বন্ধের নির্দেশনা মানছে না চুয়াডাঙ্গার কোচিং সেন্টারগুলো

Posted on May 7, 2023

আহসান আলম, চুয়াডাঙ্গা: চলতি বছরে এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁস ঠেকাতে দেশের সব ধরনের কোচিং সেন্টার বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রনালয়। শিক্ষামন্ত্রীর নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে অবাধে চলছে চুয়াডাঙ্গা শহরের সকল কোচিং সেন্টার। কোচিং সেন্টার বন্ধের নির্দেশনার পরও কেনো খোলা রাখা হয়েছে সে বিষয়ে কোন সদুত্তর দিতে পারেননি জেলা শিক্ষা অফিসার। চুয়াডাঙ্গা শহরের মুক্তিপাড়া, কাঠপট্টি এলাকা, সরকারি কলেজের পাশে, পাসপোর্ট অফিস সড়ক, চক্ষু হাসপাতাল পাড়া, ঈদগাহ পাড়াসহ বিভিন্ন এলাকায় বেশ কয়েকটি কোচিং সেন্টারে ধরা পড়ে বিভিন্ন শ্রেণির শিক্ষার্থীদের ক্লাস করানোর চিত্র।

এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য কোচিং সেন্টার হলো, মুক্তিপাড়ায় আব্দুস সালামের রংধনু কোচিং সেন্টার, সিনেমা হল পাড়ায় মুনজুরুল ইসলামের স্টাডি হোম, স্মার্ট কোচিং সেন্টার, সিনেমা হল পাড়ায় শাহীন আলম, চক্ষু হাসপাতাল পাড়ার দোস্ত মোহাম্মদ ও মরিয়ম খাতুনের রেডিয়েন্ট স্টাডি কেয়ারসহ আরও অনেক কোচিং সেন্টার।

কোচিং সেন্টারের মালিকদের অনেকের দাবি তারা সরকারি কোন নির্দেশনা এখনও পাইনি। আবার অনেকে বলছেন শিক্ষার্থীদের কোর্চ সম্পন্ন না হওয়ার কারনে তারা তাদের কোচিং সেন্টার খোলা রেখেছে। এর মধ্যে চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজের অনেক শিক্ষকও আছেন।

তবে, প্রশাসন চাইলেই প্রতিটি কোচিং সেন্টারের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ চেক করলেই তারা সঠিক তথ্য পেয়ে যাবেন। অথবা যেখানে পড়ানো হয় সেই রোডের আশেপাশের বাড়ির মালিকদের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ চেক করলেও সবকিছু পরিস্কার হয়ে যাবে।

কোচিং সেন্টার খোলা রাখার কথা প্রতিটা কোচিং সেন্টারের মালিক স্বীকার করে বলেন, আমরা শিক্ষার্থীদের স্বার্থে কোচিং সেন্টার খোলা রেখেছি। বর্তমানে আমরা সকল শ্রেণির ব্যাচ চালু রাখলেও এসএসসি পরীক্ষার্থীদের পড়াই না। এসএসসি পরীক্ষাকে কেন্দ্র করে মাসখানেক কোচিং সেন্টার বন্ধের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে কেন খোলা রাখা হয়েছে, সেই প্রশ্নের নেই কোনো সদুত্তর। তবে কোচিং সেন্টার বন্ধে সরকারি নির্দেশনা থাকার পরও কোচিং কর্তৃপক্ষ খোলা রাখায় তারা ক্লাসে আসছে বলে দাবি অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের।

নাম প্রকাশ না করার স্বর্থে শিক্ষার্থীরা বলেন, আমরা কোচিং এর স্যারদের নির্দেশে বাধ্য হয়ে কোচিং এ আসি। এ মাসে না আসলেও বেতন ঠিকই কোচিং’কে দিতে হবে। এ বিষয়ে কোচিং সেন্টারের পরিচালকদের জিজ্ঞাসা করেন, তারা বন্ধ রাখলে আমরা আসতাম না।

নাম একাশে আনচ্ছুক একজন অভিভাবক বলেন, আমাদের প্রশ্ন করার প্রয়োজন নেই, আমরা পরিস্থিতির শিকার। কিছু বলতেও পারবো না। পড়তে না আসলেও এই মাসের দিতে হবে। নইলে পরের মাসে বলবে, নতুন করে ভর্তি হতে হবে।
চুয়াডাঙ্গা জেলা শিক্ষা অফিসার আতাউর রহমান বলেন, অনেক সময় শহরে হাটতে বের হই তখন কোন কোচিং সেন্টার খোলা রাখা দেখিনি। তবে, এধরনের কোন অভিযোগ পেলে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এ বিষয়ে চানতে চাইলে চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার শামীম ভুইয়া বলেন, নিষেধাজ্ঞা অমান্য করলে ব্যাক্তি বা প্রতিষ্ঠান যেই হোক আমরা তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।

প্রসঙ্গত: এসএসসি পরীক্ষাকে কেন্দ্র করে প্রশ্নপত্র ফাঁস ও গুজবপ্রতিরোধে ২৬ এপ্রিল থেকে ২৩ মে পর্যন্ত সব ধরনের কোচিং সেন্টার বন্ধ রাখার নির্দেশ দেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি।