আফসানা ফেরদৌস কেকা : ১০০ টি অর্থনৈতিক অঞ্চল বাস্তবায়ন এর চেলেঞ্জ হাতে নিয়ে কাজ করছে জননেত্রী শেখ হাসিনার সরকার। তারই একটি বিশাল অংশ হিসাবে কাজ চলছে এখন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্পনগরে।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্পনগর মিরসরাই, চট্টগ্রাম জেলার সীতাকুণ্ড এবং ফেনী জেলার সোনাগাজী উপজেলা সংলগ্ন এলাকায় ৩৩ হাজার একর জমিতে গড়ে তোলার পরিকল্পনা নিয়ে এগুচ্ছে। ভবিষ্যতে এই শহরটি নোয়াখালী জেলার কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা এবং চট্টগ্রাম জেলার সন্দ্বীপ উপজেলা পর্যন্ত প্রসারিত করা হতে পারে।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্পনগরের অবস্থান ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের পাশে হওয়ায়, সামুদ্রিক অর্থনৈতিক অঞ্চল হিসাবে পরিগনিত হতে চলেছে। জেলা ও বিভাগীয় শহরে জনসংখ্যা বাড়লে কর্মসংস্থান ও অন্যান্য সার্বজনীন সুবিধার পাশাপাশি আবাসন, পরিবহন, জ্বালানি ও অন্যান্য অবকাঠামোগত ক্ষেত্রে ক্রমবর্ধমান চাহিদা পূরণে বাংলাদেশ ভবিষ্যতে চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে পারে।
সেই কথা মাথায় রেখেই বর্তমান সরকার ভবিষ্যতের সমৃদ্ধ বাংলাদেশ দেখতে একটি অত্যাধুনিক শিল্পনগর গড়ে রেখে যেতে চান, যা অর্থনীতির প্রবৃদ্ধিকে ত্বরান্বিত করবে এবং উন্নয়নের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাবে দেশকে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্প নগর জীবন যাত্রার সার্বিক উন্নয়নের অন্যান্য উপায় ব্যবহার করে অর্থনৈতিক, সামাজিক এবং পরিবেশগত দিকগুলোর সাথে মিলে বর্তমান এবং ভবিষ্যত প্রজন্মের চাহিদা পূরণ করবে।
অত্যাধুনিক শিল্পনগরগুলোতে ইন্টারনেট অফ থিংস (আইওটি) প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে শহরের অবকাঠামো পর্যবেক্ষণ যেমন, ট্র্যাফিক, পার্কিং, পানি এমনকি বায়ু দূষণরোধ সব ই থাকবে এই প্রকল্পে। শুধু অর্থনৈতিক অঞ্চলের চিন্তা না করে এই বিশাল প্রকল্প অঞ্চলটিকে এমন এক পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়েছে যা বাংলাদেশের সমগ্র অর্থনীতির পরিবর্তন আনবে। পাশাপাশি ব্যবসা এবং নাগরিকদের সামগ্রিক জীবন মানকে উন্মুক্ত করবে। এই শিল্পনগরটি বাংলাদেশের তৃতীয় বৃহত্তম এবং প্রথম পরিকল্পিত অত্যাধুনিক শহর হবে।বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্পনগরকে স্বয়ংসম্পূর্ণ শিল্পনগরীতে রূপান্তর করতে সমুদ্রবন্দর, রেল ও সড়ক যোগাযোগ, বিদ্যুৎকেন্দ্র, মেরিন ড্রাইভ, ট্যুরিজম পার্ক, হাসপাতাল, স্কুল, বিশ্ববিদ্যালয় এবং আবাসিক অঞ্চলের মতো সামাজিক অবকাঠামো থাকবে।
দেশের প্রথম পরিকল্পিত এই শহর বিশ্বমানের ব্যবসা ও শিল্প কেন্দ্র প্রতিষ্ঠার পথ প্রশস্ত করবে। আগামী ১৫ বছরের মধ্যে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্পনগর দেড় মিলিয়ন মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করবে এবং এখান থেকে ২৫ বিলিয়ন ডলারের রপ্তানি হবে।দেশিয় বাজার কে যেমন প্রসারিত করবে তেমন রপ্তানির বাজারের জন্য উৎপাদন শুরু করতে শহরটি বিশ্বজুড়ে শীর্ষস্থানীয় সংস্থাগুলিকে আকৃষ্ট করতে শুরু করেছে ।
বিজনেস আইকন খ্যাত স্থানীয় সংস্থাগুলিও এ শহরে তাদের কার্যক্রম শুরু করতে কারখানা স্থাপন শুরু করেছে।বিভিন্ন ধরণের শিল্প, যেমন পোশাক এবং তাদের সহায়ক শিল্প, কৃষি পণ্য এবং কৃষি প্রক্রিয়াজাতকরণ পণ্য, ইন্টিগ্রেটেড টেক্সটাইল, চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য, শিপবিল্ডিং, মোটরবাইক, খাদ্য ও পানীয়, পেইন্ট এবং রাসায়নিক, কাগজ, প্লাস্টিক, ইঞ্জিনিয়ারিং, ওষুধ, বিদ্যুৎ এবং সোলার পার্ক শিল্প নগরীতে স্থাপন করা হবে।এতে প্রস্তাবিত বিনিয়োগ প্রায় ২২.৫ বিলিয়ন ডলার।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্পনগরের অবস্থান ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের পাশে হওয়ায় এবং সামুদ্রিক অর্থনৈতিক অঞ্চল হওয়ায় এটি বেজা’কে বড় পরিসরে স্বপ্ন দেখতে অনুপ্রাণিত করেছে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্পনগর প্রকৃতি, শক্তি ব্যবস্থা, এবং বর্জ্য ব্যবস্থাপনার সাথে মিলে দেশের প্রথম “সবুজ” বা ইকো-শিল্প নগরী হতে চলেছে। এখানে থাকবে শ্রমিক বান্ধব আবাসন, তাদের শিশুদের জন্য পার্ক। থাকবে মেরিন ড্রাইভ ও বিদ্যুৎ কেন্দ্র। এখানে অতিমধ্যে ভারতের এশিয়ান পেইন্ট কারখানা স্থাপণ করেছে, শিল্প জোন নিয়েছে জাপান, কোরিয়া, চীন, আগ্রহ দেখাচ্ছে সৌদি আরব।
এই শিল্প নগর পুরোদমে কাজ শুরু করলেই দেড় মিলিয়ন মানুষের কর্মসংস্থান পাবে। দেশের বেকারত্ব কমাতে যার অবদান থাকবে অনস্বীকার্য ভাবে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সোনার বাংলা হবে উন্নত অর্থনীতির একটি সমৃদ্ধ দেশ।
আফসানা ফেরদৌস কেকা, (ব্যাংকার ও সদস্য, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ মহিলা বিষয়ক উপ কমিটি)।
© ২০২৩ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত | কর্পোরেট সংবাদ সম্পাদক - মোঃ মিজানুর রহমান । উপদেষ্টা সম্পাদক- জেসমিন আক্তার, এফসিএস ই-মেইলঃ corporatesangbad@gmail.com । ফোনঃ ০২২২-৩৩৫৪১২৫ । মোবাইলঃ ০১৭১১০৭৬৮১৫ অফিসঃ ৫৫/বি, নোয়াখালী টাওয়ার, ১১ তলা, সুইট ১১-এফ, পুরানা পল্টন, ঢাকা ১০০০ |
অপার সম্ভাবনায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্পনগর https://corporatesangbad.com/412663/ |