মেহেরপুরে শেষ মূহর্তে জমে উঠেছে পশু হাট

Posted on June 27, 2023

সেলিম রেজা , মেহেরপুর প্রতিনিধি : আসন্ন কোরবানির ঈদ আসতে আর মাত্র বাকি কয়েক দিন। এরই মধ্যে গরু লালন পালন কারীরা হাটে গরু তুলতে শুরু করেছে কয়েক সপ্তাহ ধরে। মেহেরপুরের গরুর হাটগুলোতে ব্যপকহারে গরু আমদানী হলেও এবার ক্রেতার উপস্থিতি খুবই কম। এবার হাটের বেশিরভাগ গরু যাচ্ছে রাজধানী ঢাকার হাটগুলোতে। তবে এবারের হাটে গরুর দাম নিয়ে সন্তুষ্ট ক্রেতারা অন্যদিকে লাভের আশা দেখছে ব্যবসায়ীরা।

“বামুন্দি পশুর হাট” মেহেরপুর জেলার সবচেয়ে বড় ঐতিহ্যবাহী হাট। শতবর্ষী এই হাটে প্রতি বছরই ছোট বড় গরু ব্যপক হারে উঠে থাকে। মেহেরপুর জেলায় গরুর হাট রয়েছে ২টি। এর মধ্যে একটি মেহেরপুর শহরের প্রাণকেন্দ্রে গো-হাট এলাকায় অন্যটি গাংনী উপজেলার বামন্দীতে। এই দুইটি হাটের মধ্যে সব চেয়ে বড় এবং প্রাচীন হাট হলো বামন্দী নিশিপুর গরুর হাট। এই হাটে জেলা এবং জেলার আশে পাশে থেকে ব্যাপক গরু আমদানি করা হয়। এবারো এই হাটে ব্যাপক গরুর আমদানি হয়েছে। প্রতি হাটেই কয়েক হাজার গরু নিয়ে আসেন খামারী, ব্যবসায়ী এবং গরু লালন পালন কারীরা। তবে এ বছর বড় গরুর চেয়ে মাঝারি সাইজের গরুর চাহিদা সব চেয়ে বেশি। ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী, ফেনী, ফরিদপুর, রাজবাড়ি থেকে এই পশুর হাটে গরু কিনতে আসছে ব্যাপারিরা। অন্যান্য বছরের তুলনায় দাম বেশি হলেও চাহিদা বেশি থাকায় লাভের আশা দেখছে জেলার বাইরে থেকে আসা ব্যাপারিরা। তবে ঢাকার হাটে এসব গরু বিক্রি করে লাভবান হবেন কি না তা নিয়ে শঙ্কাও আছে তাদের মাঝে।

গরু খামারী ইনার আলী বলেন, আমি হাটে ৮টি গুর নিয়ে এসেছি। এর মধ্যে ৩টি গরু বিক্রি করতে পেরেছি। হাটে যা দাম বলছে তাতে করে প্রতিটি গরু ২০ থেকে ৩০ হাজার টাকা কম বলছে। এখন এই তিনটি গরুতে কিছুটা লাভ হয়েছে কিন্তু গরুর খাবারের যে পরিমাণ দাম বেড়েছে তাতে আমাদের খুব একটা লাভ থাকবে না।

আরেক খামারী বক্স মিয়া বলেন, আমি ৪টি গরু নিয়ে এসেছি হাটে। মনে করেছিলাম কিছুটা লাভ হবে। কিন্তু কেনাবেচার পরে খুব বেশি লাভ হয় নি। এবারের হাটের গরুর দাম এভাবে থাকলে আমরা লোকশানের মধ্যে পড়বো। এই হাটে এবার ছোট গরুগুলো ৬০- থেকে ৭০ হাজার টাকা, মাঝারি সাইজের গরু গুলো ১ লাখ ৫০ হাজার থেকে ৬০ হাজার টাকা এবং একটু বড় সাইজের গরু গুলো ৩ থেকে সাড়ে ৩লাখ টাকায় বেচাকেনা হচ্ছে।

ঢাকা মুন্সিগ থেকে আসা গরু ব্যাপারি আলমগীর হোসেন বলেন, আমরা কিছুটা লাভের আশায় গরু কিনতে এসেছি এই হাটে। গত বারের তুলনায় এবার একটু দাম কম মনে হচ্ছে। এবার হাটে গরু সরবারাহ বেশি। সকাল থেকে হাট ঘুরে ঘুরে ২৯টি গরু কিনেছি। আশা করছি ঢাকাতে এই গরুগুলো বিক্রি করে কিছুটা লাভবান হবো।

গরু কিনতে আসা তোফাজ্জেল হোসেন বলেন, এবার হাটে গরুর সরবারাহ বেশি হয়েছে। খাবারের দাম বেশি হওয়ায় গরুর দাম কিছুটা বেশি। তবে হাট ঘুরে ঘুরে একটি গরু পছন্দ হয়েছে। দাম পড়েছে ৬৫ হাজার টাকা। আমি নিজেই কোরবানি দিন। তবে এই দামে আমি সন্তুষ্ট।

গাংনী প্রাণী সম্পদ অফিসের ভ্যেটেনারি সার্জন আরিফুল ইসলাম বলেন, প্রানী সম্পদ বিভাগের পক্ষ থেকে মেডিক্যেল টিম গঠন করা হয়েছে। হাটে গরু বেচা-কেনার জন্য ব্যবসায়ী ও খামারীদের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।

বামুন্দী হাট ইজারাদার আমিরুল ইমলাম, এবার গরুর হাটে গরু আমদানি বেশি হয়েছে, প্রতি হাটেই কয়েক হাজার গরু আসছে। সবাই দেখে শুনে গরু কিনতে পারছে। কেউ যেন প্রতারণার শিকার না হয় সেজন্য আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী মোতায়েন করেছে প্রশাসন। কোন ধরনের সমস্যা হচ্ছে না। সবাই নির্বিঘেœ কেনা বেচা করতে পারছে।