বর্তমান প্রেক্ষাপটে করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব রোধকল্পে চলছে দেশব্যপী লকডাউন। এমতাবস্থায় খেটে খাওয়া মানুষ, নিম্নমধ্যবিত্ত, মধ্যবিত্ত এবং যারা ছোট পরিসরে ব্যবসাবানিজ্য বা দোকানপাট পরিচালনা করে জীবিকা নির্বাহ করেন তারা পড়েছেন সীমাহিন দুর্ভোগে। আমাদের মত স্বল্প আয় ও অনুন্নত দেশে এক মাসের অধিক সময় কারো পক্ষেই নিজস্ব উপার্জন ব্যতিরেকে পরিবার পরিজন নিয়ে টিকে থাকা সম্ভব না। সরকার, বিভিন্ন দাতা সংস্থা, দাতব্য প্রতিষ্ঠান এবং সমাজের বিত্তবান শ্রেনীর যারা এই দূর্ভোগ দূর্যোগের সময় সাহায্যের হাত বাড়িয়েছেন তারাই বা কতদিন ১৬ কোটি মানুষের দশ কোটি পরিবারকে সাহায্য ও সহযোগীতা অব্যাহত রাখতে পারবেন তা নিশ্চিত করে বলা খুবই কঠিন। সুতরাং যারা দেশ, সমাজ তথা রাষ্ট্র পরিচালনা করছেন এবং আমরা যারা সাধারন নাগরিক সবাইকে একটা নিয়মের মধ্যে থেকে সবার স্বার্থে সীমিত আকারে সবকিছু চালু রাখা যেতে পারে। যেমন যে সমস্ত প্রতিষ্ঠানে সবার শারীরিক উপস্থিতি প্রয়োজন নেই তারা ডিজিটাল প্লাটফর্ম এ ঘরে বসেই নিজের মত করে অনেকে প্রতিষ্ঠানের কাজ করতে পারেন ।
মানুষের প্রয়োজনের কথা চিন্তা করেই বর্তমান সরকার হাসপাতাল, পুলিশ প্রশাসন, স্বসস্ত্র বাহীনি ও ব্যাংক খোলা রেখেছেন। স্বাভাবিক ভাবেই এসকল প্রতিষ্ঠানে কর্মরত সবাই সবচেয়ে বেশি স্বাস্থ্যঝুকিতে আছেন। কিন্তু তারপরেও তারা মানুষের জন্য কাজ করছেন। একইভাবে দেশের অর্থনীতিকে সচল রাখার ক্ষেত্রে এবং জনগনের মৌলিক ও প্রতিটি পরিবারের অর্থনৈতিক চাহিদা পূরণের জন্য অত্যন্ত স্বল্প পরিসরে কঠোর নিয়ম কানুনের মধ্যে থেকে যদি আমরা সবাই নিজ নিজ ক্ষেত্রে নিজ দায়িত্বে পরিচালিত হই তাহলে অন্তত না খেয়ে মানুষ মারা যাবে না। সামনে রোজার মাস যদি সকল প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকে সকল মানুষ এভাবে ঘরে বসে থাকে তাহলে যাদের নিজস্ব ব্যাংক ব্যালেন্স রয়েছে তারাই শুধু বর্তমান পরিস্থিতিতে টিকে থাকতে পারবে। এমতাবস্থায় প্রতিটি মানুষের মৌলিক চাহিদা পূরণের জন্য কিছু প্রতিষ্ঠান স্বল্প পরিসরে খোলা রাখা যেতে পারে, যেমন- উৎপাদনশীল কারখানা, রপ্তানিমুখী প্রতিষ্ঠান, আমদানি রপ্তানি কার্যক্রম, ব্যাংক, ডাকঘর সঞ্চয় ব্যাংক, জাতীয় সঞ্চয় পত্রের মুনাফা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান, পুঁজিবাজার, সিডিবিএল, গণমাধ্যম, কৃষিপন্য উৎপাদন ও বিপননের সাথে সম্পৃক্ত সকল প্রতিষ্ঠান এবং মানুষের পুঁজি/বিনিয়োগ/সঞ্চয় আটকে আছে এমন প্রতিষ্ঠান। উৎপাদন বন্ধ থাকলে একটা সময় পরে দেশে খাদ্য ঘাটতি দেখা দেবে এবং দেশের মানুষ পড়বে দূর্ভিক্ষের কবলে। বিশ্বব্যাপী বর্তমান করোনা পরিস্থিতি দীর্ঘায়িত হলে এক দেশ অন্যদেশ কে খাদ্য সাহায্য দেবে না ফলে বিশ্বে দেখা দেবে চরম বিপর্যয়।
করোনা প্রতিরোধে নিয়ম কানুন কঠোরভাবে পরিপালনে মানুষকে বাধ্য করার জন্য সরকার চাইলেই দেশব্যপী জরুরী অবস্থা ঘোষনা করতে পারেন। তাহলে উপরোক্ত প্রতিষ্ঠানগুলি খোলা থাকলেও নিতান্তই প্রয়োজন ছাড়া কেউ ঘরের বাইরে যাবে না। সরকারের পক্ষে কোনভাবেই একমাসের অধিক সময় জনগনকে ঘরে আটকে রাখা সম্ভব হবে না। তা না হলে খেটে খাওয়া মানুষ পেটের তাগিদেই একসময় সরকারের নির্দেশ লঙ্ঘন করতে শুরু করবে। তখন দেখা দেবে চরম বিপর্যয় যা রোধ করা সম্ভব হবে না। যারা গ্রামে ফিরে গেছেন তাদেরকে গ্রামেই কৃষি কাজের সাথে সর্ম্পকৃত করে রাখার ব্যবস্থা করতে হবে, কোন অস্থায়ী শ্রমিক যেন এখন কোন ভাবেই ঢাকায় ঢুকতে না পারে তা খুব কঠোর ভাবে নিয়ন্ত্রন করতে হবে।
বর্তমান বিশ্বে কমবেশি সব দেশেরই অর্থনৈতিক মন্দা চলছে বাংলাদেশও এর বাইরে না। অর্থনীতিকে চাঙ্গা রাখতে স্বল্প পরিসরে মৌলিক চাহিদা পূরণের জন্য সম্পৃক্ত সকল প্রতিষ্ঠান খোলা রাখা প্রয়োজন। অন্যথায় সারাদেশে নেমে আসতে পারে মানবিক বিপর্যয় যা আমাদের কারোরই কাম্য নয়।
© ২০২৩ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত | কর্পোরেট সংবাদ সম্পাদক - মোঃ মিজানুর রহমান । উপদেষ্টা সম্পাদক- জেসমিন আক্তার, এফসিএস ই-মেইলঃ corporatesangbad@gmail.com । ফোনঃ ০২২২-৩৩৫৪১২৫ । মোবাইলঃ ০১৭১১০৭৬৮১৫ অফিসঃ ৫৫/বি, নোয়াখালী টাওয়ার, ১১ তলা, সুইট ১১-এফ, পুরানা পল্টন, ঢাকা ১০০০ |
লকডাউনে কতিপয় প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম চালু রাখা প্রয়োজন https://corporatesangbad.com/289469/ |