নিজস্ব প্রতিবেদক : বছরে ১ হাজার এসি, নন-এসি লাক্সারীবাস তৈরীর লক্ষ্য নিয়ে উৎপাদন কার্যক্রম শুরু করেছে ইফাদ অটোস লিমিটেড। বৃহস্পতিবার সকালে ঢাকার ধামরাইয়ে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের পাশে প্রতিষ্ঠিত ইফাদের নিজস্ব কারখানায় এ কার্যক্রমে রউদ্বোধন করা হয়। শিল্প মন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন এমপি এই উৎপাদন কার্যক্রম উদ্বোধন করেন।
ইফাদ গ্রুপের চেয়ারম্যান ইফতেখার আহমেদ টিপুর সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডাক্তার মো: এনামুর রহমান এমপি, ঢাকা-২০ আসনের এমপি আলহাজ্ব বেনজির আহমেদ এবং বাংলাদেশ ট্রেড এন্ড ট্যারিফ কমিশনের চেয়ারম্যান মুন্সী শাহাবুদ্দিন আহমেদ।অনুষ্ঠানে অন্যান্যেও মধ্যে ইফাদ গ্রুপের ম্যানেজিং ডিরেক্টও তানভীর আহমেদ, ইফাদ অটোসের ম্যানেজিং ডিরেক্টর তাসকিন আহমেদ, গ্রুপ ডিরেক্টর তাসফিন আহমেদ সহ বিভিন্ন অর্থ লগ্নি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাবৃন্দ, ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ, বাস-ট্রাক মালিক ও শ্রমিক সংগঠনের নেতা-কর্মিবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে শিল্প মন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন এমপি বলেন, জনগণের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে সাশ্রয়ী মূল্যে বিশ্বমানের গাড়ি দেশেই উৎপাদন করা বর্তমান সরকারের অন্যতম লক্ষ্য। এ লক্ষ্য অর্জনে শিল্প মন্ত্রণালয় ইতোমধ্যে অটো মোবাইল শিল্পের বিকাশে একটিনীতি মালা প্রণয়নের উদ্যোগ নিয়েছে। এ শিল্পের উত্তরোত্তর উন্নয়ন এবং টেকসই বিকাশের লক্ষ্যে এ নীতি প্রণয়ন করা হচ্ছে।
তিনি আরো জানান, বর্তমানে অটোমোবাইল শিল্প উন্নয়ননীতি প্রণয়নের কাজ চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। শীঘ্রই এর খসড়া অনুমোদন করে সংশ্লিষ্ট অংশীজনদের সাথে পরামর্শক্রমে তা চূড়ান্ত করা হবে। এর মাধ্যমে ২০৩০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে আঞ্চলিক অটোমোবাইল শিল্প উৎপাদনের কেন্দ্রে উন্নীত করা হবে। এ লক্ষ্য অর্জনে সরকার অটোমোবাইল শিল্প উন্নয়নে সর্বাধিক গুরুত্ব দিচ্ছে।
এলক্ষ্য অর্জনে তিনি সরকারের পাশাপাশি অটোমোবাইল শিল্প উদ্যোক্তাদেরকে এগিয়ে আসার আহবান জানান। অটোমোবাইল শিল্পের বিকাশে প্রকৃত অর্থেই নীতিমালা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিক রাখবে। সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় বাংলাদেশ গাড়ি সংযোজনকারী দেশের গণ্ডি পেরিয়ে গাড়ি উৎপাদনকারী দেশের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হবে বলে প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন শিল্পমন্ত্রী।
তিনি বলেন, আপনারা এও জানান, বর্তমান সরকার ২০২০ সালকে লাইটইঞ্জিনিয়ারিং বর্ষ হিসেবে ঘোষণা করেছেন। ২০৪১ সালে উন্নত আয় ও শিল্প সমৃদ্ধ দেশ গড়তে সরকার দেশে শিল্পকারখানা স্থাপনের উপর গুরুত্ব দিয়ে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ কারীদের সব ধরণের সহায়ত াপ্রদান করছে।
অনুষ্ঠানে ইফাদ গ্রুপের চেয়ারম্যান ইফতেখার আহমেদ টিপু জানান, বেসরকারী উদ্যোগে ইতিহাসে নব দিগন্তের সূচনা কওেছেই ফাদ অটোস। এতদিন এই কারখানায় শুধুগাড়ি সংযোজন করা হতো। এখন বিলাস বহুলএসি, নন-এসিবাসের বডি তৈরী করা হবে। তিনি জানান, বর্তমানে বিদেশ থেকে গাড়ি আমদানীকরতে বেশ সময় লাগে। এই কারখানা চালু হওয়ার ফলে ক্রেতার চাহিদা অনুযায়ী দ্রুত তম সময়ে গাড়ি সরবরাহ করা সম্ভব হবে।
ইফতেখার আহমেদ টিপু বলেন, বাংলাদেশে বিগত কয়েক বছওে ভারী যানবাহনের ক্ষেত্রে এক বৈপ্লবিক পরিবর্তন সাধিত হয়েছে। চাহিদাবাড়ার সাথে সাথে আমদানীকৃত গাড়িতে আমদানী বাবদ বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা ব্যয় হচ্ছে। বিষয়টি বিবেচনায় রেখে ইফাদ অটোস লিমিটেড বৈদেশিকমুদ্রা সাশ্রয়ও দেশে শিল্প বান্ধব অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে এই কারখানা স্থাপন করেছে।
তিনি আরো জানান, ৪০ কোটিটাকা ব্যয়ে এই কারখানাগড়ে তোলা হয়েছে। যেখানে লাক্সারী এসি ও নন-এসিবাস তৈরী হবে।বছরে ১ হাজারেরও বেশী গাড়ির বডি তৈরী করা হবে এবং ভবিষ্যতে এ সংখ্যা আরোবৃদ্ধি পাবে বলে ওআশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
তিনি বলেন, যেহেতু এই কারখানায় বিভিন্ন মডেলের এসি-নন এসিবাস, ট্রাক, কাভার্ডভ্যান সংযোজন হবে, তাই তার উৎপাদন খরচ আমদানীকৃত তৈরী গাড়ির চেয়েও কম হবে। এর সুবিধা গাড়ীর মালিক ও যাত্রীরা ভোগ করবেন। দেশী-বিদেশী বিশেষজ্ঞের সমন্বয়ে তৈরী হবে নতুন গাড়ি। শুধু বৈদেশিকমুদ্রা সাশ্রয় হবে না, দেশের অনেক ছোট ছোট বিশেষায়িত কারখানায় তাদের উৎপাদিত মানসম্পন্ন বিভিন্ন পণ্য এই সংযোজন কারখানায় সরবরাহের দ্বার উন্মোচন হবে।
জাতীয় অর্থনীতিতে এই সংযোজন কারখানা বিশেষ ভুমিকা পালন করবে। যেমন- দেশীয় কাঁচা মালের সঠিক ব্যবহার, দক্ষকর্মি সৃষ্টি, নতুনকমর্ সংস্থানের ব্যবস্থা।
বছরে ১২ হাজার গাড়ি সংযোজনের লক্ষ্য নিয়ে ২০১৭ সালে ইফাদ অটোস লিমিটেডের সংযোজন কারখানা চালু হয়। কারখানাটিতে ভারতের অশোক লেল্যান্ড ব্র্যান্ডের বিভিন্ন মডেলের গাড়ি তৈরী হচ্ছে।