হিথ স্ট্রিকের মৃত্যু নিয়ে ধোঁয়াশা

Posted on August 23, 2023

স্পোর্টস ডেস্ক : বুধবার (২৩ আগস্ট) খবর পাওয়া যায় বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক বোলিং কোচ ও জিম্বাবুয়ের সাবেক অধিনায়ক হিথ স্ট্রিক মারা গেছেন। মরণঘাতি ক্যানসারের কাছে হার মেনে মাত্র ৪৯ বছর বয়সে তার মৃত্যু হয় বলে জানায় ক্রিকবাজ, দ্য গার্ডিয়ান।

তবে কিছুক্ষণ পরেই স্ট্রিকের জাতীয় দলের সাবেক সতীর্থ হেনরি ওলোঙ্গা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে জানান, তিনি বেঁচে আছেন!

সামাজিক যোগাযোগামাধ্যম এক্সে (সাবেক টুইটার) একটি পোস্টে ওলোঙ্গা জানান, স্ট্রিকের মৃত্যুর খবরটি গুজব। অথচ এই ওলোঙ্গাই তার প্রথম পোস্টে জিম্বাবুয়ের সাবেক অধিনায়কের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তবে পরবর্তীতে পোস্টটি মুছে ফেলেন। নতুন পোস্টে ওলোঙ্গা লিখেন, আমি নিশ্চিত করতে পারি যে হিথ স্ট্রিকের মৃত্যুর খবরটি গুজব। তার কাছ থেকেই আমি শুনেছি। থার্ড আম্পায়ার তাকে ফেরত ডেকেছেন। তিনি ভালোবভাবেই বেঁচে আছেন।

হিথ স্ট্রিকের সঙ্গে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম হোয়্যাটসঅ্যাপের কথোপকথনের স্ক্রিনশট পোস্ট করেছেন ওলোঙ্গা। যেখানে মজার ছলে হিথ লিখেছেন, 'নিঃসন্দেহে বেঁচে রয়েছি। অবিলম্বে এই রান আউট ফিরিয়ে নাও বন্ধু।' পরে তার মেয়েও বেঁচে থাকার খবর নিশ্চিত করেছেন।

এরই মধ্যে পুরনো টুইট মুছে ফেলেছেন হেনরি ওলোঙ্গা। আর নতুন টুইটও বারবার এডিট করেছেন সাবেক এই জিম্বাবুয়ের ক্রিকেটার। এরই মধ্যে জিম্বাবুয়ের ক্রিকেট বোর্ডও হিথ স্ট্রিকের মৃত্যুর খবরটি গুজব বলে জানিয়েছে।

গত মে মাসে যখন জানা যায়, লিভার ও কোলন ক্যানসারের সঙ্গে লড়ছেন স্ট্রিক। ওই সময় জিম্বাবুয়ের ক্রীড়ামন্ত্রী সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লিখেছিলেন, ‘হিথ স্ট্রিক তার শেষ পর্যায়ে রয়েছেন। তার পরিবার যুক্তরাষ্ট্র থেকে দক্ষিণ আফ্রিকার পথে। অলৌকিক কোনো ঘটনাই তাকে বাঁচাতে পারবে। প্রার্থনা করুন।’

২০১৪ থেকে ২০১৬—এই দুই বছর বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের বোলিং কোচের দায়িত্ব পালন করেন স্ট্রিক।

স্ট্রিক জিম্বাবুয়ের হয়ে ৬৫টি টেস্ট এবং ১৮৯টি একদিনের আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলেছেন। এ ছাড়া জিম্বাবুয়ের প্রথম ও একমাত্র বোলার হিসেবে টেস্ট ক্রিকেটে ১০০ উইকেট নেন স্ট্রিক। ২০০৫ সালে ক্রিকেট থেকে অবসরে যান তিনি। খেলা ছাড়ার পর যোগ দেন কোচিংয়ে। ব্যাট হাতেও দারুণ অবদান রেখেছেন স্ট্রিক। টেস্টে এক হাজার ৯৯০ ও ওয়ানডেতে ২ হাজার ৯৪৩ রান করেছেন তিনি। সাদা পোশাকে হারারেতে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে প্রথম তিনিই সেঞ্চুরি করেছিলেন।

কাউন্টি ক্রিকেটে হ্যাম্পশায়ারের হয়ে খেলেছেন। আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসর নেওয়ার পর ২০০৫ সালে কাউন্টিতে ওয়ার্কশায়ারের অধিনায়ক হিসেবে দুই বছরের চুক্তি করেন তিনি। ছিলেন ক্লাবটির অধিনায়কের দায়িত্বে।

তবে ২০০৭ মৌসুমে এক খেলায় অধিনায়কত্ব করার পর ওই বছরের ২৫ এপ্রিল ওয়ার্কশায়ারের অধিনায়কত্ব থেকে পদত্যাগ করেন। এরপর ২০০৭ সালে ইন্ডিয়ান ক্রিকেট লিগ (আইএসএলে) নাম লেখানোর পরই কার্যত ইতি ঘটে তার ক্যারিয়ারের।

কোচিং ক্যারিয়ারে জিম্বাবুয়ে, স্কটল্যান্ড, গুজরাট টাইটানস, কলকাতা নাইট রাইডার্সের মতো দলগুলোর সঙ্গে কাজ করেছেন তিনি। ২০১৪ সালের মে মাসে বাংলাদেশ জাতীয় দলের বোলিং কোচ হিসেবে নিয়োগ পান তিনি। ২০১৬ সাল পর্যন্ত এই দায়িত্ব পালন করেন তিনি।

মোস্তাফিজুর রহমান এবং তাসকিন আহমেদকে বিশ্বমঞ্চে নিয়ে আসার অন্যতম কারিগরও তিনি। এ ছাড়া দুই দফায় (২০০৯-১৩ এবং ২০১৬-১৮) জিম্বাবুয়ের কোচ ছিলেন তিনি।

তবে কিংবদন্তি এই অলরাউন্ডারের শেষটা সুখকর ছিল না। ২০২১ সালে ম্যাচ গড়াপেটার অভিযোগে তাকে ৮ বছরের জন্য নিষিদ্ধ করে আইসিসি। শেষ পর্যন্ত অভিযোগের ভার মাথায় নিয়েই চলে গেলেন জিম্বাবুয়াইয়ান এই কিংবদন্তি।

২০১৪ সালে বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের বোলিং কোচের দায়িত্ব পান স্ট্রিক। এ ছাড়া কোচিং ক্যারিয়ারে জিম্বাবুয়ে, স্কটল্যান্ড, গুজরাট লায়নস ও কলকাতা নাইট রাইডার্সের হয়ে কাজ করেছেন সাবেক এই ক্রিকেটার।