ঘূর্ণিঝড় বিপর্যয়ের শক্তি বাড়ায়, জরুরি বৈঠকে মোদী

Posted on June 12, 2023

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : অত্যাধিক প্রবল ঘূর্ণিঝড় বিপর্যয় ক্রমেই আরও শক্তিশালী হচ্ছে। আগামী বৃহস্পতিবার (১৫ জুন) দুপুর নাগাদ ঝড়টি তীব্র শক্তিতে ভারতের গুজরাট ও পাকিস্তানের করাচি উপকূলে আছড়ে পড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। ঝড়ের পরিস্থিতি মূল্যায়নে এরই মধ্যে উচ্চপর্যায়ের জরুরি বৈঠক করেছেন ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।

ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে গুজরাটের সৌরাষ্ট্র ও কুচ অঞ্চলের জন্য জরুরি সতর্কতা জারি করেছে ভারতীয় আবহাওয়া বিভাগ (আইএমডি)। সংস্থাটি জানিয়েছে, ঘূর্ণিঝড় বিপর্যয়ের কারণে আগামী বুধবার (১৪ জুন) পর্যন্ত গুজরাট উপকূলে সমুদ্রের অবস্থা ‘উত্তাল থেকে অতিউত্তাল’ এবং বৃহস্পতিবার (১৫ জুন) ‘অতিউত্তাল থেকে উচ্চ উত্তাল’ থাকতে পারে।

আইএমডির পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, ঝড়ের প্রভাবে কুচ, জামনগর, মরবি, গির সোমনাথ, পোরবন্দর, এবং দেবভূমি দ্বারকা জেলাগুলোতে ১৩ থেকে ১৫ জুনের মধ্যে ভারী বৃষ্টিপাত এবং অতিউচ্চ বেগে বাতাস বয়ে যেতে পারে। বাতাসের গতিবেগ ঘণ্টায় ১৫০ কিলোমিটার পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে।

কুচ জেলার কর্মকর্তারা এরই মধ্যে নিচু এলাকাগুলোর বাসিন্দাদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিতে শুরু করেছেন। তারা বলেছেন, আমরা উপকূলীয় অঞ্চলের গ্রামগুলো থেকে লোকজনকে সরিয়ে নিতে আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত করেছি।

গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী ভূপেন্দ্র প্যাটেল গত রোববার রাজ্যের জরুরি অপারেশন কেন্দ্র পরিদর্শন করেছেন। যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় সংশ্লিষ্টদের প্রস্তুত থাকতে নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।

ঝড় অতিক্রম না করা পর্যন্ত গুজরাট, কেরালা, কর্ণাটক, মহারাষ্ট্র ও লাক্ষাদ্বীপ উপকূলে জেলেদের সমুদ্রে না যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছে
আইএমডি।

আরব সাগরের ওপর অবস্থানকারী ঘূর্ণিঝড় বিপর্যয়ের প্রভাবে রোববার সন্ধ্যায় মুম্বাইয়ে ফ্লাইট চলাচল ব্যাহত হয়েছে। দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কারণে সেখানে বেশ কিছু ফ্লাইট বাতিল বা বিলম্বিত হয়েছে। আবার কিছু ফ্লাইটের ল্যান্ডিং বাতিল করতে বাধ্য হয়েছে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ।

ঘূর্ণিঝড় বিপর্যয়ের কারণে ভারতের পাশাপাশি জরুরি সতর্কতা জারি করেছে পাকিস্তানও। সিন্ধু ও বেলুচিস্তান কর্তৃপক্ষকে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছে দেশটির সরকার। পাকিস্তান আবহাওয়া বিভাগ (পিএমডি) জানিয়েছে, ১৩ জুন রাত থেকে সিন্ধু ও মাক্রান উপকূলে বজ্রসহ ভারী বৃষ্টির আশঙ্কা রয়েছে।

প্রসঙ্গত, ঘূর্ণিঝড় বিপর্যয়ের নামকরণ করেছে বাংলাদেশ। মূলত বঙ্গোপসাগর ও আরব সাগরে তৈরি হওয়া ঘূর্ণিঝড়গুলোর নামকরণ করে এ অঞ্চলের ১৩টি দেশ। প্যানেল অন ট্রপিকাল সাইক্লোনের কাছে একের পর এক ঘূর্ণিঝড়ের নামের প্রস্তাবিত তালিকা জমা পড়ে। সেখান থেকেই বেছে নেওয়া হয় পরবর্তী ঝড়ের নাম।

ঘূর্ণিঝড় বিপর্যয়ের পরে যে ঝড়টি আঘাত হানবে, তার নাম তেজ। এই নাম প্রস্তাব করেছে ভারত। তেজের পর আসবে ঘূর্ণিঝড় হামুন (ইরান), মিধালি (মালদ্বীপ), মিগজাউম (মিয়ানমার), রিমাল (ওমান), আসনা (পাকিস্তান), ডানা (কাতার), ফিনজাল (সৌদি আরব), শক্তি (শ্রীলঙ্কা), মনথা (থাইল্যান্ড), সেনিয়ার (সংযুক্ত আরব আমিরাত), দিতওয়াহ (ইয়েমেন) প্রভৃতি। সূত্র: এনডিটিভি