জমজ ৪ কন্যার দায়িত্ব নিলেন চুয়াডাঙ্গার জেলা প্রশাসক

Posted on May 10, 2023

চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধি: কন্যা সন্তান একটা পরিবারের জন্য আল্লাহর দেয়া আলাদা নেয়ামত। এই চার কন্যার জন্যই আল্লাহ এই পরিবারের সবকিছুতে বরকত দিবে এবং আলাদা রিজিকের ব্যবস্থা করে দিবেন। কথাগুলো বলেন, চুয়াডাঙ্গার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আমিনুল ইসলাম খান।

একই সাথে জন্মগ্রহন করা চার কন্যাকে দেখতে বুধবার বেলা দেড়টার দিকে শহরের আঁখিতারা জেনারেল হাসপাতালে যাওয়ার পর ওই পরিবারের উদ্দেশ্য করে কথাগুলো বলেন তিনি। এসময় তিনি জন্মগ্রহন করা ওই চার কন্যার মা কল্পনা খাতুনকে ফুল ও মিষ্টি দিয়ে শুভেচ্ছা জানান। একই সাথে চিকিৎসার ব্যায় হিসেবে কল্পনা খাতুনের স্বামী চুয়াডাঙ্গা জেলার দামুড়হুদা উপজেলার জুড়ানপুর ইউনিয়নের বিঞ্চপুর গ্রামের দক্ষিণ পাড়ার রাজমিস্ত্রী মাহবুবুর রহমানের হাতে নগদ ১০ হাজার টাকা তুলে দেন। সেই সাথে কল্পনা খাতুন ও তার চার কন্যার শারীরিক খোঁজ খবর নেন।

এ সময় জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আমিনুল ইসলাম খান বলেন, একই সাথে চার কন্যা সন্তানের জন্মগ্রহনের খবর বুধবার রাতে জানতে পেরেছি। দিনমজুর বাবার ঘরে একই সাথে চার কন্যা সন্তান আল্লাহর নিয়ামত ছাড়া আর কিছুই না। খোঁজ নিয়ে জেনেছি ওই পরিবার খুবই দরিদ্র। সৃষ্টিকর্তার অশেষ রহমাত তিনি আমাকে যথেষ্ট দিয়েছেন। আমি যেখানেই যে অবস্থায় থাকিনা কেন আজীবন এই চার কন্যার খোঁজ খবর নিবো। আমার সামর্থ অনুযায়ী তাদেরকে সহযোগীতা করবো। সমাজের স্বামর্থবানদের এই চার কন্যার পাশে থাকার আহ্বান জানান জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আমিনুল ইসলাম খান।

চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের গাইনী কনসালটেন্ট ডা. আকলিমা খাতুন বলেন, বুধবার যখন কল্পনা খাতুনের শরীরে অস্ত্রপচার করি তখন প্রসুতির শরীর ফুলে যায় এবং প্রেসার বেড়ে যায়। তারপরও অস্ত্রপচার করতে হয়েছে। ওই রোগীর আল্ট্রসনোগ্রাম রিপোর্টে ৩ টার বাচ্চার আলামত পাওয়া গেছে। অন্ত্রপচারের পর প্রথমে ৩ টা কন্যা সন্তান বের করা হয়। অস্ত্রপচার শেষে ভিতরে কোন সমস্যা আছে কিনা দেখতেই আরেকটা বাচ্চার আলামত পেয়ে যায়। তাকেও বের করা হয়। মা ও চার কন্যা সন্তানেকে আশঙ্কামুক্ত বলা যাবেনা।

চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের শিশু কনসালটেন্ট ডা. মাহবুবুর রহমান মিলন বলেন, ওই চার কন্যা সন্তানদের যখন হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তখন তারা আমার তত্ত্বাবধানে ছিলো। তারা কিছুটা অপুষ্ট। অক্সিজেন ছাড়াই বর্তমানে তারা সুস্থ আছে এবং তাদের শারীরিক অবস্থা ভালো আছে।

উল্লেখ্য, মঙ্গলবার সন্ধা সাড়ে ৬ টার দিকে চুয়াডাঙ্গা শহরের আঁখিতারা জেনারেল হাসপাতালে সিজারিয়ানের মাধ্যমে চার কন্যা সন্তান জন্মগ্রহন করে। কন্যা সন্তানদের বাবা দিনমজুর হওয়ায় তিনি হতাশাগ্রস্থ হয়ে পড়েন। তার হতাশার খবরে চুয়াডাঙ্গার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আমিনুল ইসলাম খান বুধবার চার কন্যা সন্তান ও তাদের পরিবারের খোঁজ খবর নিতে ক্লিনিকে যান।