নিজস্ব প্রতিবেদক : আগামী ৭ অক্টোবর আনুষ্ঠানিকভাবে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনাল উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
মঙ্গলবার (৮ আগস্ট) টার্মিনালের নির্মাণ কাজের অগ্রগতি ও উদ্বোধন বিষয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মোহাম্মাদ মফিদুর রহমান।
তিনি বলেন, এখন পর্যন্ত ৮২ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। আমাদের লক্ষ্য ছিল সফট ওপেনিংয়ের আগে ৯০ শতাংশ কাজ শেষ করা। সে লক্ষ্যে আমরা কাজ করছি। প্রতি সপ্তাহে ১১ থেকে ১২ হাজার কর্মী দিনরাত কাজ করছেন। টার্মিনালের ফিচারগুলো অত্যাধুনিক। এতে দৃষ্টিনন্দন সেলিং থাকবে। যাত্রীরা এসব দেখে গর্ববোধ করতে পারবে।
তিনি জানান, উদ্বোধনের পর বাকি কাজ সম্পন্ন শেষে থার্ড টার্মিনালের কার্যক্রম শুরু হবে। ২০২৪ এর শেষের দিকেই যাত্রীরা থার্ড টার্মিনাল ব্যবহার করতে পারবেন। এটি চালুর পর শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর একযোগে ২ কোটি ৪০ লাখ যাত্রীকে সেবা দেয়ার সক্ষমতা অর্জন করবে।
বেবিচক চেয়ারম্যান আরো বলেন, দেশের প্রথম এই আন্তর্জাতিক মানের এই টার্মিনালের মাধ্যমে অ্যাভিয়েশন খাতে নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হবে। দক্ষিণ এশিয়ার এভিয়েশন হাবে পরিণত হবে বাংলাদেশ। ১১ হাজার শ্রমিকের হাতে গড়ে উঠেছে এই স্বপ্ন।
বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (সিএএবি)-এর তথ্য অনুযায়ী, ৭ অক্টোবর উদ্বোধনের সময় ২৬টি বোর্ডিং ব্রিজের মধ্যে ১২টি চালু থাকবে।
সিএএবি আরো জানায়, এটি সম্পূর্ণরূপে চালু হলে- নতুন টার্মিনাল, ৫ লাখ ৪২ হাজার বর্গ মিটার এলাকা জুড়ে, বার্ষিক ১২ মিলিয়নেরও বেশি যাত্রীকে পরিষেবা দিতে সক্ষম হবে।
নির্মাণ শেষ পর্যায়ে থাকায় তৃতীয় টার্মিনাল ভবনের দৃষ্টিনন্দন স্থাপত্য এখন দৃশ্যমান। এখন অভ্যন্তরীণ সজ্জা ও বিভিন্ন ধরনের যন্ত্রপাতি স্থাপনের কাজ চলছে।
এর আগে, ২০১৯ সালের ৩০ ডিসেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঢাকা বিমানবন্দরের যাত্রী ও কার্গো হ্যান্ডলিং সক্ষমতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে টার্মিনালের নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করেন।
২১,৩০০ কোটি টাকা ব্যয়ে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। বাংলাদেশ এতে ৫ হাজার কোটি টাকা দেবে। প্রকল্পটির বাকি তহবিল দেবে জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি (জাইকা)।
বর্তমানে, ৩৩টি এয়ারলাইন্সের ১২০-১৩০টি বিমান হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরের টার্মিনাল ১ ও ২ থেকে উড্ডয়ন ও অবতরণ করতে পারে। প্রতিদিন প্রায় ৩০,০০০ থেকে ৩৫,০০০ যাত্রী দু’টি টার্মিনাল ব্যবহার করে। এ হিসাবে, ঢাকার এই বিমানবন্দরটি বছরে প্রায় ৮ মিলিয়ন যাত্রী পরিষেবা দেয়।
তৃতীয় টার্মিনালটি চালু হলে অতিরিক্ত ১২ মিলিয়ন যাত্রী পরিষেবা দেয়া সম্ভব হবে। নতুন টার্মিনালটিতে ৩৭টি বিমান পাকিং ধারণ ক্ষমতা সম্পন্ন একটি পার্কিং এপ্রোন থাকবে। এটিতে ২৬টি বোর্ডিং ব্রিজও থাকবে। আগতদের জন্য, যাত্রীদের দ্রুত ও উন্নত পরিষেবা প্রদানে পাঁচটি স্বয়ংক্রিয় কাউন্টারসহ মোট ৫৯টি কাউন্টার থাকবে।
এছাড়া, তৃতীয় টার্মিনালে ১৬টি ব্যাগেজ বেল্ট স্থাপন করা হবে এবং অতিরিক্ত ওজনের ব্যাগেজের জন্য চারটি পৃথক বেল্ট থাকবে।
বিদেশগামী যাত্রীদের জন্য, টার্মিনালে ১৫টি সেলফ সার্ভিস কাউন্টারসহ ১১৫টি চেক-ইন কাউন্টার এবং ১০টি স্বয়ংক্রিয় পাসপোর্ট নিয়ন্ত্রণ কাউন্টারসহ ৬৬টি ডিপার্চার ইমিগ্রেশন কাউন্টার থাকবে।
সিএএবি সূত্র জানিয়েছে, বিশ্বমানের টার্মিনালটিতে ১,০৪৪টি গাড়ি রাখার সক্ষমতাসহ বহুতল গাড়ি পার্কিংও তৈরি করা হচ্ছে।
ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনাল নির্মাণের কাজ করছে জাপানের মিৎসুবিশি, ফুজিতা ও দক্ষিণ কোরিয়ার স্যামসাং।
২০১৭ সালের ২৪ অক্টোবর দেশের প্রধান বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনাল নির্মাণ প্রকল্পটি একনেকের অনুমোদন পায়। সে সময় ব্যয় ধরা হয়েছিল ১৩ হাজার ৬১০ কোটি টাকা। পরে আরও ৭ হাজার ৭৮৮ কোটি ৫৯ লাখ টাকা বাড়িয়ে প্রকল্পের আকার হয় ২১ হাজার ৩৯৮ কোটি টাকা।
২০১৯ সালের ডিসেম্বরে প্রকল্পটির নির্মাণ শুরু হয়। নির্মাণ খরচের বেশির ভাগ আসছে জাপানি সহযোগিতা সংস্থা জাইকার কাছ থেকে। সংস্থাটি ঋণ হিসেবে দিচ্ছে ১৬ হাজার ১৪১ কোটি ২ লাখ ৪৫ হাজার টাকা। বাকি টাকা দিচ্ছে বাংলাদেশ সরকার।
আরও পড়ুন:
বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব পদক প্রদান করলেন প্রধানমন্ত্রী
পোশাক রপ্তানিতে চীনকে পেছনে ফেলে শীর্ষে বাংলাদেশ
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন সংস্কারের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানাল যুক্তরাষ্ট্র
© ২০২৩ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত | কর্পোরেট সংবাদ সম্পাদক - মোঃ মিজানুর রহমান । উপদেষ্টা সম্পাদক- জেসমিন আক্তার, এফসিএস ই-মেইলঃ corporatesangbad@gmail.com । ফোনঃ ০২২২-৩৩৫৪১২৫ । মোবাইলঃ ০১৭১১০৭৬৮১৫ অফিসঃ ৫৫/বি, নোয়াখালী টাওয়ার, ১১ তলা, সুইট ১১-এফ, পুরানা পল্টন, ঢাকা ১০০০ |
শাহজালালের তৃতীয় টার্মিনালের উদ্বোধন ৭ অক্টোবর https://corporatesangbad.com/40668/ |