মুজাফফর আহমেদ এফসিএমএ, এফসিএস, ইনস্টিটিউট অব চার্টার্ড সেক্রেটারিজ অব বাংলাদেশ (আইসিএসবি) এর প্রেসিডেন্ট। একইসঙ্গে তিনি বাংলাদেশের প্রথম ঋণমান নির্ণয় (ক্রেডিট রেটিং) প্রতিষ্ঠান ক্রেডিট রেটিং ইনফরমেশন অ্যান্ড সার্ভিসেস লিমিটেডের (ক্রিসল) প্রেসিডেন্ট ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও)। তার হাত ধরেই দেশের ব্যাংক বীমাসহ বিভিন্ন বাণিজ্য প্রতিষ্ঠানের ঋণমান নির্ণয় শুরু হয়। তার দেখানো পথেই দেশের ক্রেডিট রেটিং খাত বর্তমান অবস্থায় আসতে পেরেছে। এছাড়া এশিয়া অঞ্চলের ক্রেডিট রেটিং এজেন্সিগুলোর সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব ক্রেডিট রেটিং এজেন্সিসের (এসিআরএএ) প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ক্রিসল। দীঘ ৪২ বছরের কর্মজীবনে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করেন তিনি। সম্প্রতি আইসিএসবি’র চতুর্থ কাউন্সিলের প্রথম সভায় মুজাফফর আহমেদ আইসিএসবি’র প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন। তিনি আইসিএসবি’র প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ও একজন ফেলো সদস্য। এর আগে তিনি ১৯৯৭-২০০৪ মেয়াদেও ইনস্টিটিউটের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। সম্প্রতি তার ব্যক্তিগত ও কর্মজীবন, আইসিএসবি’র সার্বিক পরিস্থিতি ও ভবিষ্যত কর্মপরিকল্পনা এবং পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর প্রাতিষ্ঠানিক সুশাসনের বিষয়ে অনলাইন নিউজ পোর্টাল কর্পোরেট সংবাদ এর সঙ্গে কথা বলেন তিনি। সাক্ষাৎকারটি নিয়েছেন পত্রিকাটির সম্পাদক মো. মিজানুর রহমান, এফসিএস ও প্রধান প্রতিবেদক নুরুজ্জামান তানিম।
কর্পোরেট সংবাদ : আপনার শৈশব, কৈশোর ও শিক্ষাজীবন সম্পর্কে জানতে চাই, যদি কিছু বলেন?
মুজাফফর আহমেদ : আমার জন্ম চট্টগ্রামের সাতকানিয়ায়। লেখাপড়া করেছি গ্রামে। আমি প্রচুর লেখা পড়া করতাম। লেখাপড়া করার কারণেই আমার একাডেমিক রেজাল্ট খুবই ভালো ছিল। আমার স্কুলের নাম ছিল এ.কে.বি.সি. ঘোষ ইনস্টিটিউট। ওখান থেকে আমি তৎকালীন কুমিল্লা বোর্ডে ষষ্ঠতম হয়ে এসএসসি পাশ করি। পরে এইচএসসি পড়ার জন্য চট্টগ্রাম কমার্স কলেজে ভর্তি হই। ওখান থেকে এইচএসসি এবং হিসাব বিজ্ঞান বিভাগে অনার্স (সম্মান) ডিগ্রি অর্জন করি। পরবর্তীতে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মাস্টার্স ডিগ্রি অর্জন করি। যেদিন আমার মাস্টার্সের রেজাল্ট প্রকাশ পায়, ঠিক ওই দিনই চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে হিসাব বিজ্ঞান বিভাগে প্রভাষক হিসেবে কাজে যোগদান করি। তবে আমি বেশি দিন শিক্ষকতা করি নাই। বছরখানেক পর আমি শিক্ষকতা ছেড়ে বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশনে (বিএসসি) চলে যাই। বেতনের পার্থক্যের কারণে আমি শিপিং কর্পোরেশনে চলে আসি। কারণ চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে বেতন ছিল ৭৫০ টাকা। আর শিপিং কর্পোরেশনে বেতন ছিল ৩ হাজার টাকা। সে জন্যই মূলত শিপিং কর্পোরেশনে চলে আসা।
কর্পোরেট সংবাদ : বর্তমানে আপনি ক্রেডিট রেটিং ইনফরমেশন অ্যান্ড সার্ভিসেস লিমিটেডের প্রেসিডেন্ট ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) হয়েও কীভাবে আইসিএসবি’র প্রেসিডেন্টের মতো গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করছেন?
মুজাফফর আহমেদ : আমার জীবনের একটা ইচ্ছা ছিল নতুন নতুন কিছু ইনস্টিটিউট করব। সে জন্যই ক্রেডিট রেটিংয়ের দিকে আমি চলে যাই। সেখানে প্রতিষ্ঠা করি ক্রিসল। এটি বাংলাদেশের প্রথম রেটিং প্রতিষ্ঠান। বর্তমানে ক্রিসলে আমি প্রেসিডেন্ট ও সিইও হিসেবে দায়িত্ব পালন করছি। তবে এবার দীর্ঘ ১৫ বছর বিরতি দিয়ে সদস্যদের অনুরোধে আইসিএসবি’র কাউন্সিল নির্বাচন করতে হয়েছে। নির্বাচনে জয়ী হবার পর কাউন্সিল আমাকে প্রেসিডেন্ট হিসেবে নির্বাচিত করে। সে হিসেবে বর্তমানে এ প্রতিষ্ঠানের সঙ্গেই আছি। আসলে এখানে প্রেসিডেন্ট নিজে কাজ করে না। এটা একটা কমিটি কেন্দ্রীক প্রতিষ্ঠান। কমিটি যদি সঠিকভাবে কাজ করে, তাহলেই প্রতিষ্ঠানের যেসব চাহিদা বা প্রয়োজন রয়েছে তা পরিপূর্ণ হবে। যেমন- এডুকেশন কমিটি যদি ঠিকমতো কাজ করে তাহলে আমাদের ভবিষ্যত পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা সম্ভব হবে। আমরা এ বছরের প্রথম থেকেই পরিকল্পনা করে নিয়েছি যে, কোন কোন সেক্টরে ডেভেলপমেন্ট করব। এছাড়া কোথায় কোথায় দুর্বলতা রয়েছে এবং কীভাবে তা সবল করব। আমরা সে পরিকল্পনা অনুযায়ী এখন এগিয়ে যাচ্ছি। আমাদের অন্যান্য কমিটির চেয়ারম্যানরা খুব গুরুত্ব দিয়ে কাজ করছেন। কারণ তাদেরকে কাউন্সিল মিটিংয়ে কাজের অগ্রগতি নিয়ে জবাবদিহিতা করতে হবে। সে হিসেবে আমি প্রতিদিনেই আইসিএসবিতে যাই। ফলে এ দুই জায়গাতে কাজ করতে আমার অসুবিধা হচ্ছে না।
কর্পোরেট সংবাদ : কস্ট অ্যাকাউন্টেন্ট হয়েও চার্টার্ড সেক্রেটারি প্রফেশন প্রতিষ্ঠায় কেন উদ্যোগ নিলেন?
মুজাফফর আহমেদ : আমি একজন কস্ট অ্যাকাউন্টেন্ট। তবে আমি প্রকৃতপক্ষে সারা জীবনই ছিলাম এডমিনিসট্রেটর। আমি কস্ট অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট অ্যাকাউন্টের পরিচালক পদে থাকলেও প্রফেশনাল এডুকেশন ডেভেলপমেন্টের জন্য কাজ করেছি। কাজেই ওটা করতে গিয়ে দেখেছি, অন্যান্য দেশে চার্টার্ড অ্যাকাউন্টেন্ট ও কস্ট অ্যাকাউন্টেন্ট এর পাশাপাশি আরেকটি স্টাবলিস্টড প্রফেশনাল ইনস্টিটিউট রয়েছে। সেটা হলো- চার্টার্ড সেক্রেটারি। আমি একবার পাকিস্তানের রাজধানী করাচিতে কস্ট অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট অ্যাকাউন্টেন্ট এর একটি কাজে যাই, তখন লাহোর ইউনির্ভারসিটির প্রফেসর খাঁজা আমজাদ সাইদ আমাকে চার্টার্ড সেক্রেটারি ইনস্টিটিউট গঠনের বিষয়ে পরামর্শ দেন। এরই ধারাবাহিকতায় ১৯৯৬ সালে আমরা বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের লাইসেন্স নিয়ে দেশেই ইনস্টিটিউট অব চার্টার্ড সেক্রেটারিজ অ্যান্ড ম্যানেজারস অব বাংলাদেশ (আইসিএসএমবি) প্রতিষ্ঠা করি। পরবর্তীতে ১৯৯৭ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে ইনস্টিটিউটটির কার্যক্রম চালু করা হয়। সে সময় থেকেই আমাদের উদ্দেশ্য ছিল- চার্টার্ড অ্যাকাউন্টেন্ট ও কস্ট অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট অ্যাকাউন্টেন্ট এর পাশাপাশি প্রাতিষ্ঠানিক সুশাসন প্রতিষ্ঠা করা।
কর্পোরেট সংবাদ : দীর্ঘ ১৫ বছর বিরতি দিয়ে কেন আবার এ প্রফেশনে ফিরে এলেন?
মুজাফফর আহমেদ : আবার এ ইনস্টিটিউটে ফিরে আসার একটি উদ্দেশ্য রয়েছে। আসলে ইনস্টিউটটি যেভাবে আগানোর দরকার সেভাবে আগাচ্ছে না। অর্থাৎ অর্থনীতি যেভাবে এগিয়ে যাচ্ছে সেইসঙ্গে কর্পোরেট গভর্নেন্সের যেসব রুলস রেগুলেশন আসতেছে, সে হিসেবে আমাদের প্রফেশনাল অ্যাক্টিভিটিস অনেকটা অপ্রতুল। তাই ইনস্টিটিউটিকে আরো গতিশীল করার জন্য দায়িত্ব নিয়েছি। আমি মনে করি, সকলের সার্বিক প্রচেষ্টায় ইনস্টিটিউটি আরো গতিশীল হবে। এছাড়া ইনস্টিটিউটের সদস্যরা চেয়েছেন, এবার যেন আমি আইসিএসবি’র কাউন্সিলে আসি। তারা মনে করেছেন, বিভিন্ন সেক্টরে আমার যে সম্পৃক্ততা রয়েছে, সেটা সদস্যদের উন্নয়নে কাজে লাগবে। সে জন্য অন্যান্য ব্যস্ততার পরেও এই ইনস্টিটিউটে আমি সময় দিচ্ছি। এ জন্যই এবারের আইসিএসবি’র কাউন্সিলে সংযুক্ত হয়েছি।
কর্পোরেট সংবাদ : আইসিএসবি’র প্রফেশনের জন্য কি ভূমিকা রাখতে চান?
মুজাফফর আহমেদ : চার্টার্ড সেক্রেটারি ফার্মের সংখ্যা বাড়ানোর লক্ষ্যে আমর কিছু দীর্ঘ ও স্বল্পমেযাদী পরিকল্পনা রয়েছে। স্বল্পমেযাদী পরিকল্পনার মধ্যে রয়েছে- বর্তমানে যেসব ফার্ম রয়েছে তারা যাতে রেপুটেডলি কাজ করতে পারে, তাদের অডিট প্রোগ্রাম কি হবে, তাদের কোন কোন এরিয়া দেখা উচিত, কমনলি বা উনিফর্মলি কীভাবে দেখবে, এসব এস্টেজগুলো আমরা এখন দেখতেছি। আর অন্যান্য দেশের মতো এ প্রফেশনের প্রাক্টিসটা বাড়ানোর জন্য নতুন নতুন ক্ষেত্র খুঁজে বের করার চেষ্টা করছি। জয়েন্ট স্টক সংক্রান্ত বিভিন্ন কাজ বা বার্ষিক রিটার্ন জমা দেয়ার ক্ষেত্রে চার্টার্ড সেক্রেটারির দ্বারা নিরীক্ষণ বা অনুমোদন নেয়া বাধ্যতামূলক করা যেতে পারে। এটা করতে পারলেই আমাদের সদস্য সংখ্যা বেড়ে যাবে। তবে রেজিস্ট্রার অব জয়েন্ট স্টক কোম্পানিজ অ্যান্ড ফার্মস (আরজেএসসি) জানিয়েছে, এ বিষয়টা দেখতে হবে, এটা সময় সাপেক্ষ ব্যাপার। এটা করতে গেলে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সহযোগীতা লাগবে। কারণ এর মধ্যে কোম্পানি আইনের সম্পৃক্ততা রয়েছে। তবে এটা বাস্তবায়ন হতে সময় লাগবে। একইসঙ্গে এই ইনস্টিটিউটকে কীভাবে স্ট্যান্ডর্ডারাইজড করা যায়, কীভাবে অডিট প্রোগ্রাম করা যায়, কীভাবে একটি ফার্মের সঙ্গে অন্য আরেকটি ফার্মের তুলনা করা যায় সে লক্ষ্যে কাজ করছি। তাই একটি বিশেষ কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটি একটি সেক্রেটারিয়াল স্ট্যান্ডার্ড তৈরি করছে। সেই স্ট্যান্ডর্ড অনুযায়ী কাজ হচ্ছে কি-না তা দেখার জন্য প্রাইভেট প্রাক্টিস প্রোমশনের জন্য আরেকটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। ইতোমধ্যে একটি খসড়া অডিট প্রোগ্রাম তৈরি করেছে। এটা এখনও ফাইনালাইজড হয়নি।
কর্পোরেট সংবাদ : ফাইন্যান্সিয়াল অডিটে অডিটর প্যানেল রয়েছে, কমপ্লায়েন্স অডিটে তা নেই। এ বিষয়ে আইসিএসবি’র ভূমিকা কি?
মুজাফফর আহমেদ : বাংলাদেশ ব্যাংক ও বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) পৃথক অডিটর প্যালেন রয়েছে। এসব প্যানেলের আওতাভুক্ত অডিটর ফাইন্যান্সিয়াল রিপোর্টিং কাউন্সিলের (এফআরসি) অনুমোদন সাপেক্ষে কাজ করছে। কিন্তু আইসিএসবি’র মাত্র ৬/৭টি ফার্ম রয়েছে। তাই এতো স্বল্প ফার্ম দিয়ে প্যানেল করা সম্ভব হবে না। তবে ফার্মের সংখ্যা বাড়লে বিএসইসি এ বিষয়টি নিয়ে চিন্তা করবে বলে জানিয়েছে। তাই এ মুহূর্তে কমপ্লায়েন্স অডিটর প্যানেল গঠন করার আগে কীভাবে আরো চার্টার্ড সেক্রেটারি প্রাক্টিসিং ফার্মের সংখ্যা বাড়ানো যায় সে লক্ষ্যে আমরা কাজ করছি।
কর্পোরেট সংবাদ : তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোতে ইন্ডিপেন্ডেন্ট ডিরেক্টর নিয়োগের ক্ষেত্রে নির্ধারিত যোগ্যতাসম্পন্ন ‘ইন্ডিপেন্ডেন্ট ডিরেক্টরস প্যানেল’ প্রতিষ্ঠানিক সুশাসন প্রতিষ্ঠায় ভূমিকা রাখবে বলে মনে করেন কি?
মুজাফফর আহমেদ : এটা একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। কারণ পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর মধ্যে অধিকাংশই এসেছে বেসরকারি সেক্টর থেকে। আগে কোনো প্রকার শিক্ষাগত যোগ্যতা না দেখেই নিজেদের আত্মিয়-স্বজনদের ইন্ডিপেন্ডেন্ট ডিরেক্টর হিসেবে কোম্পানিতে নিয়োগ দেয়া হতো। পরে বিএসইসি ইন্ডিপেন্ডেন্ট ডিরেক্টর নিয়োগের ক্ষেত্রে শিক্ষাগত যোগ্যতার বিষয়ে আরো গুরুত্ব দিয়ে কঠোরতা আরোপ করেছে। এটা একটি উন্নতি, তবে তা যথেষ্ট নয়। কারণ যতদিন কোম্পানির ডিরেক্টররাই ইন্ডিপেন্ডেন্ট ডিরেক্টরস নিয়োগ দেবে, ততদিন স্বজনপ্রিতি হবার সম্ভাবনা থেকেই যাবে। তাই আমি মনে করি, এখানে একটি ইনসিস্টটিউট অব ইন্ডিপেন্ডেন্ট ডিরেক্টরস থাকা উচিত। এ প্রতিষ্ঠানে কেবল সেই সকল ইন্ডিপেন্ডেন্ট ডিরেক্টরসদের সদস্যপদ দেবে, যারা বিএসইসি অথবা ব্যাংকিং নির্দেশনা বা শর্ত যথাযথভাবে পরিপালন করবে। ওই ইনস্টিটিউটটি সংশ্লিষ্ট সেক্টরের জন্য ইন্ডিপেন্ডেন্ট ডিরেক্টরসদের কার্যক্রম অরো উন্নত করবে, যাতে তিনি স্বতন্ত্রভাবে কাজ করতে পারেন। বর্তমানে ইন্ডিপেন্ডেন্ট ডিরেক্টরসদের জন্য কোনো প্রোটেক্সন বা সুরক্ষা নেই। ইন্ডিপেন্ডেন্ট ডিরেক্টরসরা সঠিকভাবে কাজ করছে কি-না তা দেখভালের জন্য যদি কোনো ইনস্টিটিউট থাকতো তাহলে প্রাতিষ্ঠানিক সুশাসন আরো গতিশীল হতো। যেহেতু আমাদের এখানে এ ধরনের কোনো ইনস্টিটিউট নেই, সেহেতু বিএসইসি চাইলেই পৃথক পৃথক কোম্পানির জন্য সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রে অভিজ্ঞতা সম্পন্ন ইন্ডিপেন্ডেন্ট ডিরেক্টরস নির্ধারণ করে দিতে পারে। এতে ইন্ডিপেন্ডেন্ট ডিরেক্টরস নিয়োগের ক্ষেত্রে যে স্বজনপ্রিতির অভিযোগ উঠে, তা আর থাকবে না।
কর্পোরেট সংবাদ : ফাইন্যান্সিয়াল অডিটের রেগুলেটর আইসিএবি, কমপ্লায়েন্স অডিটের রেগুলেটর আইসিএসবি না অন্য কোনো সংস্থা?
মুজাফফর আহমেদ : কমপ্লায়েন্স অডিট করা হচ্ছে বিএসইসি’র রুলস্ অনুযায়ী। যেহেতু এখানে তিনটি ইনস্টিটিউটকে আলাদা করা হয়েছে, সেহেতু প্রত্যেকটি মেম্বারের রেগুলেটর হলো তার রেগুলেটরি বডি। অর্থাৎ চার্টার্ড অ্যাকাউন্টেন্টের পক্ষ থেকে যিনি কমপ্লায়েন্স অডিট করছেন তার রেগুলেটর ইনিস্টিটিউট অফ চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টস অব বাংলাদেশ (আইসিএবি)। একইভাবে কস্ট অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট অ্যাকাউন্টেন্টের পক্ষ থেকে যিনি কমপ্লায়েন্স অডিট করছেন তার রেগুলেটর ইনস্টিটিউট অব কস্ট অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট অ্যাকাউন্টেন্টস অব বাংলাদেশ (আইসিএমএবি)। আর চার্টার্ড সেক্রেটারির পক্ষ থেকে যিনি কমপ্লায়েন্স অডিট করছেন তার রেগুলেটর ইন্সটিটিউট অব চার্টার্ড সেক্রেটারিজ অব বাংলাদেশ (আইসিএসবি)। আর এ তিনটি রেগুলেটরের কালেক্টিভ অ্যাফোর্ড (সার্বিক কার্যক্রম) পর্যবেক্ষণ করছে বিএসইসি।
কর্পোরেট সংবাদ : কর্পোরেট গভর্নেন্স পরিপালনের বিষয়টি আরো গুরুত্ব দেয়ার প্রয়োজন রয়েছে কি?
মুজাফফর আহমেদ : এখন গ্লোবালি কর্পোরেট গভর্নেন্স গুঞ্জনধ্বণিতে (কেমস এ বাজওয়ার্ড) পরিণত হয়েছে। বিশেষ করে ফাইন্যান্সিয়াল রিপোর্টিং অ্যাক্ট হওয়ার ফলে প্রাথমিক গণপ্রস্তাবে (আইপিও) ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রাইমারি রিকোমেন্ডেশনের কারণেই কর্পোরেট গভর্নেন্সের উপর আরো বেশি গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে। বর্তমানে ডিএসই কোম্পানিগুলোর কর্পোরেট গভর্নেন্স খুবই গুরুত্ব দিয়ে দেখছে। বিশেষ করে কোম্পানিগুলো পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্তির আগেই কর্পোরেট গভর্নেন্স কোডের (সিজিসি) শর্তানুযায়ী রেমুনারেশন কমিটি গঠনের বিষয়ে গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। সে কারণে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্তির আগেই কোম্পানিগুলো যাতে সিজিসি’র শর্তগুলো পরিপালনে অভ্যস্ত থাকে সে বিষয়টি নিশ্চিত করা হচ্ছে। আমি মনে করি এটা একটা ভালো উদ্যোগ। এতে কোম্পানিগুলোতে শুরু থেকেই প্রাতিষ্ঠানিক সুশাসন নিশ্চিত হবে।
কর্পোরেট সংবাদ : কর্পোরেট সংবাদকে মূল্যবান সময় দেবার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।
মুজাফফর আহমেদ : কর্পোরেট সংবাদকেও অনেক ধন্যবাদ এবং শুভকামনা।
কর্পোরেট সংবাদ/এনটি/
© ২০২৩ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত | কর্পোরেট সংবাদ সম্পাদক - মোঃ মিজানুর রহমান । উপদেষ্টা সম্পাদক- জেসমিন আক্তার, এফসিএস ই-মেইলঃ corporatesangbad@gmail.com । ফোনঃ ০২২২-৩৩৫৪১২৫ । মোবাইলঃ ০১৭১১০৭৬৮১৫ অফিসঃ ৫৫/বি, নোয়াখালী টাওয়ার, ১১ তলা, সুইট ১১-এফ, পুরানা পল্টন, ঢাকা ১০০০ |
পুঁজিবাজারে কোম্পানিগুলোর প্রাতিষ্ঠানিক সুশাসন নিশ্চিতে প্রয়োজন ‘ইনস্টিটিউট অব ইন্ডিপেন্ডেন্ট ডিরেক্টরস’ https://corporatesangbad.com/273526/ |