মোঃ বাদল হোসেন, পটুয়াখালীপ্রতিনিধি: পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জ উপজেলায় গড়ে উঠছে ব্যাঙের ছাতার মতো সমবায় সমিতি। উপজেলার ৬টি ইউনিয়নে ইতিমধ্যে রয়েছে ১৫৯টি সমবায় সমিতি। ২ নং মির্জাগঞ্জ ইউনিয়ানে রয়েছে প্রায় ২০ থেকে ২৫টি সমিতি। এ সকল সমিতি গ্রামের স্বল্প আয়ের ও খেটে খাওয়া মানুষদের ঠকিয়ে আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ হয়ে যাচ্ছে কতিপয় অসাধু ব্যক্তি। ২নং মির্জাগঞ্জ ইউনিয়নে একটি সমিতির সামান্য একজন মাঠকর্মী থেকে কয়েক বছরের মাথায় আর একটি সমিতির সভাপতি হয়ে বিভিন্ন অবৈধ উপায়ে কোটি কোটি টাকার মালিক হয়ে গেলেন মোঃ আল আমিন।
মির্জাগঞ্জ ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী সমবায় সমিতির লিমিটেড নামে একটি সমিতি খুলে সদস্যদের টাকা আত্মসাৎ করে এবং লোন দেওয়ার নামে তাদের কাছ থেকে সমিতির আইন বর্হিভূত সুদ গ্রহণসহ জালিয়াতির আশ্রয় নিয়ে সর্বশান্ত করে দিচ্ছে তাদের। এই সমবায় সমিতি পরিচালনার ক্ষেত্রে তিনি কোন নিয়মনীতি মানছেন না। নিয়মবহির্ভূত সমতির সদস্য করেই তাদের দেয়া হচ্ছে বিভিন্ন বড় অংকের লোন। লোনগ্রহীতাদের কাছ থেকে গ্রান্টার হিসেবে নেয়া হচ্ছে ব্ল্যাঙ্ক চেক ও স্ট্যাম্প। সদস্যরা নিয়মিত লোনের সুদ ও আসল টাকা পরিশোধ করলেও তাদেরকে ফেরত দেয়া হয়না তাদের ব্ল্যাঙ্ক চেক ও স্ট্যাম্প। এই ব্ল্যাঙ্ক চেক ও স্ট্যাম্প দিয়ে আল আমিন তার বিভিন্ন আত্মীয় ও পরিচিত লোকদের দিয়ে হয়রানিমূলক মামলা দিয়ে সদস্যদের কাছ থেকে হাতিয়ে নিচ্ছেন জমি ও বড় অংকের টাকা বলে অভিযোগ করেছেন সমিতির একাধিক ভূক্তভোগী সদস্য।
আল আমিনের মির্জাগঞ্জে রয়েছে তার বিলাশবহুল বাড়ী ও গাড়ীসহ নামে বেনামে অঢেল সম্পদ। তার শশুড়ের বাড়ীতেও প্রায় ১৫ লক্ষ টাকাদিয়ে ঘর নির্মান করে দিয়েছে। তার স্ত্রীর বড় ভাই ইব্রাহীমের নামে ৫ কাঠা জমি ক্রয় করে দিয়েছেন যার বাজার মূল্য প্রায় ৬ লক্ষ টাকা বলেও জানান ভূক্তভোগিরা।
ভূক্তভোগি বাদল সিকদার জানান, আমার টাকার প্রয়োজন হওয়ায় সমিতির কাছ থেকে ছয় লক্ষ টাকা লোন নিয়েছি। এই লোন নিতে সমিতির সভাপতি আল আমিন আমার কাছ থেকে স্বাক্ষরিত তিনটি ব্ল্যাঙ্ক চেক ও তিনটি স্ট্যাপ গচ্ছতি রাখে এবং বলে লোন পরিশোধ হলে চেক এবং স্ট্যাপ দিয়ে দিবে। আমি ছয় লক্ষ টাকার প্রতি মাসে বার হাজার টাকা করে সুদ দিয়ে এবং ১৪ মাসে লোনের টাকা পরিশোধ করে দেই। লোন পরিশোধ হওয়ার পরে সমিতির কাছে গচ্ছিত রাখা আমার ব্ল্যাঙ্ক চেক ও স্ট্যাম্প দেব দেব বলে ফেরত দেয়নি আল আমিন। পরে আমার কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেওয়ার জন্য আল আমিন তার ভায়রা বেল্লালকে দিয়ে আমার বিরুদ্ধে চেক ডিজঅনার করে বিশ লক্ষ টাকার মামলা দিয়ে হয়রানি করছে।
ভূক্তভোগি নাসির জানান, সমিতির কাছ থেকে ৩ লক্ষ ৭৫ হাজার টাকা লোন গ্রহণ করেন তিনি এবং গ্রান্টার হিসেবে তার স্বাক্ষর করা তিনিটি ব্ল্যাঙ্ক স্ট্যাপ ও তার ছেলে কাওসারের স্বাক্ষরিত জনতা ব্যাংকের তিনটি ব্ল্যাঙ্ক চেক দেই সমিতির সভাপতি আল আমিনের কাছে। লোন পারিশোধের কার্যক্রম চলমান অবস্থায় তার ছেলের সাথে আল আমিনের দ্বন্দ হওয়ায়, আল আমিন তার শাশুড়ীকে দিয়ে সমিতিতে তার ঐ গচ্ছিত স্ট্যাপ দিয়ে জমি বিক্রয়ের টাকা নেওয়ার কথা বলে একটি মামলা দায়ের করান। তার ছেলের স্বাক্ষরিত কাওসারের জনতা ব্যাংকের তিনটি চেক ডিজঅনার করে মামলা করার পায়তারা চালাচ্ছে।
এবিষয়ে অভিযুক্ত আল আমিনের সাথে তার মুঠোফোনে কথা বললে, সে জানায় তার বিরুদ্ধে এ সব মিথ্যা অভিযোগ। তারা সমিতির টাকা আত্মসাৎকরেছে তাই মামলা দেয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে পটুয়াখালী জেলা সমবায় কর্মকর্তা পঙ্কজ কুমার চন্দ এর সাথে কথা বললে, সে জানায় প্রতিটি সমিতিরই নিয়ম কানুন আছে। কোন সমিতি যদি অনিয়ম করে তা হলে তদন্তপূর্বক তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
© ২০২৩ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত | কর্পোরেট সংবাদ সম্পাদক - মোঃ মিজানুর রহমান । উপদেষ্টা সম্পাদক- জেসমিন আক্তার, এফসিএস ই-মেইলঃ corporatesangbad@gmail.com । ফোনঃ ০২২২-৩৩৫৪১২৫ । মোবাইলঃ ০১৭১১০৭৬৮১৫ অফিসঃ ৫৫/বি, নোয়াখালী টাওয়ার, ১১ তলা, সুইট ১১-এফ, পুরানা পল্টন, ঢাকা ১০০০ |
সমবায় সমিতির সভাপতির বিরুদ্ধে অনিয়ম ও প্রতারণার অভিযোগ https://corporatesangbad.com/42935/ |