ভারী বৃষ্টিপাতে হিমাচলে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৫০

Posted on August 16, 2023

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ভারতের হিমাচল প্রদেশে ভারী বৃষ্টি এবং ভূমিধসের ঘটনায় এখন পর্যন্ত প্রায় ৫০ জনের মৃত্যু হয়েছে। ধ্বংসস্তূপের নিচে এখনো অনেকেই আটকা পড়ে আছেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। স্থানীয় সময় রোববার রাত থেকে শুরু হওয়া এই প্রকৃতিক দুর্যোগে গৃহহীন হয়ে পড়েছেন আরও কয়েক হাজার মানুষ।

ইউনেস্কো ঘোষিত ‘বিশ্ব ঐতিহ্য ক্ষেত্র’ (ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট) শিমলা-কালকা রেলপথের একাংশ প্রবল পানির স্রোতে ভেসে গেছে। বৃষ্টির তাণ্ডব থেকে রেহাই পায়নি হিমালয়ের প্রতিবেশী রাজ্য উত্তরাখণ্ড। সেখানে ভূমিধসের কারণে স্থগিত করা হয়েছে শ্রাবণ মাসের চারধাম যাত্রা। রোববার রাতে সোলান জেলায় তীব্র বৃষ্টিতে ১১ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়। অপরদিকে, শিমলা শহরের একটি শিবমন্দির ধসে পড়ার ঘটনায় এখন পর্যন্ত অন্তত ১৫ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে স্থানীয় সূত্র নিশ্চিত করেছে। ধারণা করা হচ্ছে, ধ্বংসস্তুপের নিচে এখনও চাপা রয়েছেন অনেকেই। ফলে মৃতের সংখ্যা বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছে প্রশাসন।

এছাড়া হিমাচলের মান্ডি জেলার সম্ভল গ্রামে সোমবার অন্তত ১০ জনের মৃত্যু হয়েছে। হিমাচল প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী সুখবিন্দর সিং সুখু জানিয়েছেন, ভয়াবহ প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকালিয়ায় সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে সরকার। কয়েকদিন ধরেই হিমাচল এবং উত্তরাখণ্ডে ভারী বৃষ্টি হচ্ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় বৃষ্টির পরিমাণ আরও বেড়েছে। পাহাড়ি নদীগুলোর পানি বেড়ে গেছে। হিমাচলে খরস্রোতা বিপাশা নদীর পানি বিপৎসীমার কাছাকাছি পৌঁছে গেছে। প্রায়ই কোথাও না কোথাও ধস নামছে। ধসের কারণে রাস্তা আটকে বিপদে পড়েছেন তীর্থযাত্রী এবং স্থানীয় বাসিন্দারা। পশ্চিম হিমালয়ের কোলে অবস্থিত দুই রাজ্যের সরকার প্রাণহানির ঝুঁকি এড়াতে প্রায় ৭০০টি রাস্তা আপাতত বন্ধ করে দিয়েছে। কোথাও মেরামতের কাজ চলছে, কোথাও বৃষ্টির কারণে তা-ও সম্ভব হচ্ছে না। শুধু শিমলাতেই ৫৯টি গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা বন্ধ হয়ে আছে।

শিমলা এবং চণ্ডীগড়ের সংযোগকারী শিমলা-কালকা জাতীয় সড়কে ধসের কারণে গত দু’সপ্তাহ ধরে যান চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। ধস নেমেছে ঋষিকেশ-চম্বা জাতীয় সড়কেও। অতিবর্ষণে হিমাচলে ৭ হাজার কোটি টাকার বেশি ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। হিমাচলে বর্ষার মৌসুম শুরুর পর থেকে এখন পর্যন্ত প্রায় ২৫৭ জন প্রাণ হারিয়েছেন রাজ্যের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, সোমবার বিকাল পর্যন্ত ৪১ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। আরও ১৩ জন এখনও নিখোঁজ রয়েছেন।

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার এক কর্মকর্তা বলেন, যেহেতু অনেকটা সময় পেরিয়ে গেছে তাই তাদের জীবিত উদ্ধারের আশা আমরা হারিয়ে ফেলছি। এর আগে দুটি পৃথক ঘটনায় ১৬ জনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করা হয়। সোমবার দুপুররাত দেড়টার দিকে রাজ্যের সোলন জেলায় হঠাৎ বজ্রসহ ভারী বৃষ্টির কারণে সাতজনের মৃত্যু হয়। বিভিন্ন স্থানে মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করে টুইট করেন হিমাচল প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী সুখবিন্দর সিং সুখু। তিনি প্রাকৃতিক দুর্যোগে মৃত্যুর ঘটনায় গভীর শোক প্রকাশ করেছেন। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে সব ধরনের সহায়তা দেওয়া আশ্বাস দিয়েছেন তিনি।