ভাঙ্গায় অ্যাম্বুল্যান্সের সিলিন্ডার বিস্ফোরণ, নিহত ৮

Posted on June 24, 2023

নিজস্ব প্রতিবেদক : ফরিদপুরের ভাঙ্গায় একটি অ্যাম্বুল্যান্স নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে হাইওয়ে সড়কের রেলিংয়ে ধাক্কা লেগে আগুন ধরে যায়। এতে দগ্ধ হয়ে ৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। নিহতের মধ্যে তিনজন নারী, তিনজন পুরুষ ও দু’টি শিশু রয়েছে। এরমধ্যে সাতজন একই পরিবারের সদস্য রয়েছেন।

শনিবার (২৪ জুন) ১১টার দিকে ভাঙ্গা-মাওয়া-ঢাকা এক্সপ্রেসওয়ের মালিগ্রামে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহতরা হলেন- ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলার গুনবহা ইউনিয়নের ফেলাননগর গ্রামের প্রবাসী আজিজার রহমানের স্ত্রী তাছলিমা বেগম (৫৫) তার মেয়ে কমলা পারভিন (২৬), বিউটি বেগম (২৪), নাতী হাসিব (৮) হাফসা (২), আরিফ (১২), মেহেদি (১২) ও অ্যাম্বুলেন্স চালক ফরিদপুর শহরের লক্ষ্মীপুর মহল্লার তকি মোল্যা সড়কের সুভাষ চন্দ্র মালোর সন্তান মিতুল (৩০)।

জানা যায়, ওই অ্যাম্বুলেন্সটি ঢাকা থেকে ভাঙ্গার দিকে যাওয়ার পথে এক্সপ্রেসওয়ের মালিগ্রাম ফ্লাইওভারের উপরে রেলিং এর সঙ্গে ধাক্কা খায়। এতে অ্যাম্বুলেন্সের সামনের অংশে আগুন ধরে যায়। তবে সিলিন্ডার বিস্ফোরণের কারণে অ্যাম্বুলেন্সটিতে আগুন ধরে যায় বলে ধারনা করা হচ্ছে।

ভাঙ্গা থানার অফিসার ইনচার্জ জিয়ারুল ইসলাম বলেন, সকাল ১১টার দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে। ঢাকা থেকে বরিশালের দিকে যাচ্ছিলেন ওই অ্যাম্বুলেন্সের যাত্রীরা। পথিমধ্যে মালিগ্রামে এক্সপ্রেসওয়ের রেলিংয়ের সাথে ধাক্কা লেগে অ্যাম্বুলেন্সে আগুন ধরে যায়। এতে ড্রাইভার বাদে সকলেই পুড়ে অঙ্গার হয়ে যায়।

ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের ভাঙ্গা স্টেশনের সাব-অফিসার রনেন্দ্রনাথ চৌধুরী জানান, গাড়িটি ঢাকার দিকে যাচ্ছিল। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ১০টা ৫৫ মিনিটে ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নেভায়।

ভাঙ্গা দমকল বাহিনী সূত্রে জানা যায়, চালক মিতুল (৩০) বাদে অ্যাম্বুলেন্সে থাকা সকলেই ঘটনাস্থলে মারা গেছেন। চালককে গুরুতর অবস্থায় হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।

বোয়ালমারী উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোশারেফ হোসাইন জানান, উপজেলার গুনবহা ইউনিয়নের ফেলাননগর গ্রামের সৌদি প্রবাসী আজিজার রহমানের স্ত্রী তাছলিমা বেগম হৃদরোগে আক্রান্ত হলে একমাস আগে ঢাকায় নিয়ে চিকিৎসা শেষে বড় মেয়ে কমলা বেগমের বাসায় ছিলেন। শনিবার সকালে তারা ঢাকা থেকে বোয়ালমারী গ্রামের বাড়ির উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেন। পথিমধ্যে দুর্ঘটনায় সাতজনই প্রাণ হারান।

দুর্ঘটনার পর দুপুর ১২টা ১০ মিনিটে অ্যাম্বুলেন্স চালক মিতুলকে ফরিদপুরের মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অবস্থার অবনতি হলে তাকে বেলা ৩টার দিকে তাকে ফরিদপুর থেকে ঢাকা মেডিক্যালের বার্ন ইউনিটের উদ্দেশ্য নিয়ে যাওয়ার পথে তার মৃত্যু হয় বলে জানান ফরিদপুর কতোয়ালী থানার ওসি আবদুল জলিল।

ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক কামরুল আহসান তালুকদার জানান, ঘটনা তদন্তে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) বিপুল চন্দ্র দে কে প্রধান করে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। তদন্ত শেষে তিন কর্মদিবসের মধ্যে তাদের প্রতিবেদন দাখিল করতে হবে। এছাড়া নিহতদের প্রত্যেককে ২০ হাজার টাকা করে এবং আহতকে ১০ হাজার টাকা প্রদান করা হবে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে।