অপহরণের নাটক সাজানো ও বিব্রতকর অবস্থা সৃষ্টি রাষ্ট্রদ্রোহীতার সামিল!

Posted on June 21, 2021

সম্পাদকীয় : বিগত ১০ দিন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থেকে শুরু করে সব ধরনের মিডিয়ায় ফলাও করে প্রচার করা হয় তথা কথিত ইসলামী বক্তা আবু ত্ব-হা মুহাম্মদ আদনানের নিখোঁজ বা অপহরণ হওয়ার বিষয়টি। যা সবাইকে রীতিমত ভাবিয়ে তুলেছে। সারা দেশের পুলিশ প্রশাসনকে হতে হয়েছে তটস্ত, কোথায় গেল তথা কথিত এই ইসলামী বক্তা, কি হল তার ? সবার আঙ্গুলি নির্দেশনা ছিল সরকারের দিকে। সরকারই তাকে কোন না কোন ভাবে আত্মগোপনে রেখেছে।

পরে আলোচিত বিষয়ে রংপুর মহানগর পুলিশের (আরপিএমপি) পক্ষ থেকে সাংবাদিক সম্মেলন করে জানানো হয়, সবার আলোচনায় আসা তথা কথিত ইসলামী বক্তা আবু ত্ব-হা মুহাম্মদ আদনানকে আসলে অপহরণ করা হয়নি। বরং তিনিই স্বেচ্ছায়, স্বজ্ঞানে, সুস্থ মস্তিস্কে সরকারকে বিব্রতকর অবস্থায় ফেলার জন্যই নিজেকে আত্মগোপনে রেখে ছিলেন।

আরপিএমপি সূত্রে আরও জানা গেছে, আবু ত্ব-হার সঙ্গে নিখোঁজ হওয়া সঙ্গীদের মধ্যে গাড়ীচালক আমির উদ্দিন ও তার একজন সঙ্গী আব্দুল মুহিন উদ্দিনসহ ২ জন পুলিশ হেফাজতে রয়েছেন। এছাড়া তার অন্য একজন সঙ্গী মুজাহিদও পুলিশ নজরদারিতে রয়েছেন।

একজন বক্তা; সে ইসলাম, হিন্দু, খৃষ্টান, বৌদ্ধ, ইংরেজী, উর্দু বা যে কোন ধর্মের বা যে কোন পেশারই হোক না কেন, সে তো সরকারকে বিতর্কে ফেলার জন্য নিজ থেকে আত্মগোপন করতে পারে না। আর আবু ত্ব-হা মুহাম্মদ আদনান তো বাংলাদেশের এমন কোন ইসলামী চিন্তাবিদও নয় যে তার কথায় মুসলমানেরা উঠ-বস করে বা তাকে অনুসরণ করে। শুধুমাত্র ইসলামী বক্তা হিসেবে নাম আলোচনায় আনার জন্য তিনি এহেন অপহরণ নাটক সাজিয়ে সরকারকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছেন। সুতরাং সে যেই হোক এভাবে নিজে নিজে আত্মগোপনে থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও মিডিয়ায় যে হৈচৈ ফেলেছেন সে জন্য তার শাস্তি হওয়া উচিত।

আবু ত্ব-হা নিজের এবং সঙ্গীদের সেল ফোন বন্ধ রেখে যেখানে ছিলেন সেখানে টেলিভিশন না থাকায় তাদের খোঁজার বিষয়টি জানতেও পারেননি বলে তার দাবিটি সম্পূর্ণ বানোয়াট এবং স্ববিরোধী বক্তব্য।

জুনের ১০ তারিখ রাতে নিখোঁজ হওয়ার পর ১১ জুন তার মা আজেদা বেগম রংপুর কোতোয়ালি থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। এরপর ১৮ জুন বেলা ৩ টায় নগরীর আবহাওয়া অফিস সংলগ্ন মাস্টার পাড়ার শ্বশুরবাড়ি থেকে তাকে কোতোয়ালি থানায় নেওয়া হয় এবং সেই সাথে খোঁজ পাওয়া যায় তার সঙ্গীদের।

ইসলামী বক্তা ও চিন্তাবিদ হিসেবে যে বৈশিষ্ট একজন মানুষের থাকা উচিত টুপি, দাঁড়ি ছাড়া তার মধ্যে আর কি আছে? সেটা নিয়েও জনমনে প্রশ্ন উঠেছে। ফলে এ ধরনের অখ্যাত বক্তারা বিখ্যাত হয়ে ওঠার জন্য যে কুটকৌশলের আশ্রয় নিচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে অবশ্যই রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।