ইমা এলিস, নিউ ইয়র্ক: যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাসাচুসেটস অঙ্গরাজ্যের ক্যামব্রিজে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত শিক্ষার্থীকে কেন গুলি করেছেন এর ব্যাখ্যা দিয়েছেন ক্যামব্রিজ পুলিশ কর্তৃপক্ষ।
পুলিশ জানায়, ফয়সাল পুলিশের ওপর হামলার চেষ্টা করলে তারা তাকে গুলি করতে বাধ্য হয়। ২০ বছর বয়সী ওই বাংলাদেশির নাম সৈয়দ ফয়সাল। বোস্টনের টিভি চ্যানেল এনবিসি, যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংবাদমাধ্যম সিবিএস নিউজসহ বিভিন্ন গণমাধ্যম এ খবর জানিয়েছে। নিহত ফয়সালের পুরো নাম সৈয়দ আরিফ ফয়সল ওরফে প্রিন্স বলে তার পারিবারিক সূত্র জানিয়েছে। এখবর জানিয়েছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম বাংলা প্রেস।
খবরে জানানো হয়, স্থানীয় সময় বুধবার (৪ জা্নুয়ারি) দুপুরে পুলিশের গুলিতে ফয়সাল গুরুতর আহত হন। পরে বোস্টনের ম্যাসাচুসেটস জেনারেল হাসপাতালে ভর্তির পর তার মৃত্যু হয়। পুলিশ জানিয়েছে, বুধবার বেলা সোয়া ১টার দিকে কেমব্রিজের একজন বাসিন্দা জরুরি নম্বর ৯১১–এ ফোনে করে জানান একজন ব্যক্তি একটি অ্যাপার্টমেন্টের জানালা দিয়ে লাফিয়ে পড়েছেন। তার হাতে চাপাতির মতো ধারাল অস্ত্র রয়েছে বলে মনে হচ্ছে। পুলিশ গিয়ে সিডনি স্ট্রিটের একটি ভবনের পেছনে তাকে দেখতে পায়। পুলিশ যাওয়ার পর ফয়সাল অস্ত্র হাতে সেখান থেকে দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করেন। পরে দেখা গেছে তার একটি এক ফুট লম্বা একটি ছোরা ছিল। তিনি সেই ধারাল ছুরি হাতে পুলিশের দিকে এগিয়ে আসছিলেন। ফয়সালকে গুলির আগে পুলিশ কর্মকর্তারা তাকে ধরতে বেশ কিছুক্ষণ ছোটাছুটি করেন। তাকে থামাতে প্রথমে স্পঞ্জ রাউন্ড ছোড়া হয়। কিন্তু এতে ফয়সাল না থেমে পুলিশের দিকে আক্রমণ করতে আসতে থাকে। ফলে একজন পুলিশ অফিসার গুলি চালান। মিডলসেক্স ডিস্ট্রিক্ট অ্যাটর্নির অফিস এ ঘটনার তদন্ত করছে।
অ্যাটর্নি মারিয়ান রায়ান বলেছেন, ফয়সাল যখন অস্ত্র নিয়ে ভয় দেখাচ্ছিল তখন তাকে আটকানোর জন্য বেশ কয়েকবার বাধা দেওয়া হয়েছিল। তবে ফয়সাল ছোরা নিয়ে পুলিশ কর্মকর্তাদের দিকে তেড়ে আসছিলেন বলে অভিযোগ করা হয়েছে।
কেমব্রিজ পুলিশ কমিশনার ক্রিস্টিন এলো বলেছেন, ‘আমাদের অফিসাররা বেশ কয়েকবার ওই ব্যক্তির সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়েছেন। ওই যুবকের দেখা পাওয়ার পর তাকে নাগালে পেতে পাঁচটি ব্লকের বেশি এলাকায় চেষ্টা চালানো হয়। আমরা পরিস্থিতি শান্ত করার জন্য বেশ কয়েকবার চেষ্টা করেছি।’
ফয়সালকে গুলির ঘটনা নিয়ে তদন্ত শুরু হয়েছে। অপ্রয়োজনীয়ভাবে গুলি করা হয়েছিল কিনা তা নিশ্চিত হতে রেগুলার তদন্ত হবে। এ সময় গুলি করা কর্মকর্তাকে সাময়িক ছুটিতে পাঠানো হয়েছে।
ফয়সালের দেশের বাড়ি চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি উপজেলার ভুজপুরের দাঁতমারা গ্রামে। তিনি ইউনিভার্সিটি অব বোস্টনে (ইউম্যাস) পড়াশোনা করতেন। তার পরিবারের প্রায় সকলেই বোস্টনে বসবাস করেন। ৩ বছর আগে সৈয়দ আরিফ ফয়সল ওরফে প্রিন্স বাবা-মার সাথে ম্যাসাচুসেটস অঙ্গরাজ্যের ক্যামব্রিজে আসেন। ফয়সাল আরিফের দাদা দাঁতমারার শিক্ষক মরহুম সৈয়দ আবুল বশর। সে মজিবুর রহমান নান্নু এবং শাহেদা বেগম দম্পতির একমাত্র সন্তান। আরিফের বাবা মজিবুর রহমান নান্নু দেশে একজন এমএলএফ ডাক্তার ছিলেন।
আরও পড়ুন:
© ২০২৩ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত | কর্পোরেট সংবাদ সম্পাদক - মোঃ মিজানুর রহমান । উপদেষ্টা সম্পাদক- জেসমিন আক্তার, এফসিএস ই-মেইলঃ corporatesangbad@gmail.com । ফোনঃ ০২২২-৩৩৫৪১২৫ । মোবাইলঃ ০১৭১১০৭৬৮১৫ অফিসঃ ৫৫/বি, নোয়াখালী টাওয়ার, ১১ তলা, সুইট ১১-এফ, পুরানা পল্টন, ঢাকা ১০০০ |
যুক্তরাষ্ট্রে পুলিশের গুলিতে যেভাবে মারা গেলেন বাংলাদেশি শিক্ষার্থী! https://corporatesangbad.com/3676/ |