শেরপুরে গলায় ফাঁস দিয়ে গৃহবধূর আত্মহত্যা

Posted on June 14, 2023

আল আমিন, শেরপুর জেলা প্রতিনিধি: ‘বাবা আমাকে নিয়ে যাও। আমি এখানে থাকতে পারছি না। তুমি তাড়াতাড়ি আসো।’ স্বামীর বাড়ি থেকে কথাটি বলেছে সোমবার (১২ জুন) দুপুরে স্বামীর বাড়ি থেকে আফসানা আক্তার মিশু (১৯) নামে এক নববধূ তার বাবা আব্দুল মান্নানকে। এটি ছিল তার মেয়ের সর্বশেষ কথা। তার বাবা বিকাল সাড়ে ৪ টার দিকে গিয়েছে ওই বাড়িতে। বাড়িটি শুনশান। মিশু যে ঘরে থাকে সে ঘরের জানালা দরজা বন্ধ। অবশেষে ঘরের দেয়াল টপকিয়ে ভিতরে যায় তার বাবা। দেখে তার মেয়ের গলায় কার্টুন বাঁধা ফিতা পেঁচানো। দেহ ঝুলছে ঘরের আড়ার সাথে। পরে তার মৃত দেহ নামানো হয় মেঝেতে। হতবাক হয়ে পড়ে তার বাবা।

ঘটনাটি শেরপুরের শ্রীবরদী উপজেলার দক্ষিণ মাটিয়াকুড়া গ্রামে সবুজ মিয়ার বাড়িতে। পরে রাত ১১ টার দিকে পুলিশ লাশ উদ্ধার করেন। মঙ্গলবার ময়নাতদন্তের জন্য লাশ জেলা সদর হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে।

নিহত মিশুর বাবা আব্দুল মান্নান জানান, প্রায় এক বছর আগে তার মেয়ে আফসানা আক্তার মিশুকে পার্শ্ববর্তী দক্ষিণ মাটিয়াকুড়া গ্রামের সবুজ মিয়ার ছেলে মমিন মিয়ার সাথে বিয়ে হয়। মমিন ঢাকায় একটি টেক্সটাইল মিলে চাকরি করে। কয়েকদিন আগে মমিন ছুটি নিয়ে বাড়িতে আসে। গত ৪ দিন আগে স্ত্রী মিশুকে বাড়িতে রেখে মমিন ঢাকায় চলে যায়। সোমবার দুপুরে আফসানা তার বাবাকে ফোনে তাকে নিয়ে যাওয়ার জন্য শ্বশুর বাড়িতে আসতে বলে। বিকাল সাড়ে ৪ টার দিকে তিনি ওই বাড়িতে এসে দেখেন দরজা জানালা বন্ধ। ওই সময় আফসানার মোবাইলে ফোন দেওয়া হলে রিং হয়, কিন্তু রিসিভ হয় না। পরে ঘরের ভিতরে ওয়াল টপকিয়ে কক্ষে গেলে সে তার মেয়েকে ঘরে আড়ার সাথে ঝুলে থাকতে দেখে। আশপাশের লোকজন তার মৃত দেহ মাটিতে নামায়।

তিনি বলেন, আমার মেয়ের শ্বশুর বাড়ির লোকজন তাকে মেনে নেয়নি। এ জন্য তাকে নানা সময় গালাগালি করতো। ওদের অত্যাচার সইতে না পরে গলায় ফিতা বেঁধে ঘরের ধন্নার সাথে বেঁধে আত্মহত্যা করে। আমি এর বিচার চাই।

তবে মিশুর শ্বশুর সবুজ মিয়া বলেন, আমরা মনে করেছি ঘরে ঘুমাচ্ছে। কিন্তু পরে দেখি সে আত্মহত্যা করেছে। কেন আত্মহত্যা করেছে এর উত্তর দিতে পারেনি মিতুর শ্বাশ্বরি মোর্শেদ বেগম। তিনি বলেন, ছেলে বাড়িতে নেই। আমি মিশুকে মেয়ের মতো মনে করতাম। এমন কাজ করবে কখনো ভাবিনি।

এ ব্যাপারে শ্রীবরদী থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) নাঈম মোহাম্মদ নাহিদ হাসান বলেন, কার্টুন বান্ডলের ফিতা দিয়ে সে ঘরের আড়ার সাথে ঝুলে আত্মহত্যা করে। ঘটনাস্থল থেকে লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। এ ঘটনায় থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা হয়েছে। এদিকে ঘটনার রহস্য উদঘাটনে তদন্ত চলছে।