গরীব-ধনী সবার জন্য এবারের বাজেট : অর্থমন্ত্রী

Posted on June 3, 2023

অর্থবাণিজ্য ডেস্ক : গরীব-ধনী সব শ্রেণির মানুষের জন্য বাজেট উপহার দেওয়া হয়েছে উল্লেখ করে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছেন, দেশের মানুষের প্রতি আমাদের দায়বদ্ধতা রয়েছে। অন্যান্যা বছরের ন্যায় এবারও আমরা ৭ লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকার প্রস্তাবিত বাজেট বাস্তবায়নে ব্যর্থ হবো না। সরকারের বাজেট বাস্তবায়নের সক্ষমতা রয়েছে।

একইসঙ্গে তিনি স্পষ্ট করে জানান, প্রস্তাবিত বাজেট আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) পরামর্শ মেনে করা হয়নি।

শুক্রবার (২ জুন) আগারগাঁও বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলনে কেন্দ্রে ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেট-পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে অর্থমন্ত্রী এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, আমাদের নিজেদের প্রয়োজন মোতাবেক করা হয়েছে, তবে সংস্থাটির যেসব পরামর্শ আমাদের জন্য ভাল কিংবা গ্রহণযোগ্য সেগুলো নেওয়া হয়েছে। বিশ্বের অন্যান্য দেশও সেটা করে থাকে।

সংবাদ সম্মেলনে কৃষিষমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক, স্থানীয় সরকার মন্ত্রী তাজুল ইসলাম,শিক্ষামন্ত্রী দিপু মনি, পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান, বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি, শিল্পমন্ত্রী নুরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুন, প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক বিষয়ক উপদেষ্টা ড. মসিউর রহমান, পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার, মন্ত্রী পরিষদ বিভাগের সচিব মো. মাহবুব হোসন,জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম, অর্থ বিভাগের সিনিয়র সচিব ফাতিমা ইয়াসমিন, অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব শরিফা খান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। তারা বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দিয়ে অর্থমন্ত্রীকে সহায়তা করেন।

মুস্তফা কামাল বলেন, আগামী অর্থবছরে লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী রাজস্ব আহরণ করা সম্ভব। তিনি বলেন, গত ৫ বছর ধরে যেসব পদক্ষেপ বা প্রাক্কলন গ্রহণ করা হয়েছে, সেগুলো আমরা বাস্তবায়ন করতে পেরেছি। যেটা বাদ আছে সেটা আগামীতে করা হবে।
তিনি জানান, ২০০৯ সালে আওয়ামীলীগ যখন ক্ষমতায় আছে তখন রাজস্ব আয়ের পরিমাণ ছিল ৫৯ হাজার ৪০০ কোটি টাকা, এখন সেটা বেঁড়ে দাঁড়িয়েছে ২ লাখ ৯৫ হাজার কোটি টাকা। তাহলে আমরা যেখানে এখনও পৌঁছাতে পারেনি, সেখানে পৌঁছাতে পারবো।

এক প্রশ্নের উত্তরে জানান অর্থমন্ত্রী বলেন, আমরা ধীরে ধীরে কর্মসংস্থান তৈরি করছি। সরকারের পাশাপাশি বেসরকারিখাতেও উল্লেখ করার মত কর্মসংস্থান হয়েছে।

স্থানীয় সরকার মন্ত্রী তাজুল ইসলাম জানান, ২০০৯ সালে আওয়ামীলগ ক্ষমতায় এলে তখন দেশে মোট কর্মসংস্থানের পরিমাণ ছিল ৪ কোটি ৭৩ লাখ। এখন সেটা বেড়ে হয়েছে ৭ কোটি ১১ লাখ।এ সময়ে প্রায় ৩ কোটি মানুষের কর্মসংস্থান তৈরি করা গেছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।

অপর এক প্রশ্নের উত্তরে এনবিআরের চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম বলেন, রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জনগণের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে করযোগ্য নয় এমন ব্যক্তিদের রিটার্ন দাখিলের ক্ষেত্রে ২০০০ টাকা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।তবে টিআইএন সবার জন্য বাধ্যতামূলক নয়। যেমন আমদানি-রপ্তানিকারক কিংবা বিভিন্ন ব্যবসা-বাণিজ্যের সঙ্গে যারা জড়িত রয়েছেন। গরীব মানুষের জন্য কিন্তু টিআইএন বাধ্যতামূলক নয়।

প্রস্তাবিত বাজেটে কর্পোরেট করহার না কমানোর বিষয়ে তিনি জানান, গত কয়েকবছর ধরে ক্রমান্বয়ে কর্পোরেট করহার কমানো হচ্ছে। গত তিন বছর ২.৫ শতাংশ হারে কমাতে কমাতে কর্পোরেট করহার বর্তমানে ২৭ শতাংশে চলে এসেছে। আরও কমালে রাজস্ব আহরণের জায়গা সংকোচিত হয়ে যায়। দেশের স্বার্থে সেটি করা ঠিক উচিত হবে না।

বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার পুঁজিবাজারের বিষয়ে বলেন, প্রস্তাবিত বাজেটে পুঁজিবাজারের বিষয়ে সুস্পষ্ট করে কোন পদক্ষেপের কথা উল্লেখ না থাকলেও বাজার গতিশীল রাখতে প্রয়োজনীয় নীতি সহায়তা দেওয়া হচ্ছে। কেন্দ্রিয় ব্যাংক ও সরকার সেটি নিয়মিত করে যাচ্ছে।

বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জন্য ৭ লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকার বাজেট উপস্থাপন করেন অর্থমন্ত্রী। প্রস্তাবিত বাজেটে জিডিপি প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ধরা হচ্ছে ৭ দশমিক ৫ শতাংশ। এ ছাড়া মূল্যস্ফীতি ৬ শতাংশের মধ্যে রাখার লক্ষ্যমাত্রা ধার্য করা হয়েছে।