজ্যমন্ত্রীর এমন বক্তব্য নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, তিনি কেন এ কথা বলেছেন, তাকে আমি ধরব।

টিপু মুনশি বলেন, গতকাল সংবাদ সম্মেলনের পর প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দুই ঘণ্টা ছিলাম, আমেরিকান চেম্বার্সের প্রতিনিধিরাও‌ ছিলেন। কিন্তু এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আমার কোনো কথা হয়নি, উনিও জিজ্ঞেস করেননি।

সিন্ডিকেটের বিষয়ে হাত দেয়া যাবে না বক্তব্য প্রসঙ্গে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, বাজারে সিন্ডিকেট আছে, সেটি ভাঙা হবে এ ধরনের কথা আমি কখনো বলিনি। বলেছি, আমাদের যখন জিসিনপত্রের দাম বাড়ে তখন আমরা চেষ্টা করি, ন্যায্য দামে বিক্রি হওয়া উচিত। সেটা আমাদের ভোক্তা অধিকার দিয়ে চেষ্টা করি। কখনো কখনো আমাদের জনবল কম হওয়ার কারণে কিছুটা শ্লথ হয়। এটা নিয়ে নানা সময়ে কথা বলেছি।

তিনি বলেন, আমি সংসদে বলেছি যে, কিছু কিছু ব্যবসায়ী সুবিধা নেওয়ার চেষ্টা করে। তাদের বিরুদ্ধে জেল-জুলুম ব্যবস্থা নিলে মানুষের দুর্ভোগ আরো বাড়বে। আমরা আলোচনার মাধ্যমে বাজার নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করি। ডিমের দাম বাড়ার সময় বলেছিলাম যে, প্রয়োজনে সাপ্লাই বাড়াতে আমদানির ব্যবস্থা করবো।

শ্রীলঙ্কা মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে সফল হলেও বাংলাদেশ না পারার কারণ সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘শ্রীলঙ্কা আর আমাদের দেশের অবস্থা এক না। শ্রীলঙ্কার আয়ের মূল উৎস তাদের পর্যটন। সেটা চাঙ্গা করেছে। পাশাপাশি শ্রীলঙ্কা ছোট দেশ। আমাদের তো বিশাল দেশ। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, কৃচ্ছ্রতা সাধন করতে হবে।

তিনি বলেন, লন্ডনেও ৩টার বেশি টমেটো কেনা যাবে না। জার্মানে দোকানে তেল নেই। বৈশ্বিক মন্ধার মধ্যেও আমাদের চেষ্টা চলছে।

বাজারে কি তাহলে সিন্ডিকেট নেই? সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নে টিপু মুনশি বলেন, সিন্ডিকেটের একটা বিশাল অর্থ। ডিম তো গ্রামে লাখ লাখ মানুষও উৎপাদন করছে। এতো মানুষ মিলে সিন্ডিকেট করে, সে কথা বলবো কিভাবে? তবে সুযোগ যে তারা নেয় না, তা বলবো না।

তিনি বলেন, আমি সেদিনও বলেছি, ডিমের কী দাম হওয়া উচিত সেটা বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ঠিক করবে না। মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্তণালয় দাম ঠিক করে দিয়েছে এরকম হওয়া উচিত। আমরা চেষ্টা করছি তারা যে দামটা নির্ধারণ করে দিয়েছে সেটা যেন বাজারে থাকে সে রকম চেষ্টা করছি।

এর আগে, মঙ্গলবার (২৯ আগস্ট) বিকেলে গণভবনে দক্ষিণ আফ্রিকায় অনুষ্ঠিত ব্রিকস সম্মেলন নিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এক সাংবাদিক বলেন, মন্ত্রীরাও সিন্ডিকেটের কথা স্বীকার করেন; কিন্তু তারা তাদের প্রতিরোধ করতে পারেন না। বলেন, ওইখানে হাত দেয়া যাবে না, বিপদ আছে। এ সময় প্রধানমন্ত্রী জানতে চান, কোন মন্ত্রী এমন কথা বলেছেন। তখন জানানো হয়, খোদ বাণিজ্যমন্ত্রী নিজে বলেছেন, তাদের ওইখানে হাত দেয়া যাবে না।’

তখন প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ঠিক আছে, বাণিজ্যমন্ত্রীকে আমি ধরতেছি।’

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘আমাদের কয়েকটি করপোরেট হাউস আছে। তারা যখন দাম বাড়িয়ে দেয়, আমরা তখন বিদেশ থেকে আমদানি করি অথবা বিকল্প ব্যবস্থা করি, যাতে দাম কমে যায়। আমরা ব্যবস্থা নেই। কাজেই সিন্ডিকেট থাকলে তা ভাঙা যাবে না, এটি তো কোনো কথা হতে পারে না।’