মো. মিজানুর রহমান, এফসিএস: ২০১০ সালের ১৬ই জুন ইনস্টিটিউট অব চার্টার্ড সেক্রেটারিজ অব বাংলাদেশ (আইসিএসবি) এর enactment বা আইন পাশ করার দিন। অর্থাৎ ২০১০ সালের ৭ই জুন মহান জাতীয় সংসদে বাজেট অধীবেশন চলাকালীন সময় পাস হয় চাটার্ড সেক্রেটারিজ এ্যাক্ট ২০১০। সে সময়ে কাউন্সিল সদস্যদের অক্লান্ত পরিশ্রম ও দুরদর্শিতার মাধ্যমে তৎকালীন ইনস্টিটিউট অব চার্টার্ড সেক্রেটারিজ এন্ড ম্যানেজারস অব বাংলাদেশ (আইসিএসএমবি) এর প্রেসিডেন্ট মোঃ আসাদউল্লাহ, এফসিএস এর সফল নেতৃত্বে আলোর দেখা পায় চাটার্ড সেক্রেটারিজ প্রফেশন।
সিএস প্রফেশনের আইনি স্বীকৃতি আদায়ের ক্ষেত্রে সে সময় যাদের অবদান অনস্বীকার্য তাদের সেই ৯ জন আমলা ও সরকারের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের সম্মানিত ফেলো সদস্য প্রদান করে আইসিএসবি‘র ২০১০ সালের পূর্ণগঠিত নতুন পর্ষদ। ৯ জনকে তাদের অনবদ্য অবদানের জন্য দেওয়া হয় আইসিএসবি গোল্ড মেডেল। সেই সাথে চার্টার্ড সেক্রেটারিজ এ্যাক্ট ২০১০ অর্জনে অত্যাবশ্যকীয়, গুরুত্বপূর্ন এবং অসাধারণ অবদানের জন্য মো: আসাদউল্লাহকেও দেওয়া হয় আইসিএসবি গোল্ড মেডেল। সব মিলিয়ে ২০১০ এর কনভোকেশন রুপ নিয়েছিল, ভালোবাসা, ফেলোশিপ আর সদস্যদের বন্ধুত্বের এক মিলন মেলায়।
আইসিএসএমবির সে সময়ের অন্যান্য কাউন্সিলররা হলেন- সিনিয়র সহ সভাপতি সহিদ ফারুকী, ভাইস প্রেসিডেন্ট নন্দ গোপাল চক্রবর্তী, ট্রেজারার এম নাছিমুল হাই, সহ তৎকালীন কাউন্সিল সদস্য মোহাম্মদ সানাউল্লাহ, ইতরাত হোসেন, এম শফিকুল ইসলাম খান, মোঃ আব্দুস ছালাম, আক্তার মতিন চৌধুরী, মনসুর আলম, মোঃ সেলিম রেজা, মোঃ মনিরুল আলম ও এস. আব্দুর রশিদসহ সবাই সে সময়ে সিএস প্রফেশনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন।
যে ৯ জনকে নবগঠিত আইসিএসবি এর সম্মানিত ফেলো দেওয়া হয় তাঁরা হলেন-মোহাম্মদ ফারুক খান (এইচ-০০০১), ব্যারিষ্টার শফিক আহমেদ (এইচ-০০০২), এ্যাডভোকেট লুৎফল হাই (সাচ্চু) (এইচ-০০০৩), ব্যারিষ্টার মওদুদ আহমেদ (এইচ-০০০৪), ডা: এ.বি. মির্জা মোঃ আজিজুল ইসলাম (এইচ-০০০৫), ডা: হোসেন জিল্লুর রহমান (এইচ-০০০৬), মোঃ গোলাম হোসেন (এইচ-০০০৭), সোহেল আহমেদ চৌধুরী (এইচ-০০০৮) এবং ফিরোজ আহমেদ (এইচ-০০০৯)।
২০০৯ সালের ৫ই আগস্ট চার্টার্ড সেক্রেটারিজ বিল কেবিনেট মিটিংয়ে উঠানো হয় এবং ১০ই আগস্ট বিলটি কেবিনেট মিটিংয়ে অনুমোদন পেয়ে ৭ই সেপ্টেম্বর আইন মন্ত্রণালয়ে যায় ভেটিং বা যাচাই-বাছাই এর জন্য। এরই মধ্যে ২৬ই আগস্ট ২০০৯-২০১০ সময়ের জন্য আইসিএসএমবি‘র কাউন্সিল নির্বাচন সম্পন্ন হয় এবং পুনরায় মো: আসাদউল্লাহকে কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন করা হয়।
অন্যদিকে, চাটার্ড সেক্রেটারিজ বিল আইন মন্ত্রণালয়ে যাচাই-বাচাই শেষে ২০১০ সালের ১৫ই ফেব্রুয়ারী কেবিনেট মিটিংয়ে চুড়ান্ত অনুমোদন পায় চাটার্ড সেক্রেটারিজ বিল ২০১০। পরবর্তীতে তৎকালীন বাণিজ্যমন্ত্রী মো: ফারুক খান বিলটি পাশের জন্য মহান সংসদে উপস্থাপন করেন। সে সময় আইনটি পাশে আবার জটিলতা দেখা দিলে কাউন্সিল প্রেসিডেন্ট মো: আসাদউল্লাহ কাউন্সিল সদস্য মো: সানাউল্লাকে সাথে নিয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সংশ্লিষ্ট সংসদীয় কমিটিতে বিলটি পাশের পক্ষে যুক্তি উপস্থাপনের জন্য সেখানে যান। অবশেষে জাতীয় সংসদ ভবনে বানিজ্যমন্ত্রী ও সংসদীয় কমিটি দ্বারা কোনরূপ পরিবর্তন ছাড়া চাটার্ড সেক্রেটারিজ এ্যাক্ট ২০১০ পাশ করানোর জন্য তারা গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করেন।
তারপর তৎকালীন আওয়ামীলীগ সরকারের বানিজ্যমন্ত্রী মো: ফারুক খান এবং বানিজ্য মন্ত্রনালয় বিষয়ক সংসদীয় কমিটির সভাপতি এ্যাডভোকেট লুৎফল হাই (সাচ্চু) (এইচ-০০০৩) এর সহযোগিতায় আইসিএসএমবি এর তৎকালীন কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট মো: আসাদউল্লাহ, ড্রাফট আইনটি আবার মহান সংসদে পাশের জন্য উত্থাপন করার ব্যবস্থা করেন।
অতপর, সেই মাহেন্দ্রক্ষণ বাজেট অধিবেশন ৭ই জুন ২০১০ পাশ হয়ে যায় মহান জাতীয় সংসদে চার্টার্ডসেক্রেটারিজ এ্যাক্ট ২০১০। মুহূর্ত্বের মধ্যে খবরটি ছড়িয়ে যায় এক কান, দুই কান বহুকান হয়ে চাটার্ড সেক্রেটারিজ প্রফেশনের সকল সদস্যদের মধ্যে, বয়ে যায় আনন্দের বন্যা। শুরু হয়ে যায় দিনটিকে স্বরণীয় করে বরণ করার জন্য দিনক্ষন। অবশেষে ৭ থেকে ১১ জুন ২০১০ চার্টার্ড সেক্রেটারী সদস্যদের মধ্যে বয়ে চলে চাপা আনন্দের উল্লাস যার বহিপ্রকাশ ঘটে ১২ জুন ২০১০। ঢাকার গুলশানে ইসপেক্টা কনভেনশন সেন্টারে দুই শতাধিক মেম্বারদের উপস্থিতিতে উৎযাপিত হয় গ্রান্ড সেলিব্রেশন অব চার্টার্ড সেক্রেটারিজ এ্যাক্ট ২০১০ যা পরবর্তীতে জুনের ১৬ তারিখে গেজেট আকারে প্রকাশ পায়।
চার্টার্ড সেক্রেটারিজ এ্যাক্ট ২০১০ মহান সংসদে পাশ হওয়ার পর প্রতি বছর ১৬ই জুন আইসিএসবি তার সদস্যদের জন্য একটি বড় উৎসবের আয়োজন করে, সেলিব্রেট হয় সিএস enactment দিবস এবং স্বরণ করা হয় তাদেরকে, যাদের সময়, শ্রম ও মেধার কল্যাণে চার্টার্ড সেক্রেটারিজ প্রফেশন আইনি স্বীকৃতি পায়। এবং আলোচনা করা হয় আওয়ামীলীগ সরকারের যাদের সদিচ্ছা ও সহযোগিতার কারণে চার্টার্ড সেক্রেটারিজ এ্যাক্ট ২০১০ মহান সংসদে পাশ হয়। পাশাপাশি ঐ দিন আইসিএসবির সদস্যদের চার্টার্ড সেক্রেটারিজ প্রফেশনে তাদের সুখ-দুঃখ, হাসি-কান্না ও অভিজ্ঞতা শেয়ার করে থাকেন। অর্থ্যাৎ ১৬ই জুন সকল চার্টার্ড সেক্রেটারিজ সদস্যদের আইন স্বীকৃত আনন্দের দিন।
সিএস এ্যাক্ট ২০১০ উৎযাপনের দিন সদস্যদের মিলন মেলা ও প্রফেশনকে সেলিব্রেট করার মহান দিন, ২০১০ পরবর্তী সদস্যদের চোখে আলো ছড়াবার দিন, সবকিছু মিলে নতুন ও পুরাতন সদস্যদের জানা-বোঝার দিন হল ১৬ই জুন। ২৬ মার্চ যেমন সমগ্র বাঙ্গালী জাতির কাছে মহান ও গৌরবের, ১৬ই ডিসেম্বর যেমন বাংলার মানুষের বিজয় অর্জনের দিন, ঠিক তেমনই আমার, আপনার, সিএস প্রফেশনে আমাদের সবার জন্য ১৬ই জুন মহান গৌরবের এবং বিজয়ের দিন।
লেখক: সম্পাদক, কর্পোরেট সংবাদ ও পুঁজিবাজার বিশ্লেষক।
তথ্য সুত্র: 6th National Convention of ICSB and Journals of the Institute.
© ২০২৩ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত | কর্পোরেট সংবাদ সম্পাদক - মোঃ মিজানুর রহমান । উপদেষ্টা সম্পাদক- জেসমিন আক্তার, এফসিএস ই-মেইলঃ corporatesangbad@gmail.com । ফোনঃ ০২২২-৩৩৫৪১২৫ । মোবাইলঃ ০১৭১১০৭৬৮১৫ অফিসঃ ৫৫/বি, নোয়াখালী টাওয়ার, ১১ তলা, সুইট ১১-এফ, পুরানা পল্টন, ঢাকা ১০০০ |
আজ ১৬ই জুন চার্টার্ড সেক্রেটারিজ দিবস https://corporatesangbad.com/3077/ |