ইমরান খান গ্রেপ্তার, ৩ বছরের কারাদণ্ড

Posted on August 5, 2023

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : তোশাখানা মামলায় দুর্নীতির দায়ে পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) চেয়ারম্যান ইমরান খানকে তিন বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন ইসলামাবাদের ট্রায়াল কোর্ট।

একইসঙ্গে তাকে ৫ বছরের জন্য রাজনীতি থেকে দূরে থাকার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। এছাড়া তাকে ১ লাখ রুপি জরিমানাও করা হয়েছে।

শনিবার (৫ আগস্ট) দুপুরে ইসলামাবাদের বিচারিক আদালতে অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ (এডিএসজে) হুমায়ুন দিলাওয়ার তাকে ৩ বছরের কারাদণ্ডের আদেশ দেন।

এ রায়ের কিছুক্ষণ পরেই পিটিআই চেয়ারম্যানকে লাহোরে জামান পার্ক বাসভবন থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম দ্য ডনের প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

বিচারক বলেন, ইমরান খান ইচ্ছাকৃতভাবে পাকিস্তানের নির্বাচন কমিশনে মিথ্যা বিবরণ জমা দিয়েছেন এবং দুর্নীতির জন্য দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন।’ এই অভিযোগে পাকিস্তানের নির্বাচনী আইনের ১৭৪ ধারা অনুসারে পিটিআই প্রধানকে তিন বছরের জন্য কারাদণ্ড দেওয়া হয়।

বিচারপতি দিলাওয়ার আরও নির্দেশ দিয়েছেন যে আদালতের আদেশ কার্যকর করার জন্য আদেশের একটি অনুলিপি ইসলামাবাদের পুলিশপ্রধানের কাছে পাঠাতে হবে।

তোষাখানায় থাকা উপহারসামগ্রী এবং বিক্রয় থেকে আয়ের বিশদ বিবরণ প্রকাশ না করার অভিযোগে ক্ষমতাসীন জোট সরকার গত আগস্টে ইমরানের বিরুদ্ধে স্পিকারের কাছে অভিযোগ দেয়। তিনি পরে সেটি প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) সিকান্দার সুলতান রাজার কাছে পাঠান।

পাকিস্তানে তোষাখানা প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯৭৪ সালে। এটি মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের প্রশাসনিক নিয়ন্ত্রণাধীন একটি বিভাগ। সরকার ও অন্যান্য রাজ্যপ্রধান এবং বিদেশি বিশিষ্ট ব্যক্তিরা শাসক, সংসদ সদস্য, আমলা ও কর্মকর্তাদের যেসব উপহারসামগ্রী দেন, সেগুলো সংরক্ষণের দায়িত্বে থাকা একটি দপ্তর এটি।

তোষাখানার নিয়ম অনুসারে, প্রযোজ্য ব্যক্তিদের দেওয়া উপহার এবং অন্যান্য উপকরণ বিষয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে নিয়মিত রিপোর্ট করতে হয়।

২০১৮ সালে দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে পিটিআই সরকার ইমরানকে দেওয়া উপহারের বিবরণ প্রকাশ করতে অনিচ্ছুক ছিল। যুক্তি ছিল, এটি আন্তর্জাতিক সম্পর্ককে হুমকির মুখে ফেলবে। তবে গত ৮ সেপ্টেম্বর নির্বাচন কমিশনে জমা দেওয়া লিখিত জবাবে ইমরান প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন তাঁর প্রাপ্ত কমপক্ষে চারটি উপহার বিক্রি করার কথা স্বীকার করেন।

সাবেক প্রধানমন্ত্রী তাঁর জবাবের সপক্ষে যুক্তি দেখিয়ে বলেন, তিনি রাষ্ট্রীয় কোষাগার থেকে ২১ দশমিক ৫৬ মিলিয়ন রুপি দিয়ে উপহারগুলো সংগ্রহ করেছিলেন, তা বিক্রি করে প্রায় ৫৮ মিলিয়ন রুপি পাওয়া গেছে। উপহারগুলোর মধ্যে রয়েছে—একটি গ্রাফ হাতঘড়ি, এক জোড়া কাফ লিংক, একটি দামি কলম এবং একটি আংটি—এসব মিলিয়ে একটি সেট; অন্য তিনটি উপহারের মধ্যে রয়েছে চারটি রোলেক্স ঘড়ি।

উল্লেখ্য, পাকিস্তানের ইলেকশন কমিশনের (ইসিপি) দায়ের করা একটি ফৌজদারি অভিযোগের ভিত্তিতে ইমরান খানের বিরুদ্ধে ক্ষমতাসীন দলের আইনপ্রণেতারা তোশাখানা মামলাটি করেন। মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে, ইমরান রাষ্ট্রীয় তোশাখানা থেকে যে উপহারগুলো রেখেছিলেন তার বিবরণ ‘ইচ্ছাকৃতভাবে গোপন’ করেছেন। তিনি প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন এই কাজ করেন। উপহার বিক্রি থেকে ইমরান মোটা অঙ্কের অর্থ আয় করেছেন বলেও অভিযোগ করা হয়। পরবর্তীতে গত ১০ মে এই মামলায় ইমরান খানকে অভিযুক্ত করা হয়।

আরও পড়ুন:

বর্ষায় বিপর্যস্ত হিমাচল: ১৯৯ জনের প্রাণহানি, নিখোঁজ ৩১

রাহুল গান্ধীর ২ বছরের সাজার ওপর স্থগিতাদেশ